ঝিলমিল তার বাবা, মা আর প্রতিবেশী কয়েজন বন্ধুবান্ধবের সাথে সুন্দরবন বেড়াতে এসেছে। ঝিলমিল ক্লাস থ্রিতে পড়ে। স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা শেষ, তাই ধরাবাঁধা জীবনের থেকে কটা দিন মুক্তি। সবাই সহমত হয়ে জল-জঙ্গল দেখবার আকর্ষণে মেতে উঠেছে। লঞ্চের নামটাও কি সুন্দর, মালঞ্চ। টুরিস্টরা যখন ভয়ে ভয়ে পদক্ষেপ ফেলছে, ওঠানামায় সাহায্যের দরকার হচ্ছে, সেখানে পনেরো ষোলো বছরের ছেলেগুলো এ-লঞ্চ ও-লঞ্চ অনায়াসেই টপকে যাচ্ছে। যেন জলেই ওদের জন্ম হয়েছে।

গদখালি থেকে যখন লঞ্চ ছাড়ল তখন চারদিক সোনা রোদে চিকচিক করছে। বিদ্যাধরীর পাড়ে পাড়ে সুন্দরী, বাইন, হেতাল আর গর্জনের জঙ্গল থেকে ভেসে আসছে সবুজের হাতছানি। সবাই মনোনিবেশ করে আছে যদি দক্ষিণরায়কে দেখা যায় কিন্তু তাকে দেখা তো সৌভাগ্যের ব্যাপার। একটা বাজপাখি ছোঁ মেরে একটা মাছকে ওঠাতেই ঝিলমিল হাততালি দিয়ে বলে উঠল, আরে দ্যাখো দ্যাখো বাজপাখি এখন জেলে হয়ে গেছে।

উঁচু ক্লাসে পড়া রাহুল বিবেচকের মতো বলল, আরে ওটা ওদের খাদ্য খাদকের সম্পর্ক। মাছ খাদ্য আর বাজপাখি খাদক। ঝিলমিলের মা ঝলমলে হাসি হাসতে হাসতে বললেন, ওই দ্যাখো কাকের কাণ্ড দ্যাখো। বাজপাখির নেওয়া মাছটা ছিনিয়ে নিয়ে চলে গেল! রাহুল বিজ্ঞের মতো বলল, প্রকৃতির বুকে আন্তঃপ্রজাতি সংগ্রাম চলছে।

এই সবকিছুর মাঝে টুর কোম্পানির রান্নার বউ কমলা ওদের জন্য গরম ভাতের সঙ্গে ঝুরি আলুভাজা, মুগডাল, চিকেন কষা আর টম্যাটোর চাটনি রেঁধে ফেলেছে। লঞ্চের ডেকের ওপর সুন্দর আযোজনে লাঞ্চ সারা হল। সবাইকে খাইয়ে সার্ভিস বয় মিঠুন সবার অনুরোধে নদী আর বনবিবিকে নিয়ে লোকসঙ্গীত গাইল। ওর অকৃত্রিম মেঠো সুর সবাই খুব উপভোগ করল।

পাখিরালয়ে পাখিরা হোটেলে সবার থাকার ব্যবস্থা। ওখানে পৌঁছোতে পৌঁছোতে সন্ধে নেমে গেল। পলিতে জল পড়ে জায়গায় জায়গায় পিচ্ছিল, ওরকম একটা রাস্তা পেরিয়ে পা টিপে টিপে সন্তর্পণে ঝাঁ চকচকে একটা হোটেলে পৌঁছোনো গেল। সবার ছোটো দিব্য আর ঝিলমিল তো ঘুমিয়ে কাদা। হোটেল ম্যানেজারের উষ্ণ অভ্যর্থনায় সবার মন ভরে গেল। তবে রান্নার দাযিত্ব সেই কমলা আর ওর স্বামী ফটিকের।

সন্ধেবেলায় সুন্দর সময় কাটানোর জন্য বসল বাউল-গানের আসর। চরম দারিদ্র‌্যের মধ্যে থেকেও গানের কলিতে ওরা আপ্রাণ ফুল ফোটানোর চেষ্টা করে গেল। চারদিকে ঝিঁঝি পোকার ডাক আর পূর্ণিমার আলোয় সে বাউল-গান, মনে হচ্ছিল স্বর্গীয় সুরধ্বনি।

ছোট্ট দিব্য বেশ চাঙ্গা হয়ে বাউলদের নাচের দলে ভিড়ে গেল। দিব্যর বাবা ছেলের নাচের ভিডিও তুলছেন। কমলাও এসে দাঁড়িয়েছে, ওর কোলে তার আট মাসের সন্তান নয়ন। রুজির তাগিদে ওদের সপরিবারে জলে ভেসে থাকা।

রাতে কাঁকড়ার ঝোল মেখে ভাত খেতে খেতে রাহুল মস্করা করল, বুঝলে সবাই আমরা সর্বোচ্চ সারির খাদক তথা সর্বভুক। ডাল আলুভাজাও খেলাম, আবার কাঁকড়াও খাচ্ছি। সকলে এ বিষয়ে ওর সঙ্গে সহমত হল।

দিব্য আর ঝিলমিলকে তাদের মাযেরা ভাত মেখে খাইয়ে দিচ্ছে। বাইরে দরজার কাছে একটা নেড়ি আর তার বাচ্চা লেজ নেড়ে নেড়ে খাওয়ার দৃশ্য দেখছে। দিব্যর বাবা কিছুটা মাখা ভাত নিয়ে নেড়িকে খাওয়াতে গেলে, দিব্য আর ঝিলমিলও খাওয়া ফেলে ছুটল। সব বাচ্চার মতো দিব্য আর ঝিলমিলও পশুপাখি ভালোবাসে।

নেড়ি ভাত খাচ্ছে, ঝিলমিলরা নেড়ির বাচ্চাকে আদর করছে। খাওয়া শেষ হতে যে যার রুমে ফিরল। শীতটাও বেশ জাঁকিয়ে পড়েছে। কমলা, ফটিক, মিঠুন আগুন জ্বালিয়ে তার পাশে আগুন পোহাচ্ছে। দিব্য আর ঝিলমিলের সে দৃশ্য দেখারও ইচ্ছে ছিল, মায়ের বকুনি খেয়ে ফিরতে হল।

পরদিন সকালে কুয়াশা কেটে গেলে ওদের গন্তব্য হবে সুধন্যখালি, যেখানে সাতটা নদী এসে মিশেছে। শরীরের ক্লান্তি আর পরদিন ভোর ভোর ওঠার তাড়ায় সবাই ঘুমোতে গেল।

ঝিলমিল মায়ের কোল ঘেঁষে বালিহাঁসের ডাকে চমকে চমকে উঠছিল। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে ওর বাবা পরেশ সেনের নাক ডাকা। মায়ের আদরের থাবড়ানিতে ঝিলমিল ঘুমিয়ে পড়ল। ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে ঝিলমিল জলের স্বপ্ন দেখল, সে যেন একা একটা নৌকায় কোথায় ভেসে যাচ্ছে।

 

পরদিন কুয়াশা না কাটতে মিঠুন এসে জানিয়ে গেল তাড়াহুড়ো করতে হবে না, লঞ্চ সকাল দশটার আগে ছাড়বে না। অতএব সবাই বেরোল স্থানীয় বাজারে মধু কিনতে আর খেজুরের রস খেতে। সুন্দরী, বাইন আর গর্জনের ছোটো ছোটো চারাও পাওয়া যাচ্ছিল। দিব্যর খুব ইচ্ছে ওই চারাগুলো দিয়ে ওদের কলকাতার ফ্ল্যাটে একটা জঙ্গল বানায়। অনেক করে বোঝানোর পর একটা খেলনা বাঘ হস্তগত করে ওর বায়না থামল।

সুন্দরবনে মধুরই মাহাত্ম্য, তারল্য বেশি খাঁটি মধু। আর একে সংগ্রহ করতে গিয়ে ওদের পরিবারে কতই না বিষাদের ইতিহাস। কখনও সাপের কামড়ে, কখনও কুমীরের কবলে কখনও বা বাঘের পেটে চলে যাওয়া। অনায়াসে সবকিছু পাওয়ার জীবন ওদের নয়, বড়ো কষ্টের ওদের যাপন।

পরেশ সেনদের গোটা দলটাই ফেরিঘাটে লঞ্চে উঠল। সকালের জলখাবারে ছাতুর কচুরি আর কাবলি চানার ঘুগনি। ডেকের ওপর নদীর শোভা, লঞ্চ-জাহাজের যাতায়াত দেখতে দেখতে খাওয়া এক অনন্য অনুভূতি। দিব্য একটা কচুরি নিয়ে হাঁ করে বসে রইল। ঝিলমিলকে আজ বেশ চনমনে লাগছে, রাহুল যথারীতি প্রাজ্ঞ, অনুসন্ধিৎসু।

প্রায় দু-ঘন্টা নদীবক্ষে ভেসে থাকার পর এল দোবাঁকি। প্রত্যেকেরই আশা যদি হঠাৎ করে দক্ষিণরায়কে দেখা যায়। কারণ এখানে হোগলা আর হেতালের মাঝে একটা বড়ো পানীয় জলের জলাশয় আছে। আহা কি অপূর্ব, সেই জলাশয় ঘিরে চিতল হরিণ আর বালি হাঁস বিচরণ করছে। দিব্য হাততালি দিয়ে খুশিতে বলে উঠল, কত হরিণ, একটা বাড়ি নিয়ে যাব, পুষব!

দলের প্রধান খাদ্যরসিক মন্ডলদা বলে উঠলেন, হরিণের মাংস দারুণ স্বাদের, একসময় কত খেয়েছি। দিব্য আর ঝিলমিলের একটুও পছন্দ হল না মন্ডলকাকুর কথা। প্রাণভরে ছবি তুললেন ঝিলমিলের বাবা। অনেকগুলো লঞ্চ একসঙ্গে আসায় বেশ ভিড় জমে গেছে। শান্ত প্রকৃতি এই কোলাহলে বিরূপ হচ্ছে, তবুও সইতে হচ্ছে। একটা জিনিস ভালো লাগার মতো যে, কেউ এদিক ওদিক ময়লা ফেলছে না।

ঝিলমিল একবার জঙ্গল, একবার হরিণের দল আর নদীর দিগন্ত জোড়া বিস্তৃতির দিকে তাকিয়ে বিহ্বল হয়ে পড়ছে। ওয়াচ টাওয়ার থেকে নেমে সবাই লঞ্চে ফিরে এল। এবারের গন্তব্য ঝড়খালি।

লঞ্চে পাঁঠার মাংস, ভাতের বিপুল আযোজন কমলার কল্যাণে। অসম্ভব সুন্দর স্বাদে সবাই পরিতৃপ্ত। দিব্য আর ঝিলমিল তাদের পছন্দের মাংসের মেটে পেয়ে গেছে, ওদের আর পায় কে!

ঝড়খালিতে পুনর্বাসন কেন্দ্রে বুড়ো অসুস্থ বাঘ দেখে ঝিলমিলের মন খারাপ হয়ে গেল। মনে মনে গডের কাছে ওদের জন্য অনেক প্রে করল। কুমীর দেখে সবাই খুব খুশি হল, কারণ ওদের বেশ চনমনে লাগছিল। পাখিরালয়ে ওদের হোটেলে ফিরতে রাত হয়ে গেল।

প্রতিদিনের মতো আজ ঝুমুর নাচের ব্যবস্থা। কী সুন্দর স্থানীয় মহিলারা নাচল সেই শ্রমসাধ্য নাচ! কাহিল হয়েও মুখের হাসিটুকু ধরে রাখল। দিব্য, ঝিলমিল, রাহুল, এমনকী দিব্য আর রাহুলের মা-ও নাচে অংশ নিল ওদের ডাকে। খুশি হয়ে যে যা দিল তাই নিয়ে ওরা হাসিমুখে চলে গেল।

ওরা বাড়ি ফিরবে কেউ পায়ে হেঁটে কেউ বা সাইকেলে। ঝিলমিল কমলার বাচ্চাকে কোলে তুলতে চেষ্টা করছে আর সে মায়ের কাছে থাকবে বলে প্রাণপণে চ্যাঁচাচ্ছে। কমলার হাতের পারশের ঝাল খেয়ে হাত চাটতে চাটতে সব পরিতৃপ্তির ঢেকুর তুলছে। সবার এই পরিতৃপ্তিটুকু কমলা উপভোগ করছে।

পরদিন সকাল নটা নাগাদ সবাই হোটেল ছাড়ল। ফিরতে হবে, তাই সবার মন খারাপ! ডেকের ওপর যে-যার মতো গল্প করছে। দূরে বকের সারি, জলের স্রোত, আকাশের ছড়ানো রোদ সবাই যেন বিদায় জানাচ্ছে। বাতাস কানে কানে বলে যাচ্ছে আবার এসো কিন্তু। বকশিশের টাকা হাতে করে কমলার চোখেও জল। দিব্য, ঝিলমিল মিঠুনের দুপাশে জমিয়ে বসে জল-জঙ্গল, রয্যাল বেঙ্গল টাইগার আর বনবিবির গল্প শুনছে।

গদখালি পৌঁছোতে প্রায় চার পাঁচ ঘন্টা লেগে যাবে তাই লাঞ্চের ব্যবস্থা লঞ্চেই। কমলা ওর কচিটাকে নিয়ে ব্যস্ত রান্নায়। লঞ্চ চালাচ্ছে যে-ছেলেটা ওর চোখেমুখেও বাড়ি ফেরার ছটফটানি। ইঞ্জিনের ঘড়ঘড় শব্দ শোনা যাচ্ছে, জোয়ারের টানও ভালো আছে তাই লঞ্চ তরতরিয়ে চলেছে।

 

হঠাৎ একটা ঝুপ শব্দ। আরে ঝিলমিল পড়ে গেল যে জলে, সবার মিলিত আর্তনাদের মাঝে ‘মা মা গো আমি ডুবে যাচ্ছি’।

কমলা সেই ডাক শুনে এসে কোলের ছেলেটাকে নামিয়ে রেখে ঝাঁপ দিল জলে। সবাই আতঙ্কিত, কমলা জল তোলপাড় করে ফেলছে, হ্যাঁ হাতে একটা কিছু ঠেকল ওর, আরে এ তো ঝিলমিলের চুল। তাই ধরেই টেনে তুলল কমলা, নিজের সঙ্গে ভাসিয়ে নিয়ে চলল। হ্যাঁ কমলা পেরেছে ঝিলমিলকে জলে ডুবে যাওয়ার থেকে বাঁচাতে।

ডেকের ওপর ওঠানোর পর মিঠুন ঝিলমিলের গিলে ফেলা জল ওকে শুইয়ে চাপড় মেরে মেরে বার করল। একটু সুস্থ হতে ঝিলমিলকে গরম দুধ খাওয়ানো হল কিন্তু আতঙ্কে ও পুরোপুরি ট্রমাটাইজড। ঝিলমিলের মা এখনও কেঁদে চলেছে। ফেরার অভিজ্ঞতা সকলের জন্য ভীষণ খারাপ হল।

কমলা সকলের খাওয়ার বন্দোবস্ত করল, ও যে এত বড়ো একটা কাজ করল তা ওর মুখ দেখে এখন বোঝবার উপায় নেই। খাওয়াদাওয়া মিটলে ঝিলমিলের বাবা কমলাকে কিছু টাকা দিতে চাইলেন। কমলা অবাক চোখে তাকিয়ে বলল, আমার ছেলে যদি জলে পড়ে যেত, আমি কি ওকে বাঁচানোর চেষ্টা করতাম না! সেরকমই তো, মাফ করবেন আমায়। এ টাকা আমি নিতে পারব না। কমলার ওপর কৃতজ্ঞতায় সবার অন্তর ভরে ওঠে।

তুমি আমার যে-উপকার করলে, তা সাত জন্মেও শোধ করতে পারব না, বলে অঝোর ধারায় কাঁদতে থাকে ঝিলমিলের মা। কমলা শান্ত ভাবে বলে, এতে উপকারের কিছু নেই। আপনারা আবার এখানে বেড়াতে আসবেন আর আশীর্বাদ করুন আমার নয়নকে যেন ঠিকমতো মানুষ করতে পারি।

ঝিলমিল ওর কানে এখনও জলের গর্জন শুনছে আর কমলামাসিকে মিঠুনদার গল্পের বনবিবির মতো লাগছে, যে তাকে উদ্ধার করছে।

 

সুন্দরবনের ঘটনার পর অনেক বছর পার হয়ে গেছে। এর মধ্যে পরেশবাবু সপরিবারে অনেকবার এসেছেন সুন্দরবনে। মালঞ্চ লঞ্চটা খুঁজে পেলেও কমলাকে আর খুঁজে পাননি তাঁরা। বিশেষ করে মায়ের কাছে ওই দুর্ঘটনার বিবরণ বারবার শুনতে শুনতে কমলাকে দেবীর আসনে বসিয়ে রেখেছে ঝিলমিল। যার জন্য সে পঁচিশটা বসন্ত পার করতে পেরেছে, না হলে তো দুর্গাদোয়ানি নদীতে কবেই ওর সলিলসমাধি ঘটে যেত।

কমলামাসির মুখটা ঝিলমিলের হালকা মনে পড়ে, তার চেয়ে বেশি মনে পড়ে জলের মধ্যের সেই দমবন্ধ পরিবেশ, যা অনেক দিন ওকে তাড়া করেছিল।

ঝিলমিল এখন ডাক্তারির চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্রী। কত জলে ডোবা রোগী আসে। কাউকে বা আনা হয় মৃত অবস্থায়। তখন ঝিলমিল আঁতকে ওঠে! মনে মনে ভাবে তারও তো এই অবস্থা হতে পারত, হয়নি যে তা ঈশ্বরের নয় কমলামাসির দান।

ঝিলমিল ভাবে, এবারে যে করেই হোক কমলামাসিকে খুঁজে বের করতেই হবে। নিশ্চয়ই এখন বয়স হয়ে গেছে, একবার দেখা করতেই হবে। তার ভাবনায় ছেদ পড়ে, ঝিলমিলদি একবার আসুন ডাক্তার কনক বসু আপনাকে তাড়াতাড়ি ডাকছেন। বলেই সিস্টার বোস ছুট লাগালেন।

ঝিলমিল ডাক্তার কনক বসুকে খুঁজতে খুঁজতে এমার্জেন্সিতে হাজির হল। আরে এখানটা এত লোকে লোকারণ্য কেন? মানিকতলায় একটা মেলা চলছে, সেখানে গ্যাস বার্স্ট করে কয়েজন অগ্নিদগ্ধ হয়েছে তাদেরকে আনা হয়েছে ঝিলমিলের হাসপাতালে।

সেই ভিড় থেকে একজন বয়স্ক মানুষ ঝিলমিলের দিকে এগিয়ে এল। তুমি ঝিলমিল দিদিমণি না, আমাকে চিনতে পারছ? আমি কমলার স্বামী ফটিক, সেই তুমি সুন্দরবন বেড়াতে এসে জলে ডুবে যাচ্ছিলে মনে আছে?

কমলামাসি কোথায়? ঝিলমিলের মুখ থেকে ছিটকে বেরিয়ে এল কথাটা। ফটিক ইশারায় মেঝের বিছানায় শুয়ে থাকা অর্ধদগ্ধ এক মহিলাকে দেখাল।

অগ্নিকাণ্ডে কমলা মারাত্মক জখম হয়েছে তাদের মেলায় দেওয়া চপের দোকানে। ঝিলমিল আর অপেক্ষা করেনি, চেষ্টা করে কেবিনে ভেন্টিলেশনে রেখে চিকিৎসা করছে কমলামাসির। মনে মনে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে চলেছে ঝিলমিল, নয়নের মাকে যেন নয়নের কাছে ফিরিয়ে দিতে পারে। যেমন করে একদিন কমলামাসি ফিরিয়ে দিয়েছিল ঝিলমিলকে তার মায়ের কোলে।

 

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...