প্রতি মুহূর্তে ফ্যাশনে নতুন রদবদল ঘটছে। নতুন বছরেও ফ্যাশনে এসেছে কিছু পরিবর্তন। আবার পুরোনোও কিছু ক্যারি ফরওয়ার্ড হবে। যারা ফ্যাশনের ট্রেন্ড নিয়ে উদগ্রীব হয়ে থাকেন, তাদেরও জানতে হবে ফ্যাশন ক্যারি করার সঠিক পন্থাটি। নয়তো সেটাই হয়ে উঠতে পারে ট্র্যাশ।
ফ্যাশন মানেই টপ, প্যান্ট, সুট, গাউন, শর্টস, ফুটওয্যার, ব্যাগ, জিন্স, ইত্যাদি নিয়ে নানারকম এক্সপেরিমেন্ট করা। লিস্ট এখানেই শেষ নয়। এগুলোকেই সামান্য রদবদল করে আবার নতুন নামকরণ। স্কিনি জিনস, বেলবটমস, ব্যাগি প্যান্টস, পাংক প্যান্টস, পেগ লেগ প্যান্টস, ক্যামিসোল টপ, চৌকর টপ, ট্যাংক টপ ইত্যাদি আরও কত নাম।
কিন্তু ফ্যাশন মানে শুধু ট্রেন্ডি পোশাক পরে নেওয়াই নয় বরং প্রপার ওয়েটে পোশাকটি ক্যারি করা। পোশাকের ফিটিং, রং, ফিনিশিং, আকার যদি চেহারার সঙ্গে মানানসই না হয়, তাহলে যে পোশাকটি পরেছে তার লুক আর ইম্প্রেশন তো খারাপ হবেই, পোশাকটি পরেও সে কমফর্টেবল হতে পারবে না। সকলের সামনে সে একটা অস্বস্তি অনুভব করবে।
এখানে কিছু টিপস দেওয়া হল যার সাহায্যে আপনি নতুন ফ্যাশন নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করতে পারেন এবং নতুন বছরে নিজের ইমেজ বদলে ফেলে সকলকে তাক লাগিয়ে দিতে পারেন।
ব্লেজার : ব্লেজার পরার পর যদি হাতের মুভমেন্ট রেস্ট্রিকটেড মনে হয় তাহলে বুঝতে হবে ব্লেজারের সঠিক সাইজ আপনি বাছেননি। এক সাইজ বড়ো নিলে তবেই আপনি ফিট ইন করতে পারবেন। সুতরাং দোকানেই পরে দেখে নিন হাত ঠিকমতো ওঠানো-নামানো যাচ্ছে কিনা।
শর্টস : শর্টস কেনার সময় পরে দেখে নিতে হবে সেটার লেংথ থাইয়ের নীচ পর্যন্ত পেঁছোচ্ছে কিনা। যদি লেংথ থাইয়ের উপর থাকে তাহলে বুঝতে হবে শর্টস লেংথ-এ ছোটো এবং সেটা বদলানো দরকার।
গ্যাপ ইন শার্টস : ফিটেড বটম আপ শার্টস, ডি কাপ সাইজ বা যাদের শরীরের উপরের অংশ ভারী তাদের জন্য সমস্যা তৈরি হতে পারে। এই শার্ট যদি সম্পূর্ণ বডিফিটেড হয়, তাহলে ওঠা-বসা করতে গেলে বোতামের মধ্যে গ্যাপ দেখা যাবে যা কিনা আপনাকে লজ্জায় ফেলতে পারে। সুতরাং শার্ট একটা সাইজ বড়ো কেনা উচিত, যাতে উঠতে বসতে ছাতির সঙ্গে না লেগে থাকে। ইচ্ছে হলে শার্ট ওপেন রেখে ভালো ফ্লয়িং সিল্ক ব্লাউজ বা টপের সঙ্গে মিক্সম্যাচ করতে পারেন।
ফুটওয়্যার : একটি সার্ভে অনুযাযী কেবল ২৮ থেকে ৩৭ শতাংশ মানুষ সঠিক সাইজের জুতো পরেন। জুতো যদি খুব পাতলা এবং ছোটো হয় তাহলে পায়ের পুরো প্রেশার পায়ের পাতা এবং নখের উপর পড়বে। এর ফলে ইনগ্রোন টো-নেল্স-এর সমস্যা হতে পারে আর পা ইনফেকটেড হতে পারে। ভুল জুতো বাছলে আপনি পড়ে যেতে পারেন, ঠিক ভাবে চলাফেরা করতে অসুবিধা হতে পারে, নানারকম সংক্রমণ হতে পারে। এর ফলে পাকাপাকি ভাবে পায়ের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। সুতরাং ফুটওয্যার কেনার সময় সঠিক পায়ের সাইজ মেপেই জুতো কিনুন। বিশেষ করে অনলাইন কেনাকাটায় বেশি করে খেয়াল রাখুন।
জিনস : বেশির ভাগ সময় দোকানে ট্রাই করে দেখে জিনস কিনে আনা সত্ত্বেও জিনসের ফিটিংস অতিরিক্ত টাইট হচ্ছে দেখা যায়। জিনস ট্রাই করার সময় সবসময় দুটো আঙুল কোমরে ঢুকিয়ে দেখে নেওয়া উচিত খুব সহজে সেটা জিনসের ভিতরে ঢুকছে কিনা। যদি সহজে ঢুকে যায় বুঝতে হবে ফিটিংস ঠিক আছে। নয়তো বসার সময় পেটে কোমরটা চেপে বসবে। জিনস-এর সাইজ নির্ভর করে সেটা কী টাইপের জিনস তার উপর। হাই ওয়েস্ট, লো ওয়েস্ট, নর্মাল ওয়েস্ট-এর জিনস একই সাইজের কখনও-ই হতে পারে না। যদি আপনার ওয়েস্ট সাইজ ৩৬ হয় তাহলে হাই ওয়েস্ট জিনস কেনার সময় সাইজ-এর থেকে কমই নিতে হবে। সুতরাং একটু দেখেশুনে জিনস কেনা বাঞ্ছনীয়।
ওভারসাইজড : এ বছরের ফ্যাশনে খুব ট্রেন্ডিং ওভারসাইজড পোশাক। এটা সঠিক ভাবে ক্যারি করতে না পারলেই সেটা ফ্যাশন ব্লান্ডার হয়ে উঠতে দেরি লাগবে না। সুতরাং ওভারসাইজ শার্ট বা সোযেটার পরলে লেগিংস বা স্কিনি জিনস-এর সঙ্গে পেয়ার আপ করুন। আবার ঢিলে কার্গো প্যান্টস বা পাজামা টাইপ ট্রাউজার্সের সঙ্গে টাইট শার্ট বা জ্যাকেট পরুন।
লেয়ার্স : লেয়ার্ড ড্রেস পরার সময় কেয়ারফুল থাকাটা খুব জরুরি নয়তো আপনাকে ক্লামজি লাগতে পারে। লুজ এবং টাইট লেয়ার্সের মধ্যে ব্যালেন্স করাটা খুব দরকার। যদি কিমোনো পরতে চান তাহলে ভিতরে ট্যাংক টপ পরলে মানানসই লাগবে। আর লুজ টপের সঙ্গে ফিটেড ব্লেজার স্টাইল করুন।
বডিকোণ ড্রেস : এই বডি হাগিং ড্রেসটি আপনার কার্ভস-কে কমপ্লিমেন্ট করতে সাহায্য করবে। কিন্তু এই ধরনের ড্রেস পরে যদি মনে হয় নিঃশ্বাস নিতে অসুবিধা হচ্ছে, গায়ে অতিরিক্ত টাইট হয়ে বসেছে, তাহলে একটা সাইজ বড়ো কেনাটাই বাঞ্ছনীয়। ড্রেসটি পরে আপনাকে সুন্দর লাগলে তবেই চেহারায় সেক্সি লুক নিয়ে আসতে পারবেন।
প্যান্টস : প্যান্টস পরার সময় খেয়াল রাখতে হবে, প্যান্টের পকেট যেন বাইরের দিকে ঝুলে না থাকে। বসার সময় যদি প্যান্টের পকেট উলটো হয়ে যায় বা ঝুলে থাকে, ভিতরের অংশও যদি ঝুলে থাকছে মনে হয়, তাহলে বুঝতে হবে প্যান্টের ফিটিংস ঠিক নয়। প্যান্টটি কোমরে সঠিক ফিট করলেও বুঝতে হবে ওটি আপনার সঠিক সাইজ নয়। নয়তো প্যান্টের পকেট থাইয়ের কাছটায় সঠিক ভাবে চেপে বসত।
মিক্সিং প্রিন্টস : প্রিন্ট মিক্স করাটা ফ্যাশনেবল ঠিকই কিন্তু ভুল প্রিন্ট যদি ম্যাচ করাবার চেষ্টা করেন তাহলে দেখতে বিশ্রী লাগবে। বিশেষ করে হ্যান্ডলুম ধরনের সলিড কালার-যুক্ত শাড়ির সঙ্গে প্রিন্টেড ব্লাউজ ম্যাচ করার সময় বিশেষ ভাবে কালার সেন্স থাকাটা জরুরি। সুতরাং আগে মিক্স-ম্যাচ করে দেখে নিন। প্রযোজনে অনলাইন সার্চ-এর সাহায্য নিন। ফ্যাশন, এক্সপেরিমেন্ট করার জন্যই তবে একটু খেয়াল রেখে।