বয়স যাই হোক না কেন সৌন্দর্য ধরে রাখতে শুধুমাত্র মেক-আপ করাই যথেষ্ট নয়। বয়স অনুযাযী পোশাক চয়নের উপরেও খেয়াল রাখাটা খুব জরুরি। ইয়ং জেনারেশন ইচ্ছেমতো যেমনটা পছন্দ পোশাক পরে এবং বয়স অল্প হওয়ায় মানিয়ে যায়, কখনও আবার সেটাই ফ্যাশন স্টেটমেন্টও হয়ে ওঠে। কিন্তু বয়স ৩০-৩৫-এ পৌছলেই বুড়িয়ে যাচ্ছেন, নিজেকে আর ফ্যাশনেবল রাখা সম্ভব নয়, এমন ধারণা করে নেওয়াটা ভ্রান্ত। বয়স বাড়লেও আপনিই বা কম কীসে?
Fashion ডিজাইন করা যাদের পেশা তাদের মতে, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মহিলারা যদি সঠিক পোশাক নির্বাচন করেন তাহলে তারাও সৌন্দর্যে, নতুন প্রজন্মকে ভালো মতো টেক্কা দিতে পারবেন।
অল্প বয়সে ম্যাচিওর লুক পাওয়ার জন্য কখনও মায়ের শাড়ি, মাসির জুতি বা পোশাক ধার করে কিশোরীরা পরেই থাকে। কিন্তু শরীর, মন যত ম্যাচিওর করবে, ততই খুব কম প্রয়াসে নিজের সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলা সহজ হয়ে যাবে। দরকার শুধু ওয়ার্ডরোব মেকওভার।
সঠিক মাপ ও শেপ-এর পোশাক নির্বাচন
সব বয়সেই ফিগার মেনটেইন করতে পারবেন মানে ৩৬-২৪-৩৬ ফিগার হবে, এটা অনেক ক্ষেত্রেই সম্ভবপর নাও হয়ে উঠতে পারে। তার মানে এই নয় যে, সঠিক শেপ-এর ফিটিংস ড্রেস পরা ছেড়ে দিতে হবে। ফিগার যদি সুন্দর হয় যে-কোনও বয়সেই মাপ অনুযাযী পোশাক নির্বাচন করতে পারেন, ফলে নিজের পারফেক্ট বডিশেপ অপরের দৃষ্টি আকর্ষণ করবেই এবং নিজের পছন্দের পোশাকেই হয়ে উঠতে পারবেন অনন্যা।
বয়স বাড়তে থাকার সঙ্গে সঙ্গে পেটে যদি সামান্য মেদ-ও জমা হয় চিন্তার কিছু নেই। টামি টাকার ব্যবহার করে বডি হাগিং ড্রেসেই পেতে পারবেন পারফেক্ট লুক।
যদি ব্রেস্ট লাইন সামান্য ঝুঁকে গেছে বলে মনে হয়, তাহলে সাপোর্টিভ ব্রা পরে সঠিক লুক আনতে পারেন। বডি শেপার শেপওয্যার, সাপোর্টিভ ব্রা-এর নানা ভ্যারাইটি এখন মার্কেট এবং অনলাইনেও সহজে অ্যাভেলেবেল।
ব্ল্যাক শেডস পোশাকের কালেকশন রাখুন
ওয়ার্ডরোব-এ ব্ল্যাক শেডস-এর কালেকশন অবশ্যই রাখুন। যেমন ব্ল্যাক ড্রেস, টপ, কুর্তি, শাড়ি, জিনস ইত্যাদি। এভারগ্রিন ব্ল্যাক শেড কখনওই আউট অফ ফ্যাশন হবে না। যে-কোনও সিজন-এ, নিজের খুশিমতো পার্টিতে, ফর্মাল মিটিং-এ অথবা অনুষ্ঠান বা ফেস্টিভ্যালে ব্ল্যাক ড্রেস, শাড়ি সবকিছুই পরা যেতে পারে। কালো রঙের পোশাকের সঙ্গে ম্যাচিং হ্যান্ডব্যাগ, হাতঘড়ি, ফুটওয্যার সবকিছুই আজও ফ্যাশনে ইন।
পার্টির জন্য রাখুন নি-লেংথ ড্রেস
আগে পার্টিতে ড্রেস পরে অনায়াসেই যখন নিজেকে ক্যারি করতে পেরেছেন তাহলে এখন করতে কীসের লজ্জা? ৩০ বছর বয়স পেরিয়ে যাওয়া মানে আপনি ড্রেস পরে আর পার্টি এনজয় করতে পারবেন না, এমন নয়। ফ্যাশন এবং কমফর্ট দুটোরই খেয়াল রেখে শর্ট ড্রেস-এর বদলে হাঁটু পর্যন্ত ড্রেস পরুন, আপনার সৌন্দর্য বা ফ্যাশনে এতটুকু ঘাটতি হবে না।
স্ট্র্যাপি টপস বাছুন নিজের জন্য
কলেজে থাকাকালীন স্ট্র্যাপি টপ পরতে যখন দ্বিধা করেননি তখন একটু বেশি বয়সে এসে কেন এটা অ্যাভয়েড করবেন? এখনও নিজের ওয়ার্ডরোব-এ স্ট্র্যাপি টপ রাখতেই পারেন কিন্তু এখন যখন কিনবেন তখন একটু চওড়া স্ট্র্যাপের ড্রেস বা টপ হলেই ভালো হয়। এতে আপনার কমফর্ট লেভেল-ও বজায় থাকবে আর দেখতেও স্টাইলিশ লাগবে।
ওয়ান পিস সবসময়ে বেস্ট
ওয়ান পিস, গাউন, ম্যাক্সি, বিচ ড্রেস ইত্যাদি ৩০ বছর বয়সের পরেও অনায়াসে পরতে পারেন। এই ধরনের আউটফিট-এ যথেষ্ট Fashionable হয়ে উঠতে পারবেন। পার্টি, অনুষ্ঠানে ওয়ানপিস বা গাউন পরতে পারেন আবার হলিডে সেলিব্রেশনের সময় বিচ ড্রেস আপনার পার্সোনালিটির সঙ্গে মানানসই হতে পারে। রেগুলার ওয্যার-এর জন্য ম্যাক্সি ড্রেস ট্রাই করুন।
অল টাইম ফেভারিট জিনস
টিনএজারস থেকে শুরু করে, সব বয়সের মহিলারাই জিনস পরতে পছন্দ করেন। তবে একটু বেশি বয়সে জিনস-এর সঙ্গে টাইট ফিট স্কিনি টি-শার্ট একটু বিসদৃশ লাগতে পারে। ফর্মাল শার্ট, লুজ কুর্তার সঙ্গে স্মার্ট দেখতে লাগবে। লং ওযে্ট-এর বদলে হাই ওযে্ট জিনস আপনাকে বেশি মানাবে।
শাড়ি ভালো বিকল্প
রেগুলার ড্রেস বা প্যান্টস, টপ, জিনস ইত্যাদির লুকে যদি বোর ফিল করতে আরম্ভ করেন, তাহলে শাড়ি ট্রাই করে দেখতে পারেন। চেহারায় ভালো একটা পরিবর্তন আসবে। শরীরের খামতিগুলো শাড়ির সাহায্যে অনয়াসেই লুকিয়ে ফেলা সম্ভব আকষর্ণীয় লুক বজায় রেখেই। শাড়ির সঙ্গে স্লিভলেস, ব্যাকলেস, হল্টার অথবা টি-নেক ব্লাউজ পরুন, আপনার স্টাইল স্টেটমেন্ট অনেকেরই ঈর্ষার কারণ হতে পারে। বিশেষ কোনও জায়গায় রয্যাল লুক ক্যারি করতে হলে বেছে নিন ডিজাইনার শাড়ি। শাড়ি কম পরা হলেও, এর এলিগ্যান্স-এর তুলনা হয় না।
স্কার্ট ট্রাই করুন
শর্ট স্কার্ট বা খুব লম্বা স্কার্ট নয়, হাঁটু অবধি বা হাঁটুর একটু নীচে অবধি স্কার্ট পরতেই পারেন। টি-শার্ট বা ক্রপ টপ-এর পরিবর্তে শর্ট, কুর্তির সঙ্গে পেয়ার করুন। এটি যথেষ্ট স্মার্ট ড্রেস। ডার্ক বা ব্রাইট শেড লং স্কার্টের সঙ্গে ম্যাট কালার এবং লাইট কালারের কুর্তি আপনাকে দেবে ব্যালেন্সড লুক।
জ্যাকেট অথবা কোট
জিনস অথবা স্কার্টের সঙ্গে টাইট ফিটিং টপ, টি-শার্ট যদি পরেন, উপরে পরে নিন জ্যাকেট বা কোট যাতে নিজেকে সফেস্টিকেটেড লুক দেওয়া যায়। যদি আউটফিট-টি ফুলস্লিভস হয়, তাহলে স্লিভলেস জ্যাকেট বা কোট আপনার সাজকে পারফেক্ট করে তুলবে।