মেয়েরা এখন আর বাড়িতে বসে শুধু রান্নাবান্না করে না, বিশ্বজয়ের লক্ষ্যে এগোতে চায়। তাই উচ্চশিক্ষা নিয়ে নিজের কেরিয়ার মজবুত করতে তারা সদা সচেষ্ট। আর এই লক্ষ্যপূরণের জন্য ছোটো শহর কিংবা গ্রাম থেকে দিল্লি, হায়দরাবাদ, বেঙ্গালুরু, গুজরাত, মুম্বই কিংবা কলকাতা-র মতো মেট্রোসিটি-তে এসে বসবাস করছে। অবশ্য শুধু ছোটো শহর বা গ্রাম থেকে-ই নয়, এক বড়ো শহর থেকে অন্য বড়ো শহরেও পাড়ি দিচ্ছে। শুধু তাই নয়, ভারতবর্ষের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করছে। আর এর জন্য যা সবার প্রথমে দরকার, তা হল-থাকার জায়গা। যেহেতু আলাদা ভাবে বাড়ি ভাড়া করা কিংবা ফ্ল্যাট ভাড়া নেওয়া ব্যয়বহুল, তাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পিজি-তে থাকার ঝোঁক দেখা যায়।

অজানা আশঙ্কা

অন্য শহরে লেখাপড়া কিংবা কর্মসূত্রে আসার আগে অনেক কৌতূহল, প্রশ্ন এবং আশঙ্কা থাকে মনের মধ্যে। যেমন— কোথায়, কীভাবে পিজি-র সন্ধান পাব, কেমন হবে সেই বাসস্থানের পরিবেশ, পিজি-র মালিক বা মালকিনের ব্যবহার কেমন হবে, পিজি-র অন্য সদস্যরা কেমন হবে, সবকিছু মানিয়ে নিতে পারব তো, অন্য কোনও সমস্যায় পড়ব না-তো, প্রভৃতি প্রশ্ন এবং আশঙ্কা মাথার মধ্যে ঘুরপাক খেতে থাকে। এইসব প্রশ্ন মনের মধ্যে থাকাটাও স্বাভাবিক এবং প্রশ্ন কিংবা কৌতূহল থাকলেই আগেভাগে সতর্কতার সঙ্গে সবকিছু ব্যবস্থা করা যায়। এবার জেনে নিন কী ধরনের ভয় থাকে মনে কিংবা কী ধরনের সমস্যা হতে পারে। শুধু তাই নয়, এই সমস্যাগুলো থেকে কীভাবে মুক্তি পাবেন, জেনে নিন সেই বিষয়েও।

কিছু সাধারণ সমস্যা বা ভয়

পিজি মানেই বেশ কয়েকজন একসঙ্গে থাকতে হবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু পিজি-র অন্য সদস্যরা কেমন হবে, সেই বিষয়ে একটা ভয় কাজ করে মনের মধ্যে। সবাই যে একরকম হবে না, এটাই স্বাভাবিক। অনেক সময় পিজি-র কেউ কেউ ভালো বন্ধু যেমন হয়ে ওঠে, ঠিক তেমন-ই কাউকে আবার মানিয়ে নিতে সমস্যা হয়। কারণ অনেকে বদমেজাজি হয়, কারও-র অতিরিক্ত কৌতূহল থাকে অন্যের বিষয়ে, কেউ আবার অন্যকে ব্যঙ্গ করে, কেউ আবার বেশি কথা বলে অন্যকে বিরক্ত করে ইত্যাদি৷

শুধু তাই নয়, অনেকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকে না, ঘরদোর নোংরা করে রাখে, বাথরুমে ঠিকমতো হাইজিন মেনটেইন করে না। আবার এমন অনেকে আছে, যারা অন্যের অসুবিধার কথা না ভেবে বিরক্তিকর কিছু কাজ করে। যেমন—টিভির সাউন্ড বাড়িয়ে টিভি দেখা, জোরেজোরে কথা বলা কিংবা অনেক রাত পর্যন্ত মোবাইল ফোনে কথা বলা ইত্যাদি। আর এইসব বদভ্যাসগুলো যে বা যারা মানিয়ে নিতে পারবে না, তাদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা এমনকী ঝগড়া বা মারামারির ঘটনা পর্যন্ত ঘটে।

এ ছাড়া এমন কিছু কাজ থাকে, যা অনেকসময় সবাইকে ভাগাভাগি করে করতে হয়। যেমন— রান্নার লোক না এলে কিংবা ঘরদোর পরিষ্কার করার লোক না এলে নিজেদের-ই সেই সমস্ত কাজ ভাগাভাগি করে করতে হয়। কিন্তু কেউ কেউ সাময়িক সেই সমস্যা সমাধানের কাজটাও করতে চায় না। কিংবা ধরুন রাতে ঠিক সময়ে আলো নিভিয়ে দেওয়া, দরজা বন্ধ করা ইত্যাদি কাজগুলোও দায়িত্ব সহকারে সবাই না করলেই সমস্যা।

অনেকে আবার গভীর রাতে ফেরে, সেই সময় ঘুম থেকে উঠে দরজা খুলে দেওয়ার বিষয়টিও বেশ বিরক্তিকর। এক-দুদিন এসব মানিয়ে নেওয়া যায় কিন্তু প্রতিদিন কিংবা প্রায়ই এরকম ঘটতে থাকলে তা মানিয়ে নেওয়া খুবই মুশকিল। এছাড়া আরও একটি সমস্যা দেখা দেয় যেমন— কাজের লোক, রান্নার লোক কিংবা পানীয় জলের ভাগের টাকা ঠিক সময়ে না দেওয়া। টাকা থাকলেও অনেকে স্বভাববশত এটা করে।

অনেকের আবার এমন স্বভাব আছে যে, অনুমতি না নিয়ে অন্যের জিনিসপত্রে হাত দেয়। শুধু তাই নয়, কেউ কেউ আবার অন্যের সাজগোজের জিনিস এমনকী, টাকাপয়সাও চুরি করে নেয়। আর এই সমস্ত সমস্যাগুলো ঠান্ডা মাথায় যারা ওভারকাম করতে পারেন না, তারা অসুবিধেয় পড়েন।

( ক্রমশ…)

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...