বিয়েবাড়িতে যখন সকলেই নিজেকে সাজিয়ে তোলেন, তখন আপনি ভিড় থেকে আলাদা হওয়ার জন্য, কীভাবে মেক-আপ করবেন সেটা নিয়ে ইতিমধ্যেই ভাবনাচিন্তা শুরু করেছেন নিশ্চয়ই। যতই হোক Wedding party বলে কথা। আমরা তাই আপনাকে সাহায্য করতে এনেছি এই মেক-আপ গাইড।
টোনার, প্রাইমার, ফাউন্ডেশন, কনসিলার, হাইলাইটার, লিপস্টিক, কাজল, আইলাইনার এবং ব্লাশার—- মোটামুটি এই উপকরণগুলো লাগে পারফেক্ট মেক-আপ করার জন্য। আর মেক-আপ স্টে করানোর জন্য অবশ্যই প্রয়োজন ফিক্সার স্প্রে। আপনার মেক-আপ কিট-এর মধ্যে কালার কারেক্টর, ব্রোঞ্জার, আইশ্যাডো, ফেস পাউডারও রাখতে পারেন। তবে এগুলি হেভি মেক-আপ-এর ক্ষেত্রে জরুরি।
আসুন এবার জেনে নেওয়া যাক কিছু Wedding party basic make-up steps।
কেকি বা প্যাচ মেক–আপ
মেক-আপ ইনফ্লুয়েসার-রা প্রায়শই বলে থাকেন যে, মেক-আপ যেন সমান ভাবে মুখের ত্বকের উপর চারিয়ে দেওয়া হয়। তাই সবচেয়ে আগে আপনার নিজের মুখের খুঁত, দাগ-ছোপগুলি সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে। সেই অনুযায়ী দাগ বা খুঁতগুলি কারেক্ট করতে হবে। এর জন্য মুখের রোমছিদ্র ভালো ভাবে ঢেকে ফেলতে হবে এবং ত্বক যাতে টাইট থাকে সেই ব্যবস্থাও করতে হবে।
দাগছোপগুলো মেক-আপ কারেক্টর-এর সাহায্যে এমন ভাবে ব্লেন্ড করুন, যাতে গোটা মুখের বর্ণে একটা সামঞ্জস্য থাকে। এর ফলে স্কিন আর প্যাচি দেখাবে না।মেক-আপ প্রক্রিয়া শুরু করার আগে টোনার, ময়েশ্চারাইজার ও প্রাইমার লাগান। এর ফলে আপনার ত্বক একটা স্মুদ ক্যানভাসে পরিণত হবে। এর উপর আপনি খুব সহজেই মেক-আপ করতে পারবেন।
এখানে সবচেয়ে মনে রাখার বিষয়টা হল, যেদিন আপনি স্কিন এক্সফলিয়ে করবেন, সেদিন কোনওরককম মেক-আপ না করাই ভালো। এর ফলে মেক-আপ আপনার রোমছিদ্রে প্রবেশ করার ঝুঁকি থাকবে না। রোমছিদ্রে মেক-আপ ঢুকে যাওয়ার ফলে দুধরনের ক্ষতি হয়। এক, এটা আপনার ত্বকের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক।
দুই, স্কিন পোরস-এ মেক-আপ ঢুকে যাওয়ার ফলেই মুখ প্যাচি দেখতে লাগে। কনসিলার দিয়ে দাগছোপ ঢাকার পর ফাউন্ডেশন লাগান। প্রত্যেকবার ফাউন্ডেশন অ্যাপ্লাই করার সঙ্গে সঙ্গে এটা স্পঞ্জ দিয়ে ব্লেন্ড করতে থাকুন। ফাউন্ডেশনের রং যেন আপনার গায়ে রঙের সঙ্গে মেলে। এক শেড হালকা বা ডিপ না হওয়াই বাঞ্ছনীয়।
অতিরিক্ত ফাউন্ডেশন লাগাবেন না। এর ফলে মনে হবে আলাদা একটা লেয়ার তৈরি হয়েছে ত্বকের উপর। ততটুকুই লাগান, যতটা ত্বকে ব্লেন্ড হতে পারে। কনসিলার দিয়ে দাগ ঢাকার চেষ্টা করার পরও যদি বোঝেন যে, এক পরত ফাউন্ডেশন লাগানো যাবে তবেই লাগান। না হলে এই পরত যদি অতিরিক্ত মোটা হয়, কিছুক্ষণ পরেই মেক-আপ-এ ফাটল ধরবে এবং স্কিন প্যাচেস দৃশ্যমান হবে। ঘাম হলে তো আরও বিসদৃশ দেখাবে।
প্যাচি কনসিলার
সাধারণত মেক-আপ করার কিছুক্ষণ পর থেকেই চোখের নীচের অংশটায় প্যাচিনেস এসে পড়ে। লাইনস দেখা যায়। এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার সিক্রেট হল যখনই কনসিলার লাগাবেন, চোখের রেখার একটু নীচে থেকে লাগাবেন। এভাবে লাগানোর পর চোখের চারপাশের অংশটায় ব্লেন্ড করে দিন। এতে আই মেক-আপ স্মাজ হবে না। কেকি বা প্যাচি দেখাবে না।
এছাড়াও অন্য একটি পদ্ধতি হল ওয়াটার প্রুফ কনসিলার ও ফাউন্ডেশন লাগানো, যা জল বা ঘামে স্মাজ হয়ে যাবে না। মেক-আপ হয়ে যাওয়ার পর, আপনার মুখের যে-যে অংশ বেশি ঘামে, সেখানে কমপ্যাক্ট পাউডারের একটা পরত বুলিয়ে নিন।
আইশ্যাডো ও আউট ফিট
অনেক মহিলাই আজকাল ডিজাইনার ওয়্যার-এর সঙ্গে স্মোকি আই মেক-আপ করেন। কিন্তু এটা আদতে গোটা লুকটা-কেই ম্যাড়মেড়ে করে দেয়।
অনেকে আবার আউটফিট-এর সঙ্গে মানানসই আইশ্যাডো ব্যবহার করেন না। এটা লুক-কে ব্লান্ডার-এ পরিণত করে। মেক-আপ কালার প্যালেট থেকে রং বাছুন বিচক্ষণতার সঙ্গে। আই মেক-আপ করার সময় এমন কালার বাছুন যা আপনার পোশাকটিকে কমপ্লিমেন্ট করবে।
আই মেক–আপ–এর সহজ টিপস
কনসিলার আর ফাউন্ডেশন চোখ বন্ধ অবস্থায় চোখ ও ভ্রু-এর নীচের অংশে লাগান। এই অংশের টোন উজ্জ্বল হলে আপনার আইশ্যাডো সুন্দর ভাবে ফুটে উঠবে। চোখ ও এর আশপাশের ত্বকে যেহেতু কালচে ভাব থাকে, তাই ফাউন্ডেশনের সাহায্যে এর টোন হালকা করা প্রয়োজন। কিন্তু এই রং যেন আপনার স্কিন টোনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে হয়।
আইশ্যাডোর সঠিক শেড বাছাই করুন। যদি একাধিক রং ব্যবহার করতে চান তাহলে খেয়াল রাখুন সেগুলি যেন ভালো ভাবে ব্লেন্ড হয়। রঙের ব্লেন্ডিংটা কিন্তু এক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আইশ্যাডো লাগানোর সময় খেয়াল রাখুন, যাতে সেটা চোখের কোনা পর্যন্ত যায়। না হলে দেখতে খুব বিশ্রী লাগবে। চোখের লাইনারের শেষ অংশটায় এমন ভাবে রেখা টানুন যা আপনার মুখের শেপ-এর সঙ্গে মানানসই।যদি চোখের নীচের অংশে রঙিন কাজল দিতে চান, তাহলে খেয়াল রাখুন যেন সেই রং আপনার পোশাকের সঙ্গে ম্যাচ করে।