উজ্জ্বল ও ঝলমলে শরীর কে না চায়, কিন্তু পরিবর্তিত আবহাওয়ার সঙ্গে শরীর দ্রুত নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে না, যার কারণে ত্বক কখনও শুষ্ক, তৈলাক্ত, প্রাণহীন হয়ে পড়ে আবার ট্যানিং-এর সমস্যাও দেখা দেয় ত্বকে।
গ্রীষ্মকালে পুরো শরীরের রং এক রকম হয় না। ত্বকের কোথাও কালো প্যাচেস তৈরি হয়, কোথাও ত্বকে রোদে ট্যানিং হয়ে যায়। দীর্ঘ সময় এসি-তে বসে থাকলে ত্বকের ময়েশ্চারাইজার কমে যায়, যা ত্বককে শুষ্ক করে তোলে। এমন পরিস্থিতিতে বডি পলিশিং করে ত্বকের ঔজ্জ্বল্য ফিরে পাওয়া যায়। আসুন জেনে নেওয়া যাক Body Polishing সম্পর্কে বিস্তারিত:
কী কী ব্যবহার করা হয়
Body Polishing করার ক্ষেত্রে পুরো শরীর পলিশ করা হয়। এর জন্য বিশেষ উপাদান ব্যবহার করা হয়, যেমন বডি ক্রিম, বডি অয়েল, বডি সল্ট, বাম, বডি প্যাক, এক্সফলিয়েশন ক্রিম ইত্যাদি।
বডি স্ক্রাবও পলিশ করার একটি অংশ। এটি ত্বকের ছিদ্রগুলির ময়লাও পরিষ্কার করে। ফলের তেল, ফলের বীজের টুকরো বা ওটমিল দিয়ে তৈরি স্ক্রাব ত্বকের রং উন্নত করতে সহায়ক।
এগুলি ছাড়াও কিছু বিশেষ ফুলের রস শরীরে প্রয়োগ করা হয়। ফুলের রসে অর্কিড ফুলের রস, বিশেষভাবে ব্যবহৃত হয়। এটি শরীরের উপর ওষুধ হিসাবে কাজ করে, কারণ এটি ব্রণ, ফুসকুড়ি ইত্যাদি নিরাময় করে। এটি একটি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক চিকিৎসা, তাই এটি শরীরের উপর কোনও বিরূপ প্রভাব ফেলে না।
পলিশ করার প্রক্রিয়া
বডি পলিশ করার সময় প্রথমে শরীরের স্বাভাবিক ক্লিনজিং করা হয়। এরপর পুরো শরীর স্ক্রাব করা হয়। এই স্ক্রাবটি মুখে ব্যবহৃত স্ক্রাব থেকে নরম হয় এবং খুব হালকা হাত দিয়ে শরীরের উপর লাগানো হয়। এটি শরীরের মৃত চামড়া দূর করে শরীর পরিষ্কার করে। এর পরে স্টিমার দিয়ে স্টিম দেওয়া হয়। স্টিম করার পর, লেবু বা সবজির রস, পেঁপে, টমেটো, কমলালেবু ইত্যাদি দিয়ে শরীরে মাসাজ করা হয়।
তারপর আল্ট্রাসনিক মেশিনের মাধ্যমে ত্বকে ভিটামিন ও পুষ্টি সরবরাহ করা হয়। এই প্রক্রিয়ার পর অয়েল ক্রিম দিয়ে মাসাজ করলে শরীর মসৃণ হয় এবং ব্যক্তি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। যেহেতু ক্লিনজিং, স্ক্রাবিং ও মাসাজ করলে শরীরের রোমছিদ্রগুলো খুলে যায়, তাই পুরো শরীরে একটি প্যাক লাগিয়ে ফয়েল পেপার দিয়ে মুড়ে তার উপরে গরম জলে ভিজিয়ে রাখা তোয়ালে দিয়ে ঢেকে রাখা হয়। ২০ মিনিটের জন্য শরীর এভাবেই রেখে দেওয়া হয়। এর পরে, শরীর পরিষ্কার করে এসপিএফ ক্রিম প্রয়োগ করা হয়। এই পুরো প্রক্রিয়াটি করতে ২ থেকে ৩ ঘন্টা সময় লাগে।
পলিশিং-এর ধরন
ব্রাউন সুগার এবং জোজোবা তেল: ব্রাউন সুগার এবং জোজোবা অয়েলের সমান পরিমাণে ভিটামিন ই ক্যাপসুল মিশিয়ে তৈরি মিশ্রণ দিয়ে পালিশ করলে ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা বজায় থাকে।
স্ট্রবেরি এবং চিনি
স্ট্রবেরি এবং সুগার স্ক্রাব, যাতে একই পরিমাণে অলিভ অয়েল থাকে, শরীরে ব্যবহার করা হয়। বেকিং সোডা এবং অ্যালোভেরা
বেকিং সোডা এবং অ্যালোভেরা বডি পলিশিংয়ের জন্যও ব্যবহৃত হয়। বেকিং সোডা ব্রণ এবং ফুসকুড়ি দূর করতে সাহায্য করে, অ্যালোভেরা শরীরের প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজিং হিসাবে কাজ করে।
ভেষজ
এর জন্য প্রস্তুত পলিশিং উপাদানে, রোজমেরি, ল্যাভেন্ডার বা ত্বকের ধরন অনুযায়ী ভেষজ তেল মেশানো হয়ে থাকে। এতে শরীর যেমন সতেজ থাকে, ভেষজ তেলের প্রাকৃতিক সুগন্ধ মনে এক মনোরম অনুভূতিও এনে দেয়।
পলিশ করার উপকারিতা
Body Polishing–এর সুবিধাগুলি হল:
বডি পলিশ করলে ত্বকের প্রথম পরত অর্থাৎ মৃত কোশ দূর হয়।
ক্রিমটি ত্বকের দ্বিতীয় স্তরে পৌঁছিয়ে দেওয়া হয় যাতে শরীর সঠিক পুষ্টি পেতে পারে।
চাপের মধ্যে থাকলে স্ত্রেস কমাতে সহায়তা করবে।
পুরো শরীরের রঙের হেরফের হবে না।
শরীর পরিষ্কার হয়ে যায় এবং শরীরের ঔজ্জ্বল্যও বাড়বে।
সতর্কতা
বডি পলিশ করানোর পর কিছু জিনিসের যত্ন নেওয়া খুবই জরুরি :
২-৩ দিন রোদে বের হবেন না। প্রয়োজনে পুরো শরীর ঢেকে রাখুন।
সানবার্ন বা অন্য কোনও কারণে শরীরে পোড়া বা আঘাতের তাজা চিহ্ন থাকলে পলিশ করবেন না।
প্রায় ২০ মিনিট পলিশ হয়ে যাওয়ার পরে, আপনি সাধারণ জল দিয়ে স্নান করতে পারেন, এটি পলিশ করার সময় শরীরে লেগে থাক অবশিষ্ট পদার্থগুলি পরিষ্কার করে।