দাম্পত্য। সুন্দর একটা শব্দ। যে-শব্দ একই সঙ্গে দু’জনের কথা বলে। দু’জন একসঙ্গে থাকলে ভালোবাসা হয় নিবিড়। কিন্তু অনেকসময় আমরা দেখি যে সেই নিবিড় সম্পর্কেও চিড় ধরে। তারপর সময় হয় সেই চিড় -ধরা সম্পর্ককেও জোড়া লাগানোর। কেমন সেই Patch up, যা Break up-এর পরও নতুন করে শুরু করার একটা সুযোগ দেয়!
আমরা জানি সুস্থ জীবন ও যৌবন ধরে রাখার জন্য ভালোবাসা ও সহমর্মিতা তৈরি করা জরুরি। প্রেমের অনুভূতি মানুষকে পরিতৃপ্ত করে। সে যেন বেঁচে থাকার অর্থ ও উদ্দেশ্য খুঁজে পায়।
বিচ্ছেদ হবার পর
এতসত্ত্বেও বিচ্ছেদ হয়। স্বামী-স্ত্রী বিচ্ছেদে উভয়ই প্রথমে মানসিক দিক থেকে বিপর্যস্ত হয়। বিচ্ছেদ হলেও দু’পক্ষই এটা মেনে নিতে পারে না যে তারা এখন দুই বিচ্ছিন্ন ব্যক্তি। সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিচ্ছেদ আরও মর্মন্তুদ। সমাজ, বিশেষত ভারতীয় ও বঙ্গসমাজ, বিচ্ছিন্ন দম্পতিকে কখনওই ভালো চোখে দেখে না। বিচ্ছেদ হওয়ার পর অথবা বিচ্ছেদকালীন অবস্থায়, সমাজের নানা স্তর থেকে উভয়ের উপর চাপ আসে নানা আঙ্গিকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে চাপ বেশি এসে পড়ে মেয়েদের উপর। এটা ধরেই নেওয়া হয় যে, উভয়ের বন্ধন শিথিল হয় মেয়েদের কারণেই। ফলত, মেয়েটি অসহায় হয়ে পড়ে। একাকিত্বই তখন মেয়েটির একমাত্র সঙ্গী। সে বোঝে সঙ্গীহীন অবস্থায় জীবনযাপন কত দুরূহ, কত কষ্টের। তখন সে বিচ্ছিন্ন সম্পর্ক জোড়া লাগিয়ে আগেকার প্রেমপূর্ণ সম্পর্কে ফিরে আসতে উদ্যত হয়। ছেলেটিও বোঝে সহধর্মিণী কথার অর্থ। বোঝে সহধর্মিণী ব্যতীত জীবনটা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া অত্যন্ত কঠিন। ঠিক তখনই Married Life -এ আসে পুনর্মিলন বা প্যাচ-আপের সময়।
সঙ্গীর মহত্ত্ব
এমন অনেক জুটি আছে, যারা সঙ্গীর থেকে একবার বিচ্ছিন্ন হয়ে আবার জুড়ে যায়। দ্বিতীয়বার জুটি বাঁধার পর তাদের সম্পর্ক আগের থেকেও ভালো হয়। কেন এমন হয়? দু’জনের মসৃণ সম্পর্কে নানা কারণে সাময়িক ছেদ আসে। হয়তো ভুল বোঝাবুঝি, হয়তো বা তৃতীয়পক্ষের অতিরিক্ত নাক গলানো বা অন্য কোনও কারণ।
অনেকসময়ই নতুন দাম্পত্যজীবনের সম্পূর্ণ নতুন পরিবেশ ও পরিস্থিতিতে উভয়েই সমস্যার সমাধান করতে গিয়ে আরও সমস্যায় জড়িয়ে পড়ে। স্বভাবতই তারা ভাবতে বাধ্য হয় যে, এমন অবস্থায় দু’জন দু’জনের থেকে পৃথক থাকলে হয়তো বা সমস্যার সমাধান হবে। এভাবেই তারা সাময়িক বিচ্ছেদের দিকে এগোয়।
এই বিচ্ছেদের সময়ই উভয়ে উপলব্ধি করে উভয়ের অভাব। বোঝে, একে অন্যের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকা কত কষ্টের, কত দুঃখের। উভয়ই তখন নিজেদের দোষগুলির উপর আগে নজর দেয়। ভাবে সেগুলো শুধরে নেওয়া দরকার। ভাবে, নিজের কথা না ভেবে সেই অন্যজনের কথা ভাবাই উচিত। ফল, দাম্পত্যজীবনের মূলমন্ত্র পারস্পরিক ত্যাগের মধ্য দিয়েই তারা ফিরে পায় দ্বিতীয় বসন্ত এবং বোঝে যে, এ হল ব্রেক-আপের পর প্যাচ-আপ। এইসময়েই কিন্তু সত্যিকারের ভালোবাসার উপলব্ধি হয়৷ ।