বিশ্বের দ্বিতীয় জনবহুল দেশ চীন থেকে আসছে সুখবর। এর ফলে চীনের শাসকদের কপালে অবশ্য ঘাম ফুটে উঠতে পারে। চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২, ৭৪, ৪০০টি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের মধ্যে ১৪,০০০টি ২০২৩ সালে বন্ধ করতে হয়েছে, কারণ স্কুলগুলিতে কোনও স্টুডেন্ট ছিল না। আসলে, চীনের জনসংখ্যা দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। সেখানকার যুবক-যুবতিরা এখন কেরিয়ার সচেতন এবং বুঝতে শিখেছে, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।
একদিকে হয়তো এটা প্রকৃতির পরিপন্থী কিন্তু বিশ্বের জন্য ভালো। প্রায় প্রতিটি দেশের শাসকদের ভয় আছে যে, জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকলে খাদ্য জোগান দেওয়া, চাকরি দেওয়া, বাসস্থানের ব্যবস্থা করা মুশকিল হবে। অবশ্য শাসকের ভয় এখন কমেছে। কারণ তরুণ জনগোষ্ঠী এখন নিজেদের স্বার্থে চায় ছোটো পরিবার। তারা নিজেরা ভালো ভাবে বাঁচতে চায়। ভবিষ্যতে বংশ রক্ষা হবে কী করে এবং মৃত্যুর পর কে শ্রাদ্ধকর্ম করবে— এইরকম হাস্যকর বিষয়গুলি নিয়ে ভাবতে নারাজ আজকের প্রজন্ম।
শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে, ধর্মের দোকানদাররা এবং রাজারা নারীদের সন্তান জন্মদানের যন্ত্রে পরিণত করেছিল, যাতে তাদের ছেলেদের যুদ্ধে পাঠানো যায় এবং মেয়েদের যৌন আনন্দের জন্য রাখা যায়। প্রতিটি সমাজ ও প্রতিটি ধর্মেই এই সূত্র ছিল। মেয়েরা শুধু পুরুষদের শারীরিক সুখদানের জন্য, সন্তান ধারণের জন্য, বাড়িঘর দেখাশোনা করার জন্য এবং তাদের খাবার রান্না করার জন্য গুরুত্ব পেত। বলা যায়, তারা ছিল একপ্রকার গৃহপালিত দাসী।
কিন্তু আজ নারীরা ক্ষমতাশালী। যে-কোনও মেয়ে আজ গর্ব অনুভব করতে পারে যে, সে সব কাজ করতে পারে। রণক্ষেত্রের পাশাপাশি রাজনীতিতেও পিছিয়ে নেই মেয়েরা। কিন্তু তাদের মূল্যায়ণ তখনই সম্ভব, যখন শুধু শহরে নয়, গ্রামের মেয়েরাও কেবল সন্তান উৎপাদনের কাজে নিয়োজিত না হয়ে, তাদের অধিকার বুঝে নেবে।
তবে, আশার কথা এই যে, এখন ধীরে ধীরে মানুষ বুঝতে শিখেছে, তাই জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে। তাই এখন মেয়েদের মূল্য বিচার হবে, মর্যাদা পাবে এবং নারীশক্তির কল্যাণে দেশের কল্যাণ হবে, পৃথিবীর কল্যাণ হবে। আর নারী-পুরুষের এই স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগীতা কিছু পুরুষের আলস্য দূর করবে।