ভারতের মহিলারা চিনির দাম নিয়ে যতটা চিন্তিত, চিন নিয়ে ততটা নয়। কিন্তু এখন চিনের সঙ্গে প্রতিযোগিতা এবং ভয়ের বিষয়টি সবার কপালে ভাঁজ ফেলছে।

প্রসঙ্গত চিনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মতো তাঁর শাসনের মেয়াদকে সীমাহীন করেছেন। কিন্তু তাঁর দেশ ও বিশ্বের চোখে ভিলেন হয়ে ওঠেননি। যদিও তুরস্কের রজব তাইয়ে এডোঙ্গান এবং রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি পুতিনকে গণতন্ত্রের হত্যাকারী ও স্বাধীনতার পক্ষে বাস্তবিক একটি থ্রেট হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

যুদ্ধবাজ পুতিনের মতো নয়, শি জিনপিংয়ের ভাবমূর্তি খুবই ভদ্র এবং সহজ সরল নেতার– যাকে উচ্চ পদাধিকারী মনে হয় না, মনে হয় একজন পরামর্শদাতা। চিনের নীতিও এরকম। রাস্তা ও সর্বোত্তম পরিকল্পনার ক্ষেত্রে শি জিনপিং-এর লক্ষ্য হল সমস্ত দেশকে একটি রুট দিয়ে সংযুক্ত করা। অনেক দেশ এই বিষয়টি পছন্দ করছে কারণ অনেক বিচ্ছিন্ন দেশ এবং বড়ো দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল দিয়ে এই পথ সংযুক্ত হতে শুরু করেছে। বিগত ৭-৮ বছর ধরে এটা চলছে এবং বহু ক্ষেত্রে এর সুপ্রভাব পড়ছে।

গত কয়েকবছর চিনের অগ্রগতি খুব ভালো এবং চিন সামরিক মনোভাব দেখালেও, তার বাহিনি ভারত ছাড়া অন্য কোথাও পা বাড়ায়নি। এরা দক্ষিণ সাগরে তাদের আধিপত্য দাবি করছে কিন্তু এখনও শান্তি বজায় আছে। এখন শি জিনপিং গত তিন দশকে সরকারি ছাড়ের সুযোগ নিয়ে ধনী শেঠ হয়ে ওঠা চিনাদের বিরুদ্ধে দমন নীতি শুরু করেছেন। চিনেও আদানি, আম্বানিদের মতো লোক কম নেই, যারা কৌশলে অর্থ উপার্জন করছেন এবং কমিউনিস্ট দেশে ক্যাপিটালিস্ট হয়ে উঠছেন।

চিনের নেতা আবার দলতন্ত্র কায়েম করছেন। এর ফল ভালো নাকি খারাপ হবে তা এখনই বলা সম্ভব নয় কিন্তু এটা নিশ্চিত যে, কট্টরবাদী মাওসেতুঙ চিনকে প্রাচীন রীতিনীতি থেকে বের করার জন্য ঐতিহ্যকে ধ্বংস করেছেন। তার পরও এখন চিন যেভাবে নিজেকে সাজিয়ে নিয়েছে, তা সারা পৃথিবীর কাছে দৃষ্টান্ত হয়ে গেছে।

চিন তাদের সেনাবাহিনীকেও আরও মজবুত করে চলেছে এবং প্লেন, সাবমেরিন ইত্যাদির সংরক্ষণও আরও জোরদার করছে। ভারতকে ভয় দেখিয়ে রাখার জন্য চিন ভারত সীমান্তের কাছাকাছি বিমানবন্দর এবং সড়কপথ তৈরি করছে পশ্চিমি দেশগুলির সাহায্য ছাড়াই।

শি জিনপিঙের চিনকে বিশেষ নজরে রেখেছে আমেরিকা। তাই অস্ট্রেলিয়া, জাপান এবং ভারতের সঙ্গে সন্ধিস্থাপন করে রেখেছে আমেরিকা। যাতে প্রয়োজন হলে চারটি দেশ মিলে যৌথ ভাবে চিনের মোকাবিলা করতে পারে। কারণ, এই দেশগুলি এটা নিশ্চিত যে, প্রযুক্তি এবং বাহুবলে চিন এখন বেশ মজবুত। আর জাপান তো বুঝে গেছে যে, ১০০ বছর আগে চিনকে তারা যেমন কব্জা করতে পারত, এখন একা তা করা খুব সহজ কাজ নয়।

আদানি কিংবা আম্বানিরা কখনও আমাদের দেশের ভিত হতে পারে না। এরা আসলে পরজীবির মতো, সাধারণ মানুষের রক্ত শুষে নেয়। শি জিনপিঙ কতটা আলাদা আমরা জানি না কিন্তু এক মজবুত চিন ভারতকে কেন দীর্ঘদিন উদ্বেগে রেখেছে, তা ভেবে দেখার সময় এসেছে। আসলে আমাদের মূলধন তো এখন প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের পার্লামেন্ট কমপ্লেক্স এবং রামমন্দিরে ব্যয় হচ্ছে।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...