অফিসে যাওয়ার সময় যে-জিনিসটি নিতে ভোলেন না কোনও মহিলা, তা হল Sunglass। গ্রীষ্ম-রোদের সঙ্গে লড়াই করার সবচেয়ে জরুরি অ্যাক্সেসরি। বর্তমানে ফ্যাশন আর সুরক্ষা, দুটোর কারণেই ক্রমশ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে সানগ্লাস। কলেজ গোয়ার থেকে কর্পোরেট অফিসের কর্মী, যে-কোনও টিনএজার বা মধ্যবয়সিনীর কাছে তাই সানগ্লাস এখন অত্যন্ত অপরিহার্য একটি সামগ্রী।

Sunglass পরলেই শুধু চলবে না, এর গুণগত মানের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। কেনার আগে সানগ্লাস সম্বন্ধিত তথ্য সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হওয়া দরকার। অন্যথায় ফল উলটো হতে পারে। লোকাল মেক, ফুটপাথের দোকানের সানগ্লাসের গুণগতমান খুবই খারাপ। রোদ থেকে সাময়িক স্বস্তি মিললেও তা চোখের উপর ভীষণ খারাপ প্রভাব ফেলে। সুতরাং রোদচশমা কেনার আগে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।

চোখের উপর প্রভাব

সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি সরাসরি চোখের রেটিনার উপর প্রভাব ফেলে। শুধু এই রশ্মি-ই কেন, ধুলোবালি এবং বাতাসে মিশ্রিত ব্যাকটিরিয়াও ক্ষতি করে চোখের। আর তাই আপনার অমূল্য চোখের জন্য সানগ্লাস খুবই জরুরি। চোখের সুরক্ষার পাশাপাশি আপনার স্টাইল স্টেটমেন্ট তৈরি করতেও জুড়ি নেই সানগ্লাসের। তবে কেনার আগে মাথায় রাখবেন কম দামি লেন্স চোখের ক্ষতি করে।

সঠিক লেন্স নির্ধারণ

চশমার সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হল লেন্স। সঠিক চশমা বেছে নিতে হলে প্রথমেই লেন্স পরখ করে নিতে হবে। চশমাটিকে চোখের ঠিক আধফুট দূরে ধরে কোনও একটি বস্তুকে দেখুন। চশমাটা সামান্য এদিক-ওদিক হেলিয়ে লক্ষ্য বস্তুকে আবার দেখুন। যদি বস্তুটির আকার স্পষ্টভাবে দেখতে পান, তাহলে বুঝবেন চশমাটির লেন্স পারফেক্ট। আর যদি অস্পষ্ট দেখেন বা ডিস্টরটেড দেখেন তাহলে বুঝবেন লেন্সটি সঠিক নয়। কখনওই কম দামি চশমার দিকে ঝুঁকবেন না বরং একটু দাম দিয়ে ব্র্যান্ডেড চশমাই কিনুন, যা চোখের ক্ষতিসাধন করবে না।

বাজারে বিভিন্ন ধরনের ব্র্যান্ডেড সানগ্লাস পাওয়া যাচ্ছে। সানগ্লাস কোম্পানিগুলি মূলত তিন ধরনের ভ্যারিয়েশন মাথায় রেখেই সানগ্লাস বানিয়ে থাকেন। সেগুলি হল অ্যাভিয়েটর, ওয়েফেরর এবং স্পোর্টস। যদিও বেসিক্যালি মানুষ অ্যাভিয়েটর ও ওয়েফেরর-এর দিকেই বেশি ঝোঁকে। রে-ব্যান-এর অ্যাভিয়েটর মডেলগুলির দাম শুরু হয় ৩৭৯০-৮৩৯০ টাকা পর্যন্ত এবং ওয়েফেরর এর দাম ৮২৫০  টাকা থেকে ১১,৮২৫ টাকা পর্যন্ত। সেইরকমই আর একটি ব্র্যান্ডেড কোম্পানি ফাস্টট্র্যাক-এর দাম ৬৫০ টাকা শুরু করে ৩,০০০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া সানগ্লাসের রাজ্যপাটে আইডি-ও যথেষ্ট পরিচিত একটি নাম, যার মডেলগুলির দাম ১৮৭০ টাকা থেকে ২৩৫০ টাকা পর্যন্ত। এবং ওয়েফেরর মডেলগুলির দাম ১৭৫০ টাকা থেকে ২৩৪০ টাকা পর্যন্ত। যদি মনে করেন অ্যাফোর্ড করতে পারবেন না, একটু কস্টলি হয়ে যাচ্ছে, সেক্ষেত্রে আপনি ৬৫০-৭০০ টাকা খরচ করলেই পেয়ে যাবেন আইডি বা ফাস্টট্র্যাক-এর ব্র্যান্ডেড রোদ চশমা। সহজেই হয়ে উঠতে পারবেন অন্যের কাছে আকর্ষণীয়।

ফ্রেমের দিকেও নজর দিন

লেন্স-এর মতো ফ্রেমও কিনতে হবে বুঝেসুঝে। বাজারে সস্তা এবং দামি দুই ধরনেরই ফ্রেম পাওয়া যায়। এগুলোর রং আর ডিজাইন এতই সুন্দর হয় যে, চোখ ধাঁধিয়ে যায়। সঠিক আর ভুলের মাপকাঠি তাই হারিয়ে ফেলে মানুষ। সঠিক ফ্রেম বাছতে গেলে আপনাকে হাতে নিয়ে ভালো করে দেখে নিতে হবে। যে-চশমার ফ্রেম সমান না হয়ে উঁচু-নীচু হয়, সেটা চোখের জন্য একেবারেই আদর্শ নয়। ভালো ব্র্যান্ডের চোখ ঢাকা চশমা চোখের পক্ষে সঠিক। এই ধরনের চশমা রোদ এবং ধুলোবালির থেকে চোখকে বাঁচায়। খুব ছোটো আর খুব বড়ো চশমা ব্যবহার করা উচিত নয়।

যদি ফ্যাশন-এর জন্য চশমা ব্যবহার করেন তাহলে সেটাও মুখ অনুযায়ী মানানসই এবং যথাযথ

হওয়া উচিত।

Sunglass সংক্রান্ত কিছু Tips

১)   চশমা অ্যান্টিগ্লেয়ার অর্থাৎ ইউভি প্রোটেকশন যুক্ত হওয়া আবশ্যক, কারণ সূর্যের রশ্মি চোখের রেটিনার ক্ষতি করে।

২)   চশমার লেন্স এমন হওয়া উচিত, যাতে সহজে দাগ না আসে। লেন্স-এ স্ক্র্যাচ পড়লে তা চোখের পক্ষে ক্ষতিকারক।

৩)   চশমার ফ্রেম ননঅ্যালার্জিক হওয়া আবশ্যক।

৪)   যদি আপনি চোখে কম দেখেন, তাহলে ফোটোক্রোমেটিক লেন্স ব্যবহার করুন।

৫)   কাচের লেন্স-এর জায়গায় এখন প্লাস্টিক লেন্স ব্যবহার করা হচ্ছে। খুব সাবধানে এটা ব্যবহার করুন। যেন স্ক্র্যাচ না হয়।

৬)   দৃষ্টিশক্তি দুর্বল হলে কন্ট্যাক্ট লেন্স লাগাতে পারেন। কন্ট্যাক্ট লেন্স লাগিয়ে রোদ্দুরে বেরোতে হলেও কিন্তু সানগ্লাস পরতে ভুলবেন না।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...