আমি উনিশ বছর বয়সি একজন কলেজ ছাত্রী। বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। অপারগ হয়ে আপনাদের দফতরে চিঠি পাঠাচ্ছি। বলতে খারাপ লাগলেও আমার মায়ের স্বভাবচরিত্র একেবারেই ঠিক নয়। গত কয়েক বছর ধরে ওনার সঙ্গে আমার নিজের জেঠুর অ্যাফেয়ার রয়েছে।

আমার বাবার বিহেভিয়ার-টা এমন যেন তিনি কিছুই জানেন না। আবার এটাও হতে পারে বাবা হয়তো সত্যিই কিছুই বুঝতে পারেন না। উনি ভীষণ সহজ সরল মানুষ। সবকিছুকেই খুব সহজ ভাবে দেখেন, তাই ওনাকে বোকা বানানো খুব সহজ। কিন্তু যখন আমার বছর চোদ্দো বয়স, তখন থেকেই মোটামুটি বুঝতে শিখেছি, সেই থেকেই মায়ের প্রতি ঘৃণায় মন ভরে গেছে।

বাবাকে কর্মসূত্রে মাঝেমধ্যেই বাইরে যেতে হয়। এবং রাতও কাটাতে হয়। জেঠু ঠিক ওই দিনগুলোতেই চলে আসেন আমাদের বাড়িতে। তখন হঠাৎ করেই আমার স্বাস্থ্যের ব্যাপারে একটু বেশিই সচেতন হয়ে ওঠেন মা। তাড়াতাড়ি খাইয়েদাইয়ে শুতে পাঠিয়ে দেন। এরকম বহুবার হয়েছে আমি ঘুমোবার ভান করে পড়ে থেকেছি, তারপর হঠাৎ করেই জল খাওয়ার নাম করে নীচে গিয়ে দেখেছি জেঠুর সঙ্গে মা অন্তরঙ্গ হয়ে লিপ-টু-লিপ কিস করছে নয়তো আলিঙ্গনবদ্ধ হয়ে রয়েছে। এমনকী মা-বাবার বেডরুমেও দুজনকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখেছি।

বিগত কয়েক বছর ধরে এই ক্ষতটা আমি বয়ে বেড়াচ্ছি, যার ছাপ পড়তে শুরু করেছে আমার স্বভাবে। কেমন যেন খিটখিটে হয়ে যাচ্ছি। সকলের সাথে সহজভাবে মিশতে পারছি না। এই নোংরামো আর নিতে পারছি না। আমার বন্ধুরা পর্যন্ত আমার এই খিটখিটে স্বভাব নিয়ে চিন্তিত। বারবার জিজ্ঞাসা করায় গত সপ্তাহে  সব খুলে বলি ওদেরকে। ওরা রীতিমতো শকড। ওরাই বলছে ব্যাপারটা নিয়ে মা-র মুখোমুখী হতে। এমনকী প্রয়োজনে বাবাকে সমস্ত জানিয়ে দেওয়ার হুমকি পর্যন্ত দিতে বলেছে। এতে করে যদি মেয়ের সামনে লজ্জিত হয়ে মা এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসেন। আমি কি আমার বন্ধুদের কথা মতোই কাজ করব? বুঝতে পারছি না! বাবাকে এই সমস্ত জানিয়ে বাবার মনও ভাঙতে চাইছি না। কী করব?

 

চোখের সামনে এই সমস্ত নোংরামি দেখলে খারাপ লাগবে বৈকি। তাও আবার নিজের মা-কে। দিনের পর দিন উনি তোমার বাবাকে বিট্রে করে চলেছেন। খারাপ লাগাটাই স্বাভাবিক। তোমার কষ্টের জায়গাটা আমরা ফিল করতে পারছি। কিন্তু তৎসত্ত্বেও বলব, এখন তুমি যথেষ্ট বড়ো হয়েছে, এই সমস্যাগুলো নিজেই হ্যান্ডেল করতে পারবে। কাজেই তোমার সিদ্ধান্তই ঠিক, বাবাকে এখনই এসবের মধ্যে জড়িয়ে ফেলো না। যখন উনি জানবেন যে ওনার নিজের দাদার সঙ্গে তোমার মায়ের সম্পর্ক রয়েছে, কিছুতেই মানতে পারবেন না।

বরং বাবাকে এই সমস্ত থেকে দূরে রেখে মা-র সাথে সরাসরি কথা বলো। প্রথমে উনি কিছুতেই স্বীকার করবেন না। হয়তো তোমার মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন। এমনকী তোমার ডার্টি মাইন্ড এটাও শুনতে হতে পারে। কিন্তু তুমি তোমার জায়গায় স্থির থেকে ওনাকে বুঝিয়ে দেবে যে তুমি কী অবস্থায় ওনাদের একসঙ্গে বেডরুমে দেখেছ। তারপর তোমার বাবার প্রতি ওনার এই বিরূপতার কারণ এবং ভবিষ্যৎ প্ল্যান-এর কথা জানতে চাইবে।

আশা করি একটা সদুত্তর পাবে। এমনও হতে পারে তোমার বাবার সাথে ওনার কোনও সমস্যা থেকে থাকলে সেটাও হয়তো খুলে বলবেন তোমাকে। আগে ভালো ভাবে কারণটা বোঝার চেষ্টা করো, হতে পারে সব শুনে হয়তো ওনার প্রতি তোমার সিমপ্যাথি গ্রো করল। আবার উলটোটাও হতে পারে। তবে খুব রূঢ় হয়ো না, আবার অতিমাত্রায় সিমপ্যাথি দেখাতে যেয়ো না, বরং ওনাকে ইনসিস্ট করো যাতে উনি এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন। আর ভবিষ্যতে তোমার জেঠু যাতে তোমাদের বাড়িতে না আসতে পারেন, পাকাপাকিভাবে সেই বন্দোবস্ত করো। এসমস্ত পদক্ষেপের জন্য হয়তো মা-র সঙ্গে তোমার সম্পর্ক নষ্ট হবে, কিন্তু মনে রাখবে এতে একটা সংসার বেঁচে যাবে।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...