শীতকালে শিশুর কীভাবে যত্ন নিতে পারবেন তারই কিছু টিপ্স এখানে দেওয়া হল –
বাচ্চাকে স্ট্রং করতে মালিশ দরকার
মালিশের জন্য দরকার সঠিক তেলের চয়ন। সাধারণত শীতকালে সরষের তেল দিয়ে বাচ্চার মালিশ করা হয়। কিন্তু অলিভ অয়েলও বাচ্চার মাসাজের জন্য উপকারী কারণ এতে আছে ভিটামিন ই-এর সমস্ত গুণ, যা শরীরকে মজবুত করার সঙ্গে সঙ্গে ত্বকও রাখে হেলদি। ডায়াপার ব্যবহারের ফলে বাচ্চার ত্বকে জ্বালা এবং ফুসকুড়ি কম করতেও এই তেল সাহায্য করে কারণ এতে অ্যান্টি ইনফ্লেমেটারি এবং অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল উপাদান মজুত আছে।
এশিয়ান জার্নাল দ্বারা একটি সমীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে মাসাজ করলে বাচ্চার পেরেন্টদের সঙ্গে একটা বন্ডিং তৈরি হয় এবং তাদের স্পর্শের সঙ্গেও বাচ্চা পরিচিত হয়।
টিপ্স: খেয়াল রাখতে হবে মাসাজ করার সময় বাচ্চার ঘর যাতে ওয়ার্ম থাকে। এর ফলে কমফর্ট জোন-এ আরাম করে শিশুকে মাসাজ করা যাবে। বাচ্চাকে স্নান করানোর আগে মাসাজ করলে বডি ওয়ার্ম থাকে। হালকা ভাবে বাচ্চার মালিশ করা উচিত। দুধ খাওয়ানোর ঠিক পরেই মাসাজ করাটা বাঞ্ছনীয় নয়, এতে বাচ্চার বমি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
নবজাতকের ময়েশ্চারাইজার
কসমেটোলজিস্ট-এর মতে শিশুর ত্বক অত্যন্ত স্পর্শকাতর। শিশুর ত্বকে কোনওরকম প্রোডাক্ট লাগানো উচিত নয় কারণ তাতে জ্বালা, ফুসকুড়ি, চুলকানি ইত্যাদির সমস্যা হতে পারে। স্পর্শকাতর ত্বকের সঙ্গে ঠান্ডা হাওয়া শিশুর ত্বককে ড্রাই করে তোলে। এইসময় বাচ্চার ত্বকে আমন্ড অয়েল বা অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে পারেন ত্বক ময়েশ্চারাইজ করতে। এতে থাকা ভিটামিন ই-এর গুণাগুণ বাচ্চার ত্বক মোলায়েম এবং কোমল রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও কোকো বাটার, শিয়া বাটার যুক্ত ময়েশ্চারাইজারও বাছতে পারেন। কারণ এগুলি বাচ্চার ত্বকের জন্য খুবই কোমল হয়।
শিশুর ময়েশ্চারাইজার হওয়া উচিত সুগন্ধী, রং এবং কোনওরকম রাসায়নিক ছাড়া। বাচ্চার ত্বকের ধরন বুঝে ময়েশ্চরাইজার বাছা উচিত।
ব্রেস্টফিডিং
বাচ্চা জন্মানোর সঙ্গে সঙ্গে তার ইমিউন সিস্টেম বিকশিত হওয়া শুরু হয়ে যায়, যার ফলে নিঃশ্বাস সংক্রান্ত অসুস্থতার সঙ্গে ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস দ্বারা সংক্রামিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এই সমস্যা শীতকালে বৃদ্ধি পায়। এইসময় বাচ্চাকে ওয়ার্ম রাখতে এবং অসুখ থেকে সুরক্ষিত রাখতে বাচ্চার প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে তোলাটা একান্ত দরকার হয়ে পড়ে। এই ক্ষেত্রে ব্রেস্টফিড করানোর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। মায়ের দুধে সবরকম নিউট্রিয়েন্টস থাকার সঙ্গে সঙ্গে অ্যান্টিবডিজ-ও থাকে, যা বাচ্চার Immune System বাড়িয়ে বাচ্চাকে অসুস্থতা থেকে সুরক্ষিত রাখতেও সাহায্য করে।
রোজ স্নানের প্রয়োজন নেই
শীতকালে বাচ্চার দেখাশোনা করাটা একটা চ্যালেঞ্জ। নতুন যারা মা হয়েছেন তারা ভেবে পান না বাচ্চাকে রোজ স্নান করানো উচিত হবে কিনা বিশেষ করে শীতকালে। খুব ঠান্ডায় বাচ্চাকে রোজ স্নান করানোর দরকার পড়ে না। সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার স্নান করালেই যথেষ্ট এবং সেটাও করা উচিত যখন বাইরে ভালো রোদের তেজ রয়েছে। কারণ স্নানের পরেই বাইরের স্বাভাবিক গরমে বাচ্চাকে ওয়ার্ম রাখা জরুরি।
রোজ স্নান করার বদলে হালকা গরমজলে বাচ্চার হাত-পা, ঘাড়, গলা, মুখ এবং শরীরের পিছনের নীচের অংশ ভালো করে পরিষ্কার করে দিন। এতে বাচ্চাকে পরিষ্কার রাখাও হবে আবার ঠান্ডা থেকেও তাকে সুরক্ষিত রাখা যাবে।
ভিটামিন ‘ডি’-এর প্রয়োজনীয়তা
আলাদা করে ভিটামিন ‘ডি’ খাওয়ানোর কোনও প্রয়োজন নেই। সূর্যের রশ্মিতে থাকা ভিটামিন ডি বাচ্চার হাড় স্ট্রং করার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে। বাচ্চাকে স্নান করিয়ে রোদে অবশ্যই তাকে কিছুক্ষণ রাখুন। এতে সূর্যের তাপ যেমন বাচ্চার শরীরে লাগবে তেমনি বাচ্চা জীবাণুমুক্ত হতে পারবে।