অনেকেই শখ করে পারম্পরিক কিংবা হাল ফ্যাশনের আসবাবে ঘর সাজান। কিন্তু শুধু আসবাব দিয়ে ঘর ভরে ফেললেই সৌন্দর্য বাড়ে না। আসবাবেরও চাই নিয়মিত যত্ন ও রক্ষণাবেক্ষণ। দীর্ঘদিন সাফসুতরো না করার ফলে ফার্নিচারে ধুলো জমে, দাগ পড়ে, এমনকী এতে পোকামাকড়ও জন্মায়। তাই সময় থাকতে সজাগ হোন। আসবাব ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আগেই মেনে চলুন কয়েকটি সাধারণ রক্ষণাবেক্ষণের নিয়ম।

১)          আসবাব খুব রোদের মধ্যে রাখবেন না। এর ফলে আসবাবের রং নষ্ট হতে পারে, কাঠের চলটা উঠতে পারে। তাই আগুনের তাত ও রোদের ঝাঁঝ, দুইয়ের প্রকোপ থেকেই আসবাবগুলি বাঁচান।

২)          পরিষ্কার করার জন্য সপ্তাহে একদিন ভ্যাকুম ক্লিনার ব্যবহার করুন, বাকি দিনগুলিতে কাপড়ের সাহায্যে ডাস্টিং করুন।

৩)         সোফায় বা অন্য কোনও ফার্নিচারে দাগ-ছোপ লাগলে, তা পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুছে দিন।

৪)          চামড়ার ফার্নিচার পরিষ্কার করার জন্য নির্দিষ্ট লেদার ফার্নিচার কেয়ার লিকুইডই ব্যবহার করুন।

৫)          কাঠের আসবাবের বেশি যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। সব ঋতুতেই কাঠের ফার্নিচারের বিশেষ কেয়ার নেবেন। কাঠের ফার্নিচারে ওয়াটার রেজিস্ট্যান্ট মেলামাইন পালিশ করানো ভালো। এর ফলে বর্ষাকালের স্যাঁতসেতে আবহাওয়াতেও আসবাবগুলি ভালো থাকবে।

৬)         কাঠ ও চামড়ার তৈরি আসবাবের উপরেই পোকামাকড়ের উপদ্রব সবচেয়ে বেশি দেখা দেয়। তাই এই ধরনের আসবাবের বিশেষ রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন।

৭)          স্টেনলেস স্টিলের দেখভালের জন্য চিন্তা না করলেও চলবে, কারণ এই ধরনের আসবাবে তেমন মেন্টেনেন্সের প্রয়োজন হয় না। শুধু কেনার সময় খেয়াল রাখবেন, স্টিলের গুণগত মান যেন ভালো হয়।

৮)         ফার্নিচারগুলিকে সবসময় শুকনো কাপড়ের সাহায্যেই পরিষ্কার করুন। ভেজা কাপড় একেবারেই ব্যবহার করবেন না। এর ফলে ফার্নিচারের পালিশ নষ্ট হয়ে যায়। সেইসঙ্গে কাঠও কমজোরি হয়ে যায়।

৯)         আসবাবের খুব খারাপ অবস্থা হয়ে গিয়ে থাকলে, জোড়াতালি দিয়ে সারানোর চেষ্টা না করে, বদলে ফেলাই ভালো।

১০)     যদি আসবাবের উপর মোমের দাগ পড়ে যায়, গরম ছুরি দিয়ে বা স্পিরিট দিয়ে তা সরিয়ে ফেলুন।

১১)       ফার্নিচার অনেকদিনের পুরোনো হয়ে গিয়ে থাকলে, একবার পালিশ করিয়ে নিন।

১২)       যদি কাঠের আসবাবই আপনার বেশি পছন্দের হয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই ভালো কাঠের, সলিড উড-ফার্নিচারই ব্যবহার করুন।

১৩)      বোর্ড বা প্লাইয়ের ল্যামিনেশন করা ফার্নিচারে বেশি গরম কোনও জিনিস না রাখাই ভালো। শুকনো তুলো দিয়ে এই ধরনের আসবাব মুছে রাখুন।

১৪)       সেগুন কাঠের আসবাবে ঘুণ ধরে না, তাই দীর্ঘদিন ধরে ফার্নিচার না বদলানোর কথা ভাবলে, সেগুন কাঠের ফার্নিচারই আদর্শ।

১৫)       রট আয়রনের তৈরি ফার্নিচার বা পিতলের ফার্নিচার, সরংক্ষণ করতে রেড অক্সাইড ব্যবহার করুন।

১৬)      আসবাবের জয়েন্টের জায়গাগুলি যাতে জং পড়ে নষ্ট না হয়ে যায়, তাই এর উপর রেড অক্সাইড লেপে দিন।

১৭)       বর্ষার মরশুম শুরু হওয়ার আগেই আসবাবে পেইন্ট বা ভার্নিশ ব্যবহার করুন। এরফলে আসবাবে ঘুণ ধরবে না।

১৮)      লিভিং-রুম বা বাগানে ব্যবহূত বেতের আসবাবগুলি যাতে বৃষ্টির জলে না ভেজে, সেদিকে নজর দিন। কারণ এই ধরনের আসবাব ভিজে গেলেই এতে কালচে ছোপ ধরে ও ফাংগাস পড়ে যায়।

১৯)       দীর্ঘদিন যদি ঘর বন্ধ করে কোথাও যাওয়ার পরিকল্পনা থাকে, অতি অবশ্যই আসবাবগুলি কাপড় দিয়ে ঢেকে রেখে যাবেন। এর ফলে আসবাব ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।

২০)       যদি আসবাবে ফ্রেঞ্চ পালিশ থাকে, তাহলে এই ফার্নিচারের এক্সট্রা কেয়ার প্রয়োজন। খেয়াল রাখবেন এগুলি যেন কোনওভাবেই জলের সংস্পর্শে  না আসে।

 

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...