শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়-এর গল্প কিংবা উপন্যাস অবলম্বনে অনেক সিনেমা তৈরি হয়েছে এর আগে। সেই তালিকায় যুক্ত হল আরও একটি নাম। এবার ‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পটি অবলম্বনে তৈরি হচ্ছে ‘ও অভাগী’ শীর্ষক একটি ছবি।
এই ‘ও অভাগী’ ছবিটির পরিচালক অনির্বাণ চক্রবর্তী। এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি জানিয়েছেন, ছোটোবেলা থেকেই শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের যে-কোনও লেখা পড়েই তাঁর মনে হতো যেন সিনেমা দেখছেন। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়-এর গল্প-উপন্যাসের মাত্র একটা লাইনেই অনেকগুলো সিনের কন্টেন্ট পাওয়া যায় বলেও পরিচালক অনির্বাণ চক্রবর্তী-র ধারণা। একসময় তাই তাঁর মনে হল, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়-এর গল্প নিয়ে সিনেমা বানানো উচিৎ। এই ‘ও অভাগী’ ছবিটিতে ষাট-সত্তর দশকের গ্রাম্য সমাজের কুৎসিত দিকগুলোর আসল রূপ তুলে ধরা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিচালক। এই ছবিতে যদিও মূল গল্পের প্রেক্ষাপট ছিল আরও প্রাচীন। কেন্দ্রীয় চরিত্র হিসাবে বেশ কিছু নতুন চরিত্র যোগ হয়েছে চিত্রনাট্যে। মূল গল্পকে বিকৃত না করে নতুন এবং ইউনিক কিছু তৈরি করাই আসল চ্যালেঞ্জ ছিল বলেও জানিয়েছেন পরিচালক অনির্বাণ।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়-এর মূল গল্প ‘অভাগীর স্বর্গ’-এ, অভাগীর চরিত্রটি এভাবে বর্ণনা করা হয়েছে— ‘জন্মের পর থেকে মাতৃহারা সে। পেশায় জেলে বাবার কাজই হল নদীতে মাছ ধরে বেড়ানো। না আছে দিনের ঠিকানা, না রাতের। তাই বাবা থেকেও একরকম নেই বললেই চলে। এইরকম ভাগ্য নিয়ে যে এই পৃথিবীতে আসে, তার নাম অভাগী হবে সেটাই স্বাভাবিক। কালের নিয়মে হতভাগী অভাগীরও বিয়ে হয়ে যায় পাশের গ্রামের রসিক বাঘের সঙ্গে। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই তার কোল আলো করে আসে কাঙালি। আর অভাগীকে ছেড়ে চলে যায় তার স্বামী। অভাগীর থেকে নাকি তার মন উঠে গেছে। রসিক তার নতুন রসিকা পেয়ে গেছে। ছোট্ট কুঁড়ে ঘরটায় পড়ে থাকে অভাগী, দুধের শিশু কাঙালি আর তাদের দুর্ভাগ্য।’ এরপর অভাগী-র জীবনে কী ঘটবে, তাই নিয়েই ‘ও অভাগী’ ছবির কাহিনি এগোবে পরিণতির দিকে।
যাইহোক, অনির্বাণ চক্রবর্তী এই আগে ‘নন্টে-ফন্টে’ শীর্ষক একটি ছবি তৈরি করেছেন। অতএব, ‘ও অভাগী’ তাঁর পরিচালনায় দ্বিতীয় ছবি। আর এই ছবিতে অভাগী-র চরিত্রে দেখা বাংলাদেশের অভিনেত্রী মিথিলা-কে। মিথিলা এখন দুই বাংলায় কাজ করছেন। সাহিত্যধর্মী ছবিতে অভিনয় করতে তাঁর ভীষণ ভালো লাগে বলেও জানিয়েছেন মিথিলা। আর মিথিলা ছাড়াও এই ছবির অন্যান্য চরিত্রে দেখা যাবে আরজে সায়ন(সায়ন ঘোষ), সুব্রত দত্ত, দেবযানি চট্টোপাধ্যায়, আরজে জিনিয়া, কৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌরভ হালদার এবং ঈশান মজুমদার-কে।
ছবিটির চিত্রনাট্য লিখেছেন পরিচালক অনির্বাণ স্বয়ং। চিত্রগ্রহণের দায়িত্বে আছেন মলয় মণ্ডল। সম্পাদনায় সুজয় দত্ত রায়। সংগীত পরিচালক মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়। গান গেয়েছেন রূপংকর বাগচি, লগ্নজিতা চক্রবর্তী, অনিমেষ রায় (বাংলাদেশ), চন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অনির্বাণ রায় আকাশ।
ছবিটির নিবেদক ‘স্বভূমী এন্টারটেইনমেন্ট’। প্রযোজক ডা. প্রবীর ভৌমিক। ছবিটির সাফল্যের ব্যাপারে পরিচালক এবং অভিনেতা-অভিনেত্রী সকলেই আশাবাদী বলে জানিয়েছেন প্রসঙ্গত।