কাটনি জংশনে নেমেই মনটা হুহু করে উঠবে বনজ গন্ধটার জন্য। কারণ আর অনতিদূরেই সেই বহুকাঙ্খিত ডেস্টিনেশন, Bandhavgarh। বাঘের সঙ্গে মোলাকাতের অভিলাষ নিয়ে সেখানে আসা। গাড়িতে ঘন্টা দুয়েকের পথ পেরোলেই ‘নেচার হেরিটেজ রিসর্ট’। সেখানেই আরণ্যক পরিবেশে রাজকীয় অভ্যর্থনায় থাকার ব্যবস্থা। সঙ্গে গেম ড্রাইভের রোমাঞ্চ। জঙ্গলে দিন কয়েক কাটিয়ে দেওয়ার এমন সুযোগ হাতছাড়া করা উচিত নয়।

 

সাধারণত ভোর ৫টা থেকে সকাল ৯টা আর বিকেল ৩টে থেকে সন্ধে ৬টা – দু দফায় জিপে হয় অরণ্যভ্রমণ। নসিব থাকলে বাঘবাহাদুরের সাক্ষাৎ ঠেকায় কে! পৌনে তিনটে নাগাদ হাজির হতে হয় জিপ সাফারির জন্য। গন্তব্য টালা গেট। সেখান থেকেই পার্কে ঢোকার রুট ও গাইড দিয়ে দেওয়া হয়।

প্রায় ঘন্টা তিনেকের রোমহর্ষক জিপ যাত্রার পদে পদে অ্যাডভেঞ্চার। বন্য পশু আর জঙ্গলের নিজস্ব মায়ায় বুঁদ হয়ে এ এক রোমাঞ্চকর সফর। কোথাও হরিণের পাল, তো কোথাও বানরের ঝাঁক– অধৈর্য পর্যটক বারবার মনের ভিতর কড়া নাড়ে– কোথায় তিনি? যার জন্য এই অধীর প্রতীক্ষা!

অবশেষে জঙ্গলের প্রভুর সঙ্গে দেখা। ‘লর্ড অফ Bandhavgarh’। অজস্র ক্যামেরার ঝলকানিতে বন্দি হবেন সেলিব্রিটি। তারপর ধীর পায়ে হারিয়ে যাবেন সবুজ অন্ধকারে। থামার সময় নেই এগিয়ে চলার আরও বাকি। অদূরেই বান্ধবগড় কেল্লা। মোতি মহলের ধবংসাবশেষে এখনও রাজকীয় বৈভবের চিহ্ন স্পষ্ট। এই বান্ধবগড় ফোর্টের সীমানা ঘেঁষেই এক নিরিবিলি জঙ্গুলে পরিবেশে রয়েছে একটি ৩০ ফিট লম্বা সিঙ্গল পিস স্যান্ডস্টোনে নির্মিত বিষ্ণমূর্তি– যা দর্শন না করলে ভ্রমণ অসম্পূর্ণ থাকে।

 

জঙ্গলের মজা সম্পূর্ণভাবে উপভোগ করতে মধ্যপ্রদেশের বান্ধবগড় এক অসামান্য গন্তব্য হতে পারে। বিন্ধ্যপর্বতের কোলে ১০৫ বর্গ কিমি বিস্তৃত এই জঙ্গল, রয়্যল বেঙ্গল টাইগার-এর আবাসস্থল হিসাবে সুখ্যাত। একদা রেওয়ার মহারাজের মৃগয়াভূমি ছিল এই বনাঞ্চল। এখনও মহারাজের সেই বিলাসী অরণ্য-নিবাস মহারাজা রয়্যাল রিট্রিট রয়েছে বন-বিলাসীদের রোমাঞ্চকর অরণ্য সফরের পূর্ণ আনন্দ দিতে। থাকার জন্য আরও রয়েছে টাইগার ডেন রিসর্ট, বান্ধবগড় জাঙ্গল লজ, মহুয়া কোঠি প্রভৃতি রাজকীয় ব্যবস্থা।

কীভাবে যাবেন :

হাওড়া থেকে শক্তিপুঞ্জ এক্সপ্রেস, কলকাতা মেল বা হাওড়া-মুম্বই মেল-এ জব্বলপুর নেমে, জব্বলপুর থেকে কাটনি পৌঁছোতে হবে। কাটনি থেকে সরাসরি বান্ধবগড় পৌঁছোতে পারেন গাড়িতে। শিপ্রা এক্সপ্রেস-এ সরাসরি হাওড়া থেকে কাটনি পৌছনো যায়।

কখন যাবেন : পার্ক খোলা থাকে অক্টোবর থেকে জুন মাস পর্যন্ত। পরিযায়ী পাখি দেখতে হলে অক্টোবর থেকে জানুয়ারিই হল আদর্শ সময়।

 

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...