অফিসের বিশেষ অনুষ্ঠান হোক বা ছোটো ইভনিং পার্টি– সানশাইন মেক-আপ যে-কোনও সময়তেই দারুণ হিট। খানিকটা শিমারি লুক দিলেও এর মধ্যে একটা কুল এফেক্ট আছে। তাহলে আর দেরি কেন? বদলে ফেলুন পুরোনো লুক। চেহারায় আনুন নতুন চমক। এক্সপেরিমেন্ট করেই দেখুন না।
শুরুটা করুন বেস দিয়ে। এই সিজনে শুধুমাত্র পাউডার বেসড্ বেস-ই বাছুন নিজের জন্য। এর ব্যবহারে ঘাম কম হবে এবং মেক-আপও দীর্ঘস্থায়ী হবে। মেক-আপ টিকিয়ে রাখতে গোল্ডেন টিন্ট-যুক্ত শিমারি প্যান-কেক ট্রাই করতে পারেন। ম্যাট আর শিমারি লুকের সম্বন্বয়ে আপনার মুখের ত্বক হয়ে উঠতে পারে নজরকাড়া।
গরম আর ঘামের কারণে সাধারণত এই সময়টাতে আমরা সিম্পল এবং নো মেক-আপ লুকে থাকতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। তবে রাতের দিকে একটু চড়া মেক-আপ চলতেই পারে।
মেক-আপ দীর্ঘস্থায়ী করতে
চোখের মেক-আপের জন্য ইয়েলো রঙের শাইনি আইশ্যাডো চোখের ইনার কর্নারে লাগান এবং মিডিল এবং আউটার কর্নারে জুসি গ্লসি অরেঞ্জ শেড দিয়ে ফিল করে নিন। লং লাস্টিং এফেক্ট পাওয়ার জন্য আইশ্যাডো লাগানোর আগে প্রাইমার লাগাতে ভুলবেন না।
এবার চোখের মেক-আপ পারফেক্ট করার জন্য আইলিডে সরু করে আইলাইনার আর চোখের পাতায় মাসকারার কোটিং লাগান। ঠোঁটের উপর সান এফেক্ট আনতে অরেঞ্জ লিপশেডস্ দিয়ে সিল করে দিন। নিঃসন্দেহে এটা সানসেট লুক দেবে৷
এই মরশুমে অল্পবিস্তর ঘাম হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। এর থেকে বাঁচতে ওয়াটারপ্রুফ প্রোডাক্টস্ আর ওয়াটার রেজিসট্যান্স প্রোডাক্ট ব্যবহার করাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।যদি ঘাম হওয়ার প্রবণতা বেশি মাত্রায় থাকে, তাহলে টাচ-আপের জন্য রুমাল বা টিস্যু পেপার সঙ্গে রাখুন। এগুলির সাহায্যে হালকা হাতে উপর উপর ঘাম শুকিয়ে নিন। এছাড়াও সঙ্গে রাখুন টু-ওয়ে কেক। এটি সময়ে সময়ে টাচ-আপ করে নিন। এখন মার্কেটে বিভিন্ন ধরনের রিফ্রেশিং স্প্রে পাওয়া যাচ্ছে, যেগুলো মুখের ত্বকের ক্লান্তি দূর করে মুহূর্তেই ত্বককে রিফ্রেশ করে তোলে। যদি আপনি ওয়াটারপ্রুফ মেক-আপ করে থাকেন সেক্ষেত্রে দূর থেকে স্প্রে করে শুকিয়ে নিন। এটি যেমন আপনাকে ঠান্ডা অনুভূতি দেবে তেমনি রিফ্রেশ-ও করে তুলবে।
বিশেষ স্কিন কেয়ার টিপ্স
ত্বকে যদি জৌলুস থাকে, সেক্ষেত্রে মেক-আপ খুব ভালো বসে। আর এমন ত্বক পেতে হলে দরকার দৈনন্দিন ত্বকের পরিচর্যা। বিশেষত এই মরশুমে নিজেকে ফ্রেশ রাখতে গেলে প্রয়োজন একটু বাড়তি যত্নের। এখানে সেইরকমই কিছু টিপ্স দেওয়া হল, যেটির সাহায্যে আপনার মেক-আপ যেমন দীর্ঘস্থায়ী হবে, তেমনি ত্বকও হয়ে উঠবে উজ্জ্বল এবং লাবণ্যময়
- এখন বাজারে ত্বক পরিষ্কার রাখার জন্য অনেক ধরনের ডিপ পোর ফেশওয়াশ পাওয়া যায়। ত্বক অনুযায়ী যে-কোনও একটি ব্যবহার করে ডিপ ক্লিন করে নিন।
- সেকেন্ড স্টেপ অর্থাৎ টোনিং দিয়ে পোরস্ বন্ধ করা। এর ব্যবহারে ঘাম কম হয়। টোনিং-এর জন্য অ্যাস্ট্রিনজেন্ট বেশ ভালো অপশন। অ্যালকোহল-যুক্ত এই প্রোডাক্টগুলি ত্বকে ঠান্ডা অনুভূতি এনে দেয় রিফ্রেশও করে। বাড়তি অয়েলের মাত্রাও কমিয়ে দেয় অ্যাস্ট্রিনজেন্ট।
- পোরস্ মিনিমাইজ করার জন্য কোল্ড কম্প্রেশনও ট্রাই করতে পারেন। মলমল কাপড়ে বরফের কিউব জড়িয়ে মুখের ত্বকের উপর লাগাতে পারেন। ঘাম কম করার এটাও ভালো উপায়।
- এই মরশুমে ত্বকে একটা অয়েলি ভাব থাকেই। সেই কারণে এই সময়ে অনেকেই ময়েশ্চারাইজার এড়িয়ে চলেন। অথচ ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখার জন্য ময়েশ্চারাইজার লাগানোটাও জরুরি। এরকম পরিস্থিতিতে ত্বকের আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনতে হলে জেল বেসড ময়েশ্চারাইজার অবশ্যই ব্যবহার করুন।
- স্কিন হাইড্রেট করতে হলে অ্যালোভেরা জেলও ট্রাই করতে পারেন। এটি ত্বকে যেমন রিফ্রেশ ভাব এনে দেবে তেমনি ত্বককে করে তুলবে উজ্জ্বল এবং দাগমুক্ত। সঙ্গে ত্বককে ইউ-ভি রে থেকেও প্রোটেকশন দেবে।
- যে-কোনও মরশুমেই সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মি ত্বকের ক্ষতিসাধন করে। সেই কারণেই ত্বকের সুরক্ষার জন্য এসপিএফ আর পিএ ফ্যাক্টর-যুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করা জরুরি। এগুলির ইউভিএ এবং ইউভিবি দুটি রেঞ্জ থেকেই আপনার ত্বককে বাঁচাবে। মেক-আপ করার অন্তত রঙ্ম মিনিট আগে সানস্ক্রিন লাগান। সানস্ক্রিন লাগানোর সঙ্গে সঙ্গে অনেকেরই ঘামের সমস্যা দেখা দেয়। সেক্ষেত্রে টিশু পেপার দিয়ে ঘাম শুকিয়ে নিন। তারপর মেক-আপ ব্যবহার করুন।
- মুখের ত্বক থেকে এক্সট্রা অয়েল রিমুভ করতে ফেস প্যাকও দারুণ কার্যকরী। হাফ চামচ চন্দন পাউডারের সঙ্গে হাফ চামচ ক্যালামাইন পাউডার মিশিয়ে নিন। পরে এতে খানিকটা টম্যাটো পেস্ট এবং হাফ চামচ মধু মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে মুখে, গলায় লাগিয়ে নিন। শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা জলে ধুয়ে নিন। এর ব্যবহারে পোরস্ বন্ধ হয়ে যাবে এবং ঘামও কম হবে।
- এছাড়া সপ্তাহে দু-বার স্ক্রাব করতে ভুলবেন না। দু-চামচ মুসুর ডালবাটার সঙ্গে সামান্য অরেঞ্জ পিল পাউডার, মুলতানি মাটি আর দু-চামচ কাঁচা দুধ মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে ব্যবহার করুন। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন। এতে ত্বকের মৃত কোশ দূর হবে। ত্বক হয়ে উঠবে লাবণ্যে ভরা।