মেক-আপ করার সময় আমরা অনেকেই ছোটোখাটো বিষয়গুলি এড়িয়ে যাই। সবকিছু জেনেশুনেও টুকটাক ভুল করেই ফেলি। যার কারণে চেহারায় সেই পারফেক্ট ব্যাপারটা আসে না। একটা ঘাটতি থেকেই যায়। ভাবুন তো কোনও অনুষ্ঠানের কথা মাথায় রেখে কেনাকাটা করলেন, সমস্ত প্রোগ্রাম ফিক্সড্ করলেন, অথচ ঠিক নির্ধারিত দিনটাতেই আপনার ছোট্ট একটা ভুল আপনার সাজটাকেই make-up পুরো ম্যাড়মেড়ে নিষ্প্রভ করে তুলল। একটা কথা ভুললে চলবে না, সকলকে দেখতেও যেমন এক নয়, তাদের গায়ের রংও যেমন আলাদা, তেমনি সাজপোশাকও আলাদা হওয়া উচিত। এই প্রসঙ্গে বম্বের এক make-up আর্টিস্ট সোম ভল্লা বলেন, ‘মেক-আপের ধরন কেমন হবে তা নির্ভর করবে আপনি কোথায়, কী অনুষ্ঠান বা প্রোগ্রামে যাচ্ছেন তার উপর।’

ফেস – মেক-আপে বেসটাই হল সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। বেস তৈরি করার আগে ক্লিনজার দিয়ে ভালো করে মুখ, গলা এবং সামনের খোলা অংশ ভালো করে ক্লিন করে নিন। ঘামের কারণে মেক-আপ নষ্ট হয়ে যেতে পারে, তাই মেক-আপ দীর্ঘস্থায়ী করতে মেক-আপ ফিক্সার স্প্রে করে নিন। পরে টিস্যু পেপার দিয়ে মুখ শুকিয়ে নিন। ফিক্সার স্প্রে ব্যবহার করার কারণে রোমছিদ্র খুলে যেতে পারে, রোমছিদ্র বন্ধ করতে গোলাপজল দিয়ে টোনিং করে নিন। পরে ময়েশ্চারাইজার অ্যাপ্লাই করুন। খেয়াল রাখবেন ময়েশ্চারাইজার লাগানোর সময় মাসাজ করবেন না, জাস্ট হালকা হাতে ব্লেন্ড করে নিন। এবার ফাউন্ডেশন লাগানোর পালা। তবে মনে রাখবেন, ফাউন্ডেশন বাছার আগে নিজের স্কিনটোন সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হওয়াটা কিন্তু জরুরি। স্কিনটোন অনুযায়ী ফাউন্ডেশন অ্যাপ্লাই করার পর ব্রাশ দিয়ে ভালো করে ত্বকে মিলিয়ে দিন।

আই মেক-আপ – বেস তৈরির পর ব্ল্যাক পেন্সিল দিয়ে আইব্রোজ ব্ল্যাক করে নিন। এরপর হালকা ভাবে টুথপিক চালিয়ে নিন যাতে দুটি আইব্রোজ-ই দেখতে এক লাগে। আইব্রোজ পেন্সিল দেওয়ার স্ট্রোক এক হওয়া জরুরি। অনেকেই মেক-আপ করার সময় আইব্রোজের যেই-অংশে অন্যান্য অংশের তুলনায় কম রোম থাকে, সেই জায়গায় একটু ডিপ ভাবে পেন্সিল চালিয়ে দেন। এমনটা করবেন না, এতে দুটি ব্রোজ পৃথক দেখতে লাগে। এলিগ্যান্ট লুক পেতে হলে চোখে সিলভার কাজল লাগান। পরে আইবেস অ্যাপ্লাই করে নিন। সঙ্গে পিংক শেডের শ্যাডো ব্যবহার করুন। অনেকেই আছেন যাদের আইল্যাসেজ দেখার মতো বড়ো বড়ো, ওলটানো প্রকৃতির। তাদের মতো আইল্যাসেজ না-ই বা হল, আর্টিফিশিয়াল আইল্যাসেজ লাগানোই যেতে পারে। আজকাল লেন্সও ফ্যাশনে ইন। চাইলে নিয়মনীতি মেনে আপনিও লাগাতে পারেন। তবে লেন্স লাগালে একটা বিষয় অবশ্যই মাথায় রাখবেন, যে-রঙের ড্রেস পরবেন কখনওই সেই রঙের আইশ্যাডো ব্যবহার করবেন না। ড্রেস-এর রঙের লেন্স লাগালে কখনওই ভালো লাগে না।

হেয়ারস্টাইল – যে-কোনও ড্রেসের সঙ্গে খোলা চুলের জুড়ি মেলা ভার। একরাশ ঘন কালো চুলের কনসেপ্ট এখন ব্যাকডেটেড। এখন যেদিকেই চোখ মেলবেন নজরে পড়বে স্ট্রেটনিং হেয়ার, লেয়ারস্-এর আকারে পিঠে পড়ে রয়েছে। কেউ বা আবার সোনালি, বাদামি বা রেডিশ-এর টাচে চুলকে করে তুলেছে আরও একটু আকর্ষণীয়, গ্লসি। তাই হেয়ারস্টাইল নিয়ে আর সাতপাঁচ ভাববেন না। পিছিয়ে না থেকে আপনিও সামিল হোন উৎসবের আনন্দে। নিজেকে করে তুলুন আরও স্টাইলিশ। তবে হ্যাঁ সবকিছুরই তো একটা সাইড এফেক্ট থাকে, একটু যত্নশীল হলেই সেসব অনায়াসে কাটিয়ে ফেলা সম্ভব।

ঠোঁট – যদি চোখে লাইট মেক-আপ করে থাকেন, সেক্ষেত্রে ঠোঁটেও লাইট কালারই প্রয়োগ করুন। সোবার লুক পেতে পিংক লিপ লাইনার দিয়ে আউটলাইন করে তারপর লিপস্টিক লাগান। গালেও পিংক ব্লাশার দিন। ব্যাস, make-up কমপ্লিট।

 

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...