বছরের বেশিরভাগ সময় তেল-মশলাযুক্ত খাবার কম খেয়ে অনেকে শরীর ফিট রাখার চেষ্টা করেন কিন্তু উৎসবের সময় অথবা অনুষ্ঠান বাড়িতে নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে গেলে অনিয়ম এবং স্পাইসি খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে পারেন না। ফলে শুরু হয় হজমের গোলমাল। মহিলাদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা আবার কিছুটা আলাদা মাত্রা নেয়। তাই, এ ক্ষেত্রে কী কী সমস্যা হতে পারে এবং সমস্যা কাটিয়ে কীভাবে ফিট থাকবেন, সেই বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন গ্যাস্ট্রো ইন্টেস্টিনাল ল্যাপারোস্কোপিক সার্জন ডা. সঞ্জয় মণ্ডল।
কী কী কারণে সমস্যায় ভোগার সম্ভাবনা প্রবল রয়েছ
১)আপনার যদি সুপ্ত গলব্লাডার স্টোন থাকে, তাহলে ঝাল, ফ্যাটযুক্ত খাবার কিন্তু পেটে অসহ্য ব্যথা চাগিয়ে তুলতে পারে। শুধু তাই নয়, এক্ষেত্রে অ্যালকোহল পান করলে তা পরবর্তীকালে জীবন সংশয়ী প্যানক্রিয়াটাইটিস-এর চেহারা নিতে পারে
২)স্ট্রিট ফুডের প্রতি আসক্ত হয়ে অস্বাস্থ্যকর খাবার খেলে টাইফয়েড বা ভাইরাল হেপাটাইটিসের শিকার হতে পারেন
৩)অপরিমিত মাংস আপনার ডায়েট চার্টে থাকলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায়ে ভোগার প্রবল সম্ভবনা রয়েছে
৪)সাধারণ অভ্যাসের বাইরে গিয়ে অতিরিক্ত পরিমাণে মশলাদার রাস্তার খাবার (Street food) খেলে ব্লটিং, বমি, পেট খারাপ, পেট ব্যাথা, জ্বালার অনুভূতি ইত্যাদি সমস্যা দ্যাখা দিতে পারে
মহিলাদের সমস্যা
পুরুষ ও মহিলা উভয়েরই গ্যাসট্রোইনটেস্টিনাল ট্র্যাকের গঠনগত পার্থক্য খুব একটা না থাকলেও, মহিলাদের শারীরিক গঠন আলাদা। তাই, হজমের কোনও কোনও সমস্যার ক্ষেত্রে উপসর্গগুলোও আলাদা। বেশিরভাগ মহিলার স্বাদকোরক খুবই সংবেদনশীল। পুরুষদের তুলনায় মিষ্টি ও তেতো খাবারের স্বাদ তাদের জিভে একটু বেশিই ঠেকে। অল্প পরিমাণে খাবার খেলেও খাবারের স্বাদ তারা স্পষ্ট বুঝতে পারেন। মহিলাদের ইসোফেগাসের উপরিভাগে থাকা ভাল্ভ, পুরুষদের তুলনায় বেশি হাইপারসেনসিটিভ। ফলে গলায় কোনও কিছু দলা পাকিয়ে থাকলে তার অনুভূতি এদের বেশি হয়। আবার মহিলাদের পাকস্থলী আর ইসোফেগাসের মধ্যবর্তী ভাল্ভ বেশি দৃঢ় ও শক্তিশালী। তাই, পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের বুকজ্বালা বা রিফ্লাক্স সিম্পটম কমই হয়। কিন্তু মহিলাদের ভাল্ভ বেশি সংবেদনশীল বলে বুকজ্বালা হলে বেশি টের পান তাঁরা। তবে অ্যাসিড রিফ্লাক্স-এর জন্য ইসোফেগাসের সেভাবে কোনও ক্ষতি হয় না। অতিরিক্ত তেল-মশলাযুক্ত খাবার, কফির প্রতি আসক্তি, একসঙ্গে বেশি খেয়ে ফেলা, মিষ্টি-চকোলেট জাতীয় খাবার বেশি খাওয়া, ওবিসিটি, খেয়েই ঘুমিয়ে পড়া ইত্যাদির ফলে বুকজ্বালা হতে পারে। এরজন্য প্রথমেই জীবনযাপনে বদল আনতে বলা হয়। কাজ না হলে ওষুধ দেওয়া হয়। দুটোর কোনওটাতেই কাজ না হলে রোগীকে এন্ডোস্কোপি করতে বলা হতে পারে।