কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউতে কার্যত টালমাটাল মহারাষ্ট্র। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ থেকে মৃত্যু সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারতীয় ক্রিকেট অধিনায়ক বিরাট কোহলি ও তাঁর বলিউডের অভিনেত্রী স্ত্রী অনুষ্কা শর্মা এবার  করোনা যুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য নতুন একটি পদক্ষেপ নিলেন৷ তাঁরা যৌথভাবে শুরু করলেন একটি ফান্ড রেইজিং প্রজেক্টে৷ নিজেরাই এর সূত্রপাতে ২ কোটি টাকার অনুদান দিলেন৷ এই প্রজেক্টের লক্ষ্য ৭ কোটি টাকা সংগ্রহ করা ৷ যা দেশের কোভিড ১৯ যুদ্ধে কাজে লাগবে৷

এদিকে আগামী দিনের প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করে বৃহন্মুম্বাই মিউনিসিপাল কর্পোরেশন (বিএমসি) মুম্বই শহরে শিশুদের জন্য একটি কোভিড কেয়ার সুবিধা স্থাপনের পরিকল্পনা করছে। অনেক পরিবার রয়েছে যেখানে মা-বাবা দুজনেই কোভিড আক্রান্ত, কিংবা হাসপাতালে ভর্তি তাঁদের ক্ষেত্রে সেই পরিবারের শিশুদের ভর্তি করার ভাবনা রয়েছে।

বর্তমান পরিস্থিতি সামলাতে মুম্বইয়ের সেলেবরা কেউ কেউ জনসেবার কাজে এগিয়ে এসেছেন৷ বিরাট-অনুষ্কাও তাদের মধ্যে অন্যতম৷ পরিস্থিতি সামলাতে ‘কেট্টো’ নামের একটি ফান্ড রেইজিং প্ল্যাটফর্ম-এর মাধ্যমে এই টাকা সংগ্রহের কাজ শুরু করেছেন তাঁরা৷ তাঁদের তরফে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে৷ সেখানে জানানো হয়েছে বিরাট কোহলি এবং অনুষ্কা একটি ৭ কোটি টাকা সংগ্রহের লক্ষ্যে ব্রতী হয়েছেন৷যাঁরা করোনা যুদ্ধে দেশকে সাহায্য করতে চান তাঁরা এই প্ল্যাটফর্মে অনুদান দিতে পারে৷

প্রাথমিক কাজ হিসেবে এই জুটি নিজেরাই ২ কোটি টাকা দিয়েছেন৷ এই মারণ ভাইরাসের বিরুদ্ধে দু‘জনেই একসঙ্গে কাজ করছেন৷

কেট্টোতে আগামী ৭ দিন ধরে প্রচার চালানো হবে৷ এই  ফান্ড নিয়ে কাজ করবে যারা তারা অক্সিজেন যোগান দেওয়া, মেডিক্যাল প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত কর্মী নিয়োগ করা, টীকাকরণ, জনসচেতনতা প্রচার করা এবং টেলি মেডিসিনের মতো একাধিক বিষয় নিয়ে কাজ করবে৷

এই প্রসঙ্গে কোহলি বলেছেন, ‘‘আমরা একটা অকল্পনীয় নারকীয় পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি৷ আমাদের দেশ অতীতে এরকম অবস্থা দেখেনি৷ কোভিডের বিরুদ্ধে আমাদের সকলকে একসঙ্গে লড়াই করতে হবে৷ যত সম্ভব মানুষকে বাঁচাতে হবে৷ গত বছর থেকে মানুষ যেভাবে কষ্ট পাচ্ছে তাতে আমি আর অনুষ্কা শিউরে উঠছি৷’’

বিরাট আরও বলেন, ‘‘আমরা যে অর্থসংগ্রহের কাজ শুরু করেছি, তাতে আমরা আত্মবিশ্বাসী যে এই যুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য একটা ভালো পরিমাণ টাকা সংগ্রহ করতে পারব৷ দেশবাসীদের এই কঠিন পরিস্থিতিতে আমাদের একসঙ্গে লড়াই করে জিততে হবে৷ ’’

অনুষ্কা জানিয়েছেন এই বেদনাময় পরিস্থিতি চাক্ষুস করাটাও কষ্টকর৷ তিনি বলেছেন, ‘‘বিরাট আর আমি ভীষণ কষ্ট পাচ্ছি মানুষের এই বিপন্নতা দেখে৷ আমরা মনে করি এই ফান্ড, ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইতে সাহায্য করবে৷ আমাদের অসহায় বাবে দাঁড়ি দাঁড়িয়ে দেখার পরিবর্তে অনেক কিছু করার আছে৷এই লড়াই আমাদের সকলের৷’’

এদিকে আসন্ন বিপদের কথা ভেবে যুদ্ধকালীন প্রস্তুতি শুরু হয়েছে মুম্বইয়ের নানা স্তরেও৷ জুলাই মাসের মধ্যে মহারাষ্ট্রে আছড়ে পড়তে পারে কোভিডের তৃতীয় ঢেউ এমনটাই জানানো হয়েছে বিএমসি-র তরফে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মত এই তরঙ্গ আগের দুইয়ের থেকেও অনেক বেশি শক্তিশালী হতে চলেছে। বিএমসি আধিকারিকরা জানিয়েছে ১২ বছরের কম বয়সি শিশুদের জন্য কোভিড ওয়ার্ডের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সেখানে প্রাথমিকভাবে ৭০০ বেড রাখা হবে। এছাড়াও নবজাতকদের জন্যও নিওন্যাটাল ইন্টেন্সিভ কেয়ার ইউনিট এবং পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট থাকবে।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...