পায়ের যত্নে পেডিকিয়োর করেন প্রায় সকলেই। সৌন্দর্য চর্চার একটা গুরুত্বপূর্ণ আংশ হল পেডিকিয়োর। কেউ নিয়মিত করায় আবার কেউ কেউ সৌন্দর্য বাড়াতে উৎসবের আগে সৌন্দর্য চর্চায় মন দেন। ১৫ দিনে সাধারণত একবার Pedicure করানো উচিত। মনে রাখতে হবে নারীর সৌন্দর্য কিন্তু ফুটে ওঠে তার পায়ের থেকেই। পায়ের যত্ন নিলে যেমন শরীরও আপনার চনমনে থাকবে তেমনি পা সুন্দর লাগবে দেখতে সেটা আপনি শর্ট ড্রেস-ই পরুন কিংবা অন্য কোনও পোশাক। এতে গোড়ালির ফাটা সমস্যা দূর হয়, পায়ের ক্লান্তি দূর হয়ে ত্বকের মৃত কোশও দূর করতে সাহায্য করে। নখ কালো বা হলুদ হয়ে গেলেও নখের স্বাভাবিক রং ফিরে পেতেও পেডিকিয়োর করানো অত্যন্ত জরুরি। কোমল মসৃণ সুন্দর পায়ের জন্য মহিলারা নানা ধরনের ক্রিম, প্যাক, সানস্ক্রিন ব্যবহার করেন, অনেকেই বিউটি পার্লারে যান। কিন্তু পার্লারে যাওয়া মানেই সময় এবং অর্থের অপচয়। তার থেকে বাড়িতেই যদি পেডিকিয়োর করে নেওয়া যায় তাহলে সময়ও নষ্ট হয় না আর অর্থেরও সাশ্রয় হয়। বিশেষ করে যে-কোনও উৎসবের আগে অবশ্যই পেডিকিয়োর করানোটা জরুরি।

পেডিকিয়োর

সারাদিন আমাদের দৌড়ঝাঁপ করে অনেক কাজ করতে হয়, বাড়ির বাইরে বেরোতে হয়, যার ফলে আমাদের পা নোংরা হয় সবথেকে বেশি। নোংরা পায়ে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হয় সব থেকে বেশি। সুতরাং পায়ের যত্ন নেওয়া আমাদের দায়িত্ব। পরিষ্কার নরম পা শরীরের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেয়। পায়ের যত্ন নেওয়ার সবথেকে ভালো উপায় হল পেডিকিয়োর। এতে পায়ের নোংরা দূর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পায়ের সৌন্দর্যও বৃদ্ধি পায়।

পেডিকিয়োর-এর উপকারিতা: পেডিকিয়োর পায়ের ত্বকে এক্সফলিয়েশন-এর কাজ করে। বিশেষ করে গোড়ালির ডেড স্কিন খুব সহজে বের হয়ে যায়। একইসঙ্গে নখের পলিশিং-এরও কাজ করে। গোড়ালি ফেটে যাওয়া এবং ত্বকের শুষ্কতায়ও Pedicure খুবই কার্যকরী। ফাটা পা সারিয়ে তুলতে এবং শুষ্ক ত্বক থেকে মৃত কোশ দূর করে এটি পা-কে আরাম প্রদান করে।

পেডিকিয়োরে মাসাজও অন্তর্ভুক্ত। মাসাজের কারণে পায়ের তলা এবং গোড়ালির আরাম হয়। ফুট মাসাজের কারণে রক্তচলাচলও উন্নত হয়।

বাড়িতে কীভাবে করবেন Pedicure

বাড়িতে পেডিকিয়োর করতে যা যা সামগ্রী দরকার: একটা বড়ো টাব-এ হালকা গরম জল, ফুট স্ক্রাব, নেল ক্লিপার, কিউটিকল পুশার, নেল ফাইলার, পিউমিক স্টোন/ ফুট ফাইল, নেল স্ক্রাবার, নেলপলিশ রিমুভার, কিউটিকল ক্রিম, পরিষ্কার তোয়ালে, ময়েশ্চারাইজার, কটন প্যাড, মধু, ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম, লেবুর টুকরো।

নখ ট্রিম এবং ফাইল করুন: নখ পরিষ্কার করে বেড়ে যাওয়া নখ নেলকাটার দিয়ে কেটে ফেলুন। পছন্দমতন নখকে আকার দেওয়ার পর নেল ফাইলার দিয়ে ধীরে ধীরে নখ-কে ফাইল করে সুন্দর শেপ দিন।

পা জলে ডুবিয়ে রাখুন: নখ কাটার পর পা-কে আরাম দেওয়ার জন্য হালকা গরমজলে পা ডুবিয়ে রাখুন। একটি বড়ো টাব-এ হালকা গরম জল ভরে সামান্য লবণ বা মাইল্ড ক্লিনজার দিয়ে দিন, এতে পা আরাম পাবে। পা ফোলা, পায়ে জ্বালা করা সব কমে যাবে। এই জলের মধ্যে লেবুর রস অথবা এসেনশিয়াল অয়েলও কয়েক ফোঁটা মিশিয়ে নিতে পারেন। এগুলি অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি ফাংগাল গুণে সমৃদ্ধ। গরমজলে পা ডুবিয়ে রাখলে পা যেমন আরাম উপলব্ধি করবে তেমনি রক্তচলাচলও উন্নত হবে। গরমজলে অন্ততপক্ষে ১৫ মিনিট পা ডুবিয়ে রেখে শুকনো তোয়ালে দিয়ে মুছে ফেলুন।

পা স্ক্রাব করুন: পা ভলো করে শুকিয়ে গেলে নখে কিউটিকল ক্রিম লাগান এবং কিছুক্ষণ ধীরে ধীরে মাসাজ করুন। যখন ডেড স্কিন নরম হয়ে আসবে তখন কিউটিকল পুশারের সাহায্যে কিউটিকল্স সরিয়ে পরিষ্কার করে নিন। ত্বকের ডেড স্কিন তুলতে ফুট স্ক্রাবার ব্যবহার করুন। কমকরে ৫ মিনিট গোড়ালি, পায়ের পাতা, পায়ের আঙুল এবং পায়ের উপরের অংশ ধীরে ধীরে স্ক্রাব করুন।

ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন: এই পর্যায়ে পা সম্পূর্ণ পরিষ্কার হয়ে যাওয়ার পর দরকার পা-কে ময়েশ্চারাইজ করা। পায়ে ময়েশ্চারাইজার লাগাবার আগে অন্তত ১০ মিনিট পায়ের নখ, গোড়ালি ভালো করে মাসাজ করুন। অলিভ অয়েল দিয়ে পা মাসাজ করলেও সেটা ময়েশ্চারাইজারের কাজ করবে।

 

 

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...