আমার বয়স ২৬ আমি মাসের গর্ভবতী সকালে ঘুম থেকে উঠে সবকিছু বমি হয়ে যায় অসম্ভব মাথা ঘোরে এবং খুব দুর্বল বোধ হয় ডাক্তারের পরামর্শে গ্লুকোজের ড্রিপ নিয়েছি কিন্তু তাতেও বিশেষ লাভ হয়নি দয়া করে এমন উপায় বলুন যাতে আমি সমস্যামুক্ত হতে পারব

গর্ভধারণের পর মহিলাদের শরীরে একসাথে অনেকগুলি পরিবর্তন হয়। হরমোনাল পরিবর্তন তার মধ্যে অন্যতম। যার ফলে বমির সমস্যাও হয়ে থাকে।হিউম্যান কোরিওনিক গনাডোট্রোফিন (Human Chorionic Gonadotropin -hCG) নামক হরমোনটি গর্ভকালীন পরিস্থিতিতে, শরীরে খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায়। এই হরমোন বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে বমি বমি ভাবের ব্যাপারটি হয়ে থাকে। আবার মা যদি গর্ভে জমজ সন্তান ধারণ করেন, তবে এর মাত্রা আরও বেশি পরিমাণে বৃদ্ধি পায়৷

আপনার লক্ষণগুলি সাধারণত গর্ভাবস্থার দ্বিতীয় মাসের শুরু থেকে আরম্ভ হয়ে যায়। কারও বেশি সমস্যা হয় কারও আবার কম। কারণ কারও আবার বুক ধড়ফড় করার সমস্যাও হয়ে থাকে অথবা বমি বেশি হয়। তবে বেশির ভাগ মহিলাদেরই এই সমস্যা চার-পাঁচ মাস পেরিয়ে যাবার পরে নিজে থেকেই বন্ধ হয়ে যায়। ততদিন পর্যন্ত অসুবিধার হাত থেকে বাঁচতে ছোটো ছোটো ব্যাপারে একটু খেয়াল রাখা খুব দরকার।

গর্ভাবস্থায় বমির সমস্যা বেশি হলে প্রতি এক ঘণ্টা পরপর জল পান করুন। এটি বমির সমস্যা কমাতে সাহায্য করবে। এটি শরীরকে আর্দ্র রাখতেও কাজ করবে। তাই বিছানার পাশে এক গ্লাস জল সবসময় রাখুন। ঘুম থেকে ওঠার পর ছোটো ছোটো চুমুকে জল পান করুন। এটি মনমেজাজ ভালো রাখবে, হজম ভালো করবে।

যদি সকালে উঠেই বমির সমস্যা বেশি হয় তাহলে বিছানা থেকে ওঠার আগে একটা শুকনো টোস্ট বা বিস্কুট খেয়ে নিন। নিজের খাওয়ার রুটিন বদলান। সারাদিনে তিনবার ভরপেট মিল খাওয়ার বদলে অল্প সময়ের গ্যাপে গ্যাপে একটু একটু করে খাবার খান। কোনও বিশেষ খাবার অথবা গন্ধে গা-বমি বেশি হলে সেটা খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ করুন। কারণ গর্ভাবস্থায় গন্ধের প্রতি সংবেদনশীলতা অনেক বেড়ে যায়। এই সমস্যা কাটাতে গরম গরম খাবার খাওয়ার বদলে ঠান্ডা খাবার খাওয়া বাঞ্ছনীয়। চতুর্থ মাস থেকে গর্ভের আকার বৃদ্ধি পাওয়া শুরু হলে ঢিলেঢালা আরামদায়ক পোশাক পরুন।

এছাড়া মাথা ঘোরা এবং দুর্বলতার সমস্যার জন্য নিজের ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন। কারণ এই ক্ষেত্রে পরীক্ষার মাধ্যমে জানা দরকার রক্তাল্পতা বা লো ব্লাড প্রেশারের সমস্যা আছে কিনা আপনার। কারণ ওই দুটো ক্ষেত্রেই এরকম সমস্যা হয়ে থাকে। গর্ভস্থ শিশুর বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে গর্ভবতী মহিলার ডায়েটেও ক্যালোরি, প্রোটিন, ভিটামিন এবং মিনারেলস-এর প্রযোজন বাড়তে থাকে– ফলে খাবারের প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখা জরুরি। শরীরে যদি কোনও পুষ্টিকর তত্ত্বের অভাব থাকে তাহলে ডাক্তার, ওষুধ, ক্যাপসুলের মাধ্যমে সেই অভাব পূরণ করার চেষ্টা করবেন।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...