প্রেগন্যান্সির সময়কালে মেয়েদের শরীরে নানা হরমোনের পরিবর্তন ঘটে। প্রতিটি হরমোনের আলাদা আলাদা প্রভাব রয়েছে। এই হরমোনাল চেঞ্জেস-এর প্রভাব ত্বকের উপরেও পড়ে। যার ফলে ডার্ক স্পটস, স্ট্রেচমার্কস এবং ব্রণর সমস্যাও অন্যতম।

কিন্তু এসব নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা করার প্রয়োজন নেই। মাতৃত্ব লাভের আনন্দের পাশাপাশি নিজের যত্ন নেওয়াও জরুরি। এই ধরনের ত্বকের সমস্যা সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর আস্তে আস্তে কমে যাবে। কিন্তু Pregnancy period -এ  আপনি নিজেকে মেনটেইন করতে ভুলবেন না।

এই বিষয়ে স্কিন স্পেশালিস্টদের মত হল, প্রেগন্যান্সি জীবনের আনন্দদায়ক উপলব্ধিগুলির একটা। এই সময়ে ত্বকের উপর হরমোনের প্রভাব পড়লেও, এটা নিয়ে টেনশন করার প্রয়োজন নেই। চিকিৎসকের পরামর্শ মতো কেয়ার নিলে, Skin problems থেকে মুক্তি পাওয়া অসম্ভব নয়।

ব্রণর সমস্যা সামলাতে

প্রেগন্যান্সির সময় হরমোনের কিছু ভালো প্রভাব ও ত্বকের স্বাভাবিক তেলাভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় এই সময় ত্বকের একটা ন্যাচারাল গ্লো আসে। কিন্তু সমস্যা হল ব্রণও এই সময় বাড়ে। খোঁটাখুঁটি করলে, Pimples-এর দাগ ত্বকে থেকে যাওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়।

প্রেগন্যান্সির শুরুর দিকের মাসগুলোয় হরমোনের ক্ষরণে তারতম্য হওয়ার ফলে, কিশোরীবেলার মতো ব্রণর প্রকোপ বাড়ে। অনেকের পিরিয়ডের সময় ব্রণ হয়। তাদের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, প্রেগন্যান্সির সময়ও এই সমস্যা বৃদ্ধি পায়। ব্রণর সমস্যার সমাধান করতে ল্যাকটিক অ্যাসিড আর টি ট্রি অয়েল ব্যবহার করুন।

ত্বকের দাগছোপ

ত্বকে ডার্কস্পট এই সময় পড়া অস্বাভাবিক নয়। এই সময় অনেকের শরীরে তিল বাড়তে থাকে। রোদে বেরোলে ত্বকের দাগছোপ বেড়ে যায়। তাই বাইরে বেরোনোর আগে অন্তত ৩০ এসপিএফ-যুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।

ত্বক নরম আর জেল্লাদার রাখতে নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। কোনও প্রসাধনী ব্যবহার করলে অবশ্যই একবার স্কিন স্পেশালিস্ট-এর সঙ্গে পরামর্শ করে নিন। কারণ সাধারণ সময়ে

যে-প্রসাধনী আপনার ত্বকের উপকারে লাগে, এই বিশেষ সময়ে হয়তো একই প্রসাধনী নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে ত্বকে।

প্রেগন্যান্সির মাসগুলোতে, খুব দ্রুত নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। গোটা সময়কালটা জুড়ে আপনার ত্বকেও একইরকম লাবণ্য থাকবে না। প্রয়োজন অনুসারে তাই ক্রিম বা কসমেটিক্স-এ প্ররিবর্তন আনুন।

Stretch Marks  যখন সমস্যা

পেট ও স্তনের চারপাশে স্ট্রেচ মার্কস হওয়াটা, এই সময়ে একটা কমন সমস্যা। কারও কারও থাই, হাতের উপরের অংশেও স্ট্রেচ মার্ক তৈরি হয়। এটা দেখতে খুব বিসদৃশ লাগে। এই সমস্যা এড়াতে, প্রেগন্যান্সির চতুর্থ মাস থেকেই শরীরের এইসব অংশে ভিটামিন-ই অয়েল মাসাজ করা উচিত।

শিরা ওঠার সমস্যা

কিছু কিছু মহিলার, গর্ভকালীন সময়ে শিরা ওঠার সমস্যা দেখা দেয় হাত, পা, গলা প্রভৃতি অংশে। যাদের ত্বক খুব স্পর্শকাতর, প্রেগন্যান্সির ফলে চামড়ায় টান পড়ে, শরীরে ফোলাভাব আসে তখন শিরা আরও প্রকট হয়ে ওঠে। এর জন্যও নিয়মিত মালিশ, আর ত্বক নরম রাখার জন্য ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম ব্যবহার করুন।

কারও কারও পায়ে ফোসকা ধরনের সমস্যা হয়। ছাল ওঠে। ত্বক শুষ্ক হয়ে পরত উঠতে থাকে। তারা অবশ্যই ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। তবে সাধারণত এইসব সমস্যা সন্তান জন্মাবার পর ঠিক হয়ে যায়।

মেকআপ পরিমিতি

সন্তানসম্ভবা মহিলারা কোনও অনুষ্ঠানে গেলে, দাগছোপ ঢাকার জন্য কনসিলার ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু মেক-আপ আর্টিস্টদের মতে, এই সময় মেক-আপ প্রোডাক্টস ব্যবহার করার সময়ও সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। তাই দাগছোপ ঢাকার চেষ্টা না করে, বাড়িতে প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বকের যত্ন নেওয়া বেশি জরুরি। নিয়মিত নারকেল তেল মালিশ করুন ত্বকে। ঘুমোনোর আগে মুখ ভালো ভাবে পরিষ্কার করুন, যাতে কোনও প্রসাধনীর লেশমাত্র না থাকে।

মনে রাখবেন ত্বকের ছিদ্রগুলি বন্ধ হয়ে গেলে ত্বকের দাগছোপ বেশি প্রকট হয়ে ওঠে। তাই সপ্তাহে একবার স্টিম নিন যাতে রোমকূপ খুলে যায়। ময়লা বেরিয়ে আসে। তারপর নারকেল তেল মাসাজ করুন।

সকালে ক্লিনজিং মিল্ক-এর পরিবর্তে কাঁচা দুধে তুলো ভিজিয়ে মুখ পরিষ্কার করুন। এতে স্কিন অনেক হেলদি দেখাবে। ক্লিন করার পর গোলাপজলের টোনার ব্যবহার করুন। এর ফলে রোমছিদ্র আবার তার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যাবে। পিগমেনটেশন রোধ করার এটাই সবচেয়ে কার্যকরী উপায়।মা হওয়ার পর স্কিন-এ লেজার থেরাপি করাতে পারেন দাগমুক্ত ত্বক ফিরে পাওয়ার জন্য।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...