বেশিরভাগ মহিলাই স্বীকার করেন যে, বাড়ি থেকে বেরোবার আগে আয়নার সামনে বেশ কিছুটা সময় ব্যয় করতে হয় তাদের। আয়নার সামনে বসে রূপচর্চার জন্য বেশ কিছু দামি প্রসাধনী ব্যবহার করেই তারা সৌন্দর্য বাড়াবার চেষ্টা করেন।

মেক-আপ করতে ভালোবাসেন না এরকম মহিলা খুবই কম পাওয়া যায়। তারা তাদের সৗন্দর্য বাড়াবার জন্য একটা বড়ো পরিমাণ অর্থও খরচ করতে কার্পণ্য করেন না।

শুধুমাত্র মেক-আপ যথেষ্ট নয়

 অনেক সময়ই মনে প্রশ্ন জাগে, এই নানা ধরনের  মেক-আপ প্রোডাক্টস-এর উপর নির্ভরতা আসলে অর্থ এবং সময়ের অপচয় নয় তো? সত্যিই কি এইসব মেক-আপ প্রোডাক্টস লুক-কে আশ্চর্যজনক ভাবে পরিবর্তন করে কারও সৗন্দর্য এবং আকর্ষণ বাড়াতে সক্ষম?

এই নিয়ে বহু রিসার্চ করা হয়েছে এবং প্রমাণিত তথ্যটি হল – মহিলাদের সৗন্দর্য বাড়াবার ক্ষেত্রে মেক-আপের অবদান খুবই কম। বস্তুত নারীর ন্যাচারাল লুক-ই তার সৌন্দর্যের আকর্ষণ বাড়াতে অথবা কমাতে বিশেষ ভূমিকা নিয়ে থাকে। কাউকে দেখতে খারাপ হলে শত মেক-আপেও তিনি কখনও সুন্দর হয়ে উঠতে পারবেন না অথচ সুন্দরী মহিলা মেক-আপ না করেও সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেন।

আমেরিকার নর্থ ওয়েলস-এর একটি ইউনিভার্সিটি-তে আন্ডার গ্রাজুয়েট মেয়েদের উপর একটা পরীক্ষা করা হয়েছিল। ১৮ থেকে ২১ বছরের ৪৪ জন মেয়েকে বাছা হয়েছিল। তাদের মেক-আপ শুদ্ধু এবং মেক-আপ ছাড়া ছবি তোলা হয়। এই ছবিগুলি, ৬২ জনের অন্য একটা দলে যেখানে ছেলে এবং মেয়ে দুই-ই ছিল, তাদের দেখানো হয়। তাদেরকে বলা হয় সৌন্দর্যের নিরিখে ছবিগুলিকে ১ থেকে ১০ পর্যন্ত সাজাবার জন্য। যুবকদের, যাদের ছবিগুলো দেখানো হয়, একটি মেয়ের একটি করেই ছবি তাদের দেখার জন্য দেওয়া হয়। কারও মেক-আপ শুদ্ধু ছবি তো কারও মেক-আপ ছাড়া। রেটিং-এর বিশ্লেষণ করে দেখা যায় মেক-আপ করা সৌন্দর্য-র রেটিং মাত্র ২ শতাংশ। অথচ মেয়েদের ন্যাচারাল ফিচার্স এবং পার্সোনালিটি, তাদের সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে ৬৯ শতাংশ পর্যন্ত সাহায্য করেছে।

আসল সৗন্দর্য

 আসলে অনেক কিছুর উপরেই সৌন্দর্য নির্ভর করে। হাই চিকবোন্স, বড়ো বড়ো চোখ, এক মাথা ঘন চুল এবং মোলায়েম দাগহীন ত্বক মেয়েদের, সকলের চোখে আকর্ষণীয় করে তোলে। মেক-আপ, ফিচার্স এবং ত্বকের রং ছাড়াও আরও অনেক কিছুই মেয়েদের সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে সাহায্য করে।

স্মাইলিং ফেস

 মেয়েদের সদা হাস্যময়ী চেহারা সহজেই অপরের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম। অনেকেই হাসিমুখের মেয়েদের অনেক বেশি সুন্দরী বলে মনে করেন। হাসিমুখ দেখতেই সকলে ভালোবাসে এবং এটা সত্যি যে, স্বাভাবিক ভাবে হাস্যময়ীদের চেহারায় একটা আলাদা গ্লো থাকে।

পারফেক্ট ফিগার

 যদি ফিগার ৩৬-২৪-৩৬ মাপ অনুযায়ী মেনটেন করা হয়, তাহলে রং শ্যামলাই হোক অথবা মেক-আপ নাই বা থাকুক, কিছুই আসবে যাবে না। স্বাভাবিক ভাবেই তার সৌন্দর্য আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। সেখানে মেদবহুল চেহারায় যতই মেক-আপ করা থাকুক না কেন, আকর্ষণীয় হয়ে ওঠা মুশকিল।

স্মার্ট বিহেভিয়ার

 কথাবার্তার স্টাইল, চলা-বসার ঢং, পোশাকের চয়ন, অপরের কথায় কীভাবে রিঅ্যাক্ট করছেন সবকিছুই সৌন্দর্য বাড়াবার ক্ষেত্রে একটা বড়ো ভূমিকা পালন করে।

ইনার বিউটি

 অন্যের প্রতি আপনার ব্যবহার কেমন, আপনার চিন্তাধারা কতটা পজিটিভ, অপরকে কতটা সাহায্য করেন, রাগ এবং অবসাদকে কতটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন ইত্যাদি ব্যাপারগুলোও ব্যক্তিবিশেষকে ভিতর থেকে সুন্দর করে তুলতে সাহায্য করে।

স্টাইলিশ ড্রেসেস

 যতই মেক-আপ করে বাইরে যান, আপনার পোশাক যদি আপনার ব্যক্তিত্ব এবং ফ্যাশনের অনুরূপ না হয়, তাহলে আপনাকে কখনওই সুন্দর লাগবে না দেখতে।

দাগহীন কোমল ত্বক

 সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে দাগহীন মসৃণ কোমল ত্বক হওয়া বাঞ্ছনীয়। উজ্জ্বল রং এবং স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ত্বক সহজেই অপরের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

ঘন কালো চুল

 মেয়েদের কালো চুলের বর্ণনা কবিদের কবিতায় প্রায়শই দেখতে পাওয়া যায়। মহিলাদের ঘন কালো চুল তাদের সৌন্দর্যেরই একটা অঙ্গ।

এগুলো ছাড়াও রয়েছে ভালো স্বাস্থ্য, প্রখর বুদ্ধি, লুকিয়ে থাকা গুণ এবং জীবনে তার সাফল্যও তাকে অপরের চোখে আকর্ষণীয় করে তোলে।

 

 

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...