অফিস থেকে বাড়ি ফিরে আসবার সঙ্গে সঙ্গে মা বলল, ‘শৌভিকের একটা চিঠি এসেছে, রেজিস্ট্রি পোস্টে। পিওনটা মহা পাজি, আমাকে কিছুতেই দিতে চাইছিল না। অনেক করে বলবার পর দিল।’ রেজিস্ট্রি পোস্টের ব্যাপারটা শুনেই আমার একটু খটকা লাগল। এই তো দিন সাতেক আগে ওর সাথে ফোনে কথা হল। শুধু বলল, ‘বাড়িতে একটা ছোটো অনুষ্ঠান হবে, ইনভাইট করব।’ কিন্তু সেদিনও তো চিঠির ব্যাপারে কিছু বলেনি।

শৌভিক আমার কলেজের বন্ধু। আমরা দুজন কলেজ থেকে ইউনিভার্সিটি পর্যন্ত একসঙ্গে থেকেছি, খেয়েছি, পড়েছি। আমাদের দুজনের বাড়িও কাছাকাছি ছিল। আমি থাকতাম তেঘড়িয়া, আর ওরা কেষ্টপুরে। এখন অবশ্য ওরা এক নম্বর গেটের কাছে নতুন বাড়ি কিনেছে, আর আমাকে আসতে হয়েছে বীরভূম জেলার এক গ্রামে। শৌভিক চাকরির চেষ্টা করেনি। ইউনিভার্সিটি থেকে বেরিয়ে পারিবারিক ব্যাবসার খুঁটি ধরে বেশ জাঁকিয়ে বসেছে। ওর দাদার আবার পারিবারিক ব্যাবসা ছাড়াও আরও কী সব ব্যাবসা রয়েছে। তাদের বউরাও পারিবারিক ব্যাবসাতে সাহায্য করে। ওর দাদার এক মেয়ে, পড়াশোনার সূত্রে বাইরে থাকে। শৌভিকের এখনও পর্যন্ত সন্তান হয়নি। বাড়িতে একা থাকে শৌভিকের মা। কাকু বছর তিন আগে মারা যান।

কলেজ বা ইউনির্ভাসিটিতে পড়বার সময় প্রায় দিনই সময়ে অসময়ে ওর বাড়ি চলে যেতাম, কতদিন ওদের বাড়িতে থেকেছি, খেয়েছি তার হিসেব নেই। এখন অবশ্য আর সেরকম ভাবে ওদের বাড়িতে থাকা হয় না, সেরকম ভাবে কেন বলব, একরকম হয়ই না। ইউনিভার্সিটির পাঠ শেষ হওয়ার পরের কয়েক বছর বেকারত্বের জ্বালা রগড়াতে রগড়াতে সরকারি চাকরি পেলাম। তবে খুব ভালো চাকরি নয়, পঞ্চায়েত অফিসের সহায়কের চাকরি। প্রথম সপ্তাহে বাড়ি থেকে যাতায়াত করলাম। কিন্তু সপ্তাহের শেষে মনে হল, এই তেঘড়িয়া থেকে বাসে বাদুড় ঝুলে হাওড়া স্টেশন, সেখান থেকে ট্রেনে বোলপুর স্টেশন, তারপর বাস থেকে নেমে সাইকেল, এত সবের পর অফিস করে বাড়ি ফিরতাম প্রায় জাম্বি হয়ে। কোনওদিন আটটা বাজত, কোনওদিন নটা। তারপর কারওর ভালো কথাও খারাপ লাগত।

আমার বাবার কোনও ব্যাবসা ছিল না। বাবাও আমার মতো সরকারি কর্মচারি ছিল, তবে কেন্দ্রীয়। চাকরি জীবনে সংসার খরচ, আমাদের দুই ভাইয়ের পড়াশোনার খরচ বাদ দিয়ে যে-ক’টা টাকা বাবা জমাতে পেরেছিল, তা দিয়ে একতলার এই বাড়িটা ছাড়া আর কিছু হয়নি। তাও আবার চাকরি শেষ হবার ছয়মাস আগে কাউকে কিছু না বলে, বাবা চলে গেল। আমি, দাদা পিতৃহারা হলাম। দাদার পড়াটা সেই সময় শেষ হয়ে গেছিল। কিন্তু দাদা স্থানীয় একটি রাজনৈতিক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিল। কম্পিউটার নিয়ে পড়াশোনা করবার সুবাদে দাদা বিভিন্ন কোম্পানিতে চাকরির জন্য ইন্টারভিউ দিচ্ছিল। সেই অবস্থাতেই বিশেষ প্রভাব খাটিয়ে একটি বড়ো কোম্পানির চেন্নাই অফিসে পোস্টিং নিয়ে দাদা চলে গেল। ফোন করত, চিঠি লিখত, কিন্তু মায়ের মন তো, চোখের আড়াল হলেই চোখের জল ফেলত। আমি আমার সাধ্যমতো চেষ্টা করলেও খুব বেশি বোঝাতে পারতাম না। এর মধ্যেই আমার বেকারত্বের জ্বালা আরম্ভ হল। একই বাড়িতে থেকেও কিছুটা অসামাজিক হয়ে পড়লাম। নিজের চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতির মধ্যে, কোথা দিয়ে যে সময় চলে গেল বুঝতেই পারলাম না। এই সময় মা আরও একা হয়ে গেলেও আমার কিছু করবার ছিল না। মাঝে মাঝে শৌভিকদের বাড়িতে কাকিমাকে দেখলেই নিজের মায়ের কথা মনে পড়ে যেত।

শৌভিকদের বড়ো বাড়ি, তবে সবাই ব্যস্ত, ব্যতিক্রম শুধু কাকিমা। বয়সে কাকিমা মায়ের থেকে কয়েক বছরের বড়ো। ওদের বাড়িতে গেলেই কাকিমাকে দোতলার ব্যালকনিতে বসে থাকতে দেখতাম। ‘কেমন আছো?’ জিজ্ঞেস করলেই, এক বুক হতাশা নিয়ে বলত, ‘এই বাড়িটার মতো।’

তারপরেই কাকু মারা যাওয়ার পরে কীভাবে শূন্যতা, একাকিত্ব, কাকিমাকে গ্রাস করেছিল, তার বর্ণনা দিতে আরম্ভ করত। আমার তখনই নিজের মায়ের কথা মনে পড়ে যেত।

বাড়ি ফিরে মায়ের পাশে বসে কিছুক্ষণ গল্প করতে ইচ্ছে করত, করতামও। সেই দিন থেকে পরের কয়েকটা দিন নিয়ম করে বসে গল্প করবার মাধ্যমে মায়ের সাথে সময় কাটাতাম।

কয়েক দিন পরেই অবশ্য মা বলে উঠত, ‘তুই তোর পড়াশোনা কর, আমি ঠিক আছি।’ আমি আবার বাধ্য ছেলের মতো পড়াশোনাতে মন দিতাম।

এমনি ভাবেই চলছিল। তারপরেই চাকরি পেলাম। অফিসের কাছে একটা বাসা দেখে মাকে বললাম, ‘কাজের খুব চাপ, এবার থেকে আমার বাড়ি ফিরতে রাত্রি বারোটা, একটা হতে পারে।’

ভীতু মনের মা সঙ্গে সঙ্গে জিজ্ঞেস করল, ‘ওখানে থাকবার কোনও ব্যবস্থা করতে পারবি না? না হলে তো তুই অসুস্থ হয়ে যাবি।’

আমি একটা বাড়ি নেওয়ার কথা জানাতেই মা বলে উঠল, ‘তাহলে তো আর অসুবিধা নেই। তুই ওখানেই চলে যা। আগে তো তোর শরীর।’

জিজ্ঞেস করলাম, ‘আর তুমি? তোমারও তো বয়স বাড়ছে।’

তুই আমার কথা ভাবিস না। আমি ঠিক থাকব। তাছাড়া চুয়ান্ন বছর বয়সটা কোনও বয়স নয়, তোর কাছে মাঝে মাঝে গিয়ে তো থাকব। বুকুর কাছেও চলে যাব।

তার থেকে তুমিও আমার সঙ্গে চলো। এই ঘরটা তালাবন্ধ থাক। শনি, রবি তো আমার ছুটি, চলে আসব। তাছাড়া আরও তো ছুটি আছে, ছুটি থাকলেই এখানে চলে আসব।

তা হয় না, এটা তোর বাবার তৈরি বাড়ি। এখানে আশেপাশের সবাই আমাকে চেনে। প্রয়োজনে বিপদে আপদে আমার পাশে দাঁড়াতে পারবে। তাছাড়া তোর বাড়িতে থাকলেও সারাটা দিন তো তুই অফিসে থাকবি। আমাকে ঘরের মধ্যে ভূতের মতো একাই থাকতে হবে। ওখানে একা থাকবার থেকে এখানে একা থাকাটাই ভালো।

এরপর আমি আর কোনও কথা না বলে, আমার নেওয়া বাড়িতে চলে গেলাম। প্রথম প্রথম একাই রান্না বা অন্য কাজকর্ম করতাম। মাস দেড় পরে একটা রান্না করবার ছেলে পেলাম। ছেলেটি প্রতিদিন সকাল সন্ধে রান্না করে দিয়ে যেত। আমি রবিবার রাত্রে বাড়ি থেকে অফিসের গ্রামে চলে এসে আবার শুক্রবার কোলকাতা ফিরে যেতাম। থাকল একা মা, আর বাবার তৈরি করা বাড়ি।

এমনিভাবেই পাঁচ মাস কাটল। এই পাঁচ মাসে চাকরির জায়গায় বেশ সুনাম অর্জন করলাম। প্রধান থেকে পার্টির স্থানীয় নেতাদের সাথে সখ্যতা বাড়ল। সেই সঙ্গে নতুন আরেক উপদ্রব আরম্ভ হল। অবশ্য এই উপদ্রবে শরীর মন, ভবিষ্যতের এক অলীক আনন্দের জন্য বেশ শিহরিত হয়ে উঠত। কিন্তু মা, দাদা জীবিত, তাই এই ব্যাপারে নিজেই কোনও সিদ্ধান্ত নিয়ে নিতে আমার মরালিটিতে বাধল। দাদা তখনও পর্যন্ত সংসার করেনি।

এই সব সাতপাঁচ ভেবেই মায়ের অনিচ্ছা সত্ত্বেও, আমার বাড়িতে কয়েকদিনের জন্যে মাকে নিয়ে এলাম। দুদিনের মাথায় শৌভিকের এই চিঠি।

হাত মুখ ধোয়ার আগেই খাম খুলে চিঠিটা বের করে পড়লাম। মা পাাশ থেকে জিজ্ঞেস করল, ‘কী লিখেছে?’

‘সামনের শনিবার ওদের বাড়িতে নিমন্ত্রণ করেছে। অবশ্যই যাওয়ার জন্য লিখেছে। তোমাকেও নিয়ে যেতে বলেছে।’

আমি জানি, মা শেষের কথাগুলো শোনেনি। এত তাড়াতাড়ি কলকাতাতে ফেরার কথা শুনে, মনে মনে বেশ খুশি হয়ে গেছে। বুঝলাম যে-কাজে মা এসেছিল সেটা এবারে খুব বেশি দূর এগোতে পারবে না। সেই শনিবার আমি একাই সন্ধেবেলা শৌভিকদের বাড়ি পৌঁছলাম। আগেই জানতাম, বাড়িতে কিছু একটা উৎসব হচ্ছে। এটা অবশ্য নতুন কিছু নয়। ওরা প্রায় দিন বিভিন্ন কারণে উৎসব করে, তা সে নিজেদের বিবাহবার্ষিকী হোক, বা ছেলে মেয়েদের জন্মদিন, ওদের বাড়ি আলোতে সেজে ওঠে, সেই সঙ্গে এলাহি খাওয়াদাওয়া। শৌভিকদের বাড়িতে কোনও অনুষ্ঠান মানেই, আমার নিমন্ত্রণ পাকা। মায়েরও থাকে, তবে মা, সব অনুষ্ঠানে যায় না।

শৌভিকদের বাড়ি পৌছনো মাত্রই বউদি এগিয়ে এসে আমাকে ঘরের ভিতর নিয়ে গেল। আমি বউদিকে বললাম, ‘আমাকে যে শৌভিক এমনি আসতে বলল। কিন্তু তোমাদের বাড়িতে তো দেখছি বড়ো কিছু অনুষ্ঠান হচ্ছে। আমি কিন্তু কী অনুষ্ঠান কিছুই জানি না, কোনও কিছু উপহার আনতে পারিনি।’

আমার কথা শেষ হওয়ার আগেই শৌভিকের বউদি বলে উঠল, ‘আমরা এই অনুষ্ঠানের বিষয়ে কাউকে বলিনি। সবাইকে অবাক করে দেওয়ার জন্যেই শুধু চিঠি দিয়ে নিমন্ত্রণ করলেও কী অনুষ্ঠান সে বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি। আর তুমি তো আমাদের ঘরের লোক, তুমি আবার উপহার কি আনবে?’ আমি আর কথা না বাড়িয়ে খাওয়াতে মন দিলাম।

নিমন্ত্রিতদের সংখ্যা খুব বেশি নয়। একশো দশ পনেরো হবে। আমার তো সবাইকে মনে হল আমারই মতো অবাক হওয়াদের দলে।

কিছু সময় পরে শৌভিকের সাথে দেখা হল। মা, না আসবার কারণ জিজ্ঞেস করতেই শৌভিক বলল, ‘আরও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করো ব্রাদার উত্তর পেয়ে যাবে।’

অন্য সব অনুষ্ঠানের মতো এবারেও ওদের বাড়িতে খাবারের অঢেল আয়োজন। সেইসব খাবার টুকটাক খেতে খেতে অন্য সবার সাথে কথা বলছি, এমন সময় শৌভিকের দাদা মাঝখানে দাঁড়িয়ে আমাদের সবাইকে অনুষ্ঠানে আসবার জন্য ধন্যবাদ জানাল।

আমাদের মধ্যে থেকে একজন বলে উঠল, ‘আরে, আমরা তো কেউই কোন অনুষ্ঠানে এসেছি, সে সব কিছুই জানি না, সেটা আগে বল।’

দাদা মুচকি হেসে আমাদের আরও কিছুসময় অপেক্ষা করতে বলে ভিতরে চলে গেল।

অবশ্য আমাদের খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হল না, কিন্তু তারপর যা দেখলাম, প্রথমে আমার নিজের চোখ দুটোকেই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। এরকম কিছু একটা দেখব, তা স্বপ্নেও ভাবিনি। আমার মতো যারা নিমন্ত্রত হয়ে এসেছিল, তারা প্রায় সকলেই কয়েকটা মুহূর্তের জন্য বাকরুদ্ধ হয়ে গেল। একটা চাপা গুঞ্জনও আরম্ভ হল।

আমি কারওর সাথে কোনও কথা আলোচনা না করলেও সব কিছু দেখে অবাক হয়ে গেলাম। চোখ বন্ধ করলেও ভেসে উঠল একটাই ছবি, কনের সাজে কাকিমা, পাশে ষাটোর্দ্ধ এক ভদ্রলোক, সঙ্গে শৌভিকদের বাকি সবাই।

মা একা থাকবে বলে, আমি বেশিক্ষণ থাকতে পারলাম না। অল্প একটু খেয়ে, মায়ের জন্যে খাবার পার্সেল করে তাড়াতাড়ি বাড়ির দিকে পা বাড়ানোর প্রস্তুতি নিলাম। শৌভিকের থেকে বিদায় নেওয়ার সময় জিজ্ঞেস করলাম, ‘কী করে সব হল?’

শৌভিক খুব স্বাভাবিক ভাবেই বলল, ‘তুই তো জানিস, আমরা সবাই ব্যাবসা নিয়ে ব্যস্ত থাকি। দাদার মেয়েটাও হস্টেলে। একা থাকতে থাকতে মা ডিপ্রেশনের পেশেন্ট হয়ে যাচ্ছিল। আর কয়েক দিন চললে অন্য রকম বিপদ হয়ে যেতে পারত। ডাক্তার দেখালাম। ডাক্তার বললেন, কম্পানির প্রয়োজন। কিন্তু আমাদের মধ্যে সেরকম কে কম্পানি দেবে বলতো? একটা আয়া ঠিক করলাম। মায়ের সাথে সবসময় থাকত, তার সাথেই মর্নিংওয়াকে বের হতো। এই মর্নিংওয়াকের সময় কাকুর সাথে আলাপ পরিচয়। মায়ের সাথে বন্ধুত্ব হল। বাড়িতে কাকু আসতে লাগলেন। দেখলাম কাকু বাড়িতে আসাতে মা বেশ হাশিখুশি থাকত, সাজগোজ করত। একদিন কাকুই প্রস্তাবটা মাকে দিলেন। মা প্রথমে আপত্তি করেছিল। কাকু তখন দাদার সাথে কথা বলেন। এরপর আমরা সবাই আলোচনা করতে বসি। আলোচনাতে অনেক কিছু কনফিউশন মিটিয়ে তারপর এই অনুষ্ঠান।’

শৌভিক সেদিন ব্যস্ত ছিল। আমাকে বলল, ‘পরে আরেকদিন আসবি, চুটিয়ে আড্ডা দেব।’ তারপরেই ওদের সবাইকে বিদায় জানিয়ে, মোবাইলে কাকিমা আর নতুন কাকুর একটা ছবি তুলে, বাসস্ট্যান্ডের দিকে পা বাড়াতেই, কানে এল নিমন্ত্রিতদের মধ্যে মাঝবয়সি এক মহিলা মোনোপজ সংক্রান্ত আলোচনা করতে করতে গাড়িতে উঠছে।

আমাদের হয়তো সব বয়সেই বিশেষ কারওর কম্পানির প্রয়োজন হয়। অনেক সময় এই কম্পানি ছেলে, মেয়ে, নাতি, নাতনি দিয়ে পূরণ করা যায় না। আমরা এত কিছু বুঝি না, বুঝতে চাইও না। ইনফ্যাক্ট আমার নিজের মায়ের ব্যাপারেও এতসব ভাবার প্রয়াজন আছে বলে, মনে করিনি। এমনকী মায়ের কাছে গেলে এরপরেও অন্য কিছু ভাবব।

বাড়ি ফিরতেই মা জিজ্ঞেস করল, ‘কিরে, শৌভিকদের বাড়িতে কী ছিল?’

আমি খুব স্বাভাবিক ভাবেই বললাম, ‘কাকিমার বিয়ে।’

‘কী বাজে বকছিস! বড়োদের নিয়ে কেউ এমনি কথা বলে?

মা রেগে গেল। আমি সঙ্গে সঙ্গে মাকে সবকিছু ভালো ভাবে বলে, কিছুক্ষণ আগে মোবাইলে নেওয়া কাকিমাদের ছবিটা দেখালাম। মা সব কিছু দেখে কোনও কথা না বলে নিজের ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়ল। আমি জামাকাপড় বদলে একটু ইতস্তত করে মায়ের ঘরে গিয়ে বললাম, ‘ঘুমোলে?’

মা শুয়ে শুয়েই উত্তর দিল, ‘না, কিছু বলবি?’

‘দাদাকে একটা ফোন করব?’

‘কেন?’

‘না, মানে তুমিও তো একা থাকো, তাই ভাবছিলাম…’

মা কিছু সময় চুপ করে শুয়ে থাকল। আমিও আর কোনও কথা না বলে আস্তে আস্তে মায়ের ঘর থেকে বের হওয়ার জন্যে পা বাড়াতেই মা বলল, ‘বুকু আজ ফোন করেছিল, পরের সপ্তাহে আসছে।’

 

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...