তিনটি ছোটো গল্পকে এক সুতোয় গেঁথে একটি হিন্দি ছবি উপহার দিতে চলেছেন পরিচালক শুভ্র রায়। ছবির নাম—‘ফ্লাওয়ার্স অফ দ্য মাউন্টেন’। নাম থেকেই আন্দাজ করা যায়, পাহাড়ি প্রকৃতি প্রাধান্য পেয়েছে এই ছবিতে। তবে শুধু পাহাড়ি প্রকৃতি-ই নয়, জানা গেছে, প্রকৃতি এবং প্রেমের সঙ্গে শিল্প মিলেমিশে একাকার হয়ে এ ছবি নাকি এমন এক মাত্রা পেয়েছে, যা দর্শকচিত্ত জয় করে নেবেই। পরিচালক শুভ্র রায় অন্তত এমন্টাই মনে করেন। তাঁর মতে, ‘প্রেম এবং শিল্প প্রতিদিন নতুন জন্ম দেয়, অন্যরকম ভাবে বাঁচার রসদ জোগায়।’

তিন বছর আগে ‘ঘুণ’ শীর্ষক একটি ছবি পরিচালনা করেছিলেন শুভ্র রায়। সেই ‘ঘুণ’ ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্রে রুপদান করেছিলেন সমদর্শী দত্ত এবং সৌরভ দাস। যাইহোক, তিন বছর বাদে শুভ্র এবার দর্শকদের উপহার দিতে চলেছেন ‘ফ্লাওয়ার্স অফ দ্য মাউন্টেন’ শীর্ষক এই হিন্দি ছবিটি।

‘ফ্লাওয়ার্স অফ দ্য মাউন্টেন’ ছবির প্রচার উপলক্ষ্যে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত, ‘ফিল্ম মেকিং হল নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ।’ এই উক্তির স্রষ্টা রবার্ট অল্টম্যানের ভাবধারায় পরিচালক শুভ্র রায়ও যে বিশ্বাসী, তা তিনি স্পষ্ট করেছেন। সেইসঙ্গে শুভ্র আরও জানিয়েছেন, ‘আমি মনে করি প্রেম এবং শিল্প আমাদের প্রতিদিন নতুন জন্ম দেয়, জীবনকে ভিন্নভাবে দেখার সুযোগ দেয়। এই পৃথিবী এক মায়ার জগত ছাড়া আর কিছুই নয়। আজ আমরা এখানে আছি কিন্তু একদিন আমরা সেখানে ফিরে যাব যেখান থেকে আমরা এখানে এসেছি। কিন্তু আমি মনে করি, প্রেম এবং শিল্প এমন জিনিস যা চিরন্তন, যা অন্তহীন। আমি জীবনকে ভিন্নভাবে দেখি এবং আমি এটাও বিশ্বাস করি যে, শুধু সিনেমাতেই নয়, আমাদের সকলেরই আমাদের এক জীবনে বহু জীবন চলার সুযোগ আছে। আর তা করার জন্য আমাদের যা করতে হবে তা হল–ভিন্নভাবে চিন্তা করা। এটাই আমি আমার সিনেমায় মানুষকে দেখাতে চাই। মানুষ আমার সিনেমা উপভোগ করবে এবং তারা অনুপ্রাণিত হবে, এটাই আমার লক্ষ্য। তিনটি ছোটো গল্পের উপর ভিত্তি করে তৈরি ‘ফ্লাওয়ার্স অফ দ্য মাউন্টেন’। এই তিনটি ছোটোগল্প বিভিন্ন শিল্প, চিত্রকলা, অভিনয়, গান এবং নৃত্যের উপর ভিত্তি করে তৈরি। প্রথম গল্পটি একজন চিত্রকরের এবং প্রকৃতিতে তার ভালোবাসা এবং সৃজনশীলতা খুঁজে পাওয়ার জন্য সফর। দ্বিতীয় গল্পটি একজন অভিনেতা এবং তার প্রিয়জনের একটি সুন্দর প্রেমের গল্প, যা আমাদের দেখায় যে, প্রেম এবং শিল্প এই 3D জগতের বাইরে, এমনকি মৃত্যুরও ঊর্ধ্বে। তৃতীয় গল্পটি একটি মেয়ের সুন্দর গল্প বলে, যে একটি ছোটো  পাহাড়ি এলাকায় থাকে। তার স্বপ্ন নৃত্যশিল্পী হওয়ার। কিন্তু আকস্মিক দুর্ঘটনার পর সে আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলে। তারপরে এক রাতে তার স্বপ্নে একটি ছেলের সঙ্গে দেখা হয় এবং যে তাকে বিশ্বাস করায় যে, ভালোবাসা, যত্ন এবং ইচ্ছাশক্তি দিয়ে যে কোনও কিছু অর্জন করতে পারা যায়, তার শারীরিক অবস্থা যাই হোক না কেন। সর্বোপরি, প্রেম এবং শিল্পের একটি অনুপ্রেরণামূলক চলচ্চিত্র ‘ফ্লাওয়ার্স অফ দ্য মাউন্টেন’। আমি আশা করি, দর্শকরা এই সিনেমাটি পছন্দ করবেন এবং তারা প্রেম এবং শিল্পের নতুন অর্থ খুঁজে পাবেন।’

‘ফ্লাওয়ার্স অফ দ্য মাউন্টেন’ ছবির বিভিন্ন চরিত্রে রুপদান করেছেন সুব্রত দত্ত, জয়া শীল ঘোষ, দেবাশিস মণ্ডল, দিগন্ত সাহা, পায়েল মুখোপাধ্যায়, কৌশিকী চক্রবর্তী, শ্রেয়সী রায় বন্দ্যোপাধ্যায়, দেবার্ঘ্য মজুমদার, রঞ্জন দাস, পায়েল চৌধুরি, শুভায়ন রায়, নীলাঞ্জনা বিশ্বাস, তানিশা রায়, স্বপন রায় প্রমুখ।ছবিটির কাহিনি এবং চিত্রনাট্য লিখেছেন শুভ্র রায় ও মৌপর্ণা দত্ত। ডিওপি এবং কালারিস্ট স্মৃতি। প্রোডাকশন ডিজাইন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েট ডিরেক্টর: শক্তি ধর বীর।  সৃজনশীল পরিচালক দেবরাজ তালুকদার। কার্যনির্বাহী প্রযোজক পায়েল চৌধুরি। সম্পাদক রবি রঞ্জন মৈত্র। সঙ্গীত পরিচালক বিক্রম ঘোষ। সাউন্ড ডিজাইনার অয়ন ভট্টাচার্য। কস্টিউম ডিজাইনার নূপুর রায়। প্রধান সহকারী পরিচালক শুভজিৎ হালদার। সহকারী পরিচালক রঞ্জন দাস, সলমন পল, স্নেহা সরকার, কিরণ মজুমদার এবং দীপু তাঁতি। চিত্রনাট্যের হিন্দি অনুবাদক এবং তত্ত্বাবধায়ক রিয়া দাস। মেক-আপে এএডি কস্টা।

‘ফ্লাওয়ার্স অফ দ্য মাউন্টেন’ ছবির প্রযোজক ‘দ্য নেক্সট আইডিয়াশন এন্টারটেইনমেন্ট’। ছবিটির নিবেদক অধ্যাপক রঞ্জন দাস। ছবিটির মুক্তি প্রসঙ্গে জানানো হয়েছে, বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে আগে পাঠানো হবে, তারপর বানিজ্যিক মুক্তির কথা ভাবা হবে।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...