শুধু শিক্ষাক্ষেত্র, কর্মক্ষেত্র কিংবা রাজনৈতিক ক্ষেত্রেই নয়, সমাজ, সংসার এমনকি বাজারে কেনাকাটা করতে গিয়েও সচেতন থাকা জরুরি। কারণ, আপনি সচেতন না থাকলে অসাধু লোকেরা আপনাকে ঠকাতে বিন্দুমাত্র সময় নষ্ট করবে না। এই যেমন রান্নায় স্বাদের বিষয়টি নিয়ে যদি চিন্তা করেন, তাহলে দেখবেন, বিশুদ্ধ তেল-মশলা দিয়ে কোনও কিছু যদি রান্না করেন, তাহলে সেই রান্না স্বাদে-গন্ধে হবে অতুলনীয়। কিন্তু যদি রান্নার উপকরণে ভেজাল থাকে, তাহলে সেই রান্না যেমন বিস্বাদ হবে, ঠিক তেমনই তা স্বাস্থ্যের পক্ষেও হবে ক্ষতিকারক।
চলতি বছরে ভারতের উত্তর ও পূর্বের প্রধান সর্ষের তেলের বাজার জুড়ে ‘ঝাঁঝ কি জানচ’ শীর্ষক সর্ষের তেলের তীব্রতা সচেতনতা বিষয়ক সমীক্ষা করেছে এনএফএক্স ডিজিটাল নামে একটি সংস্থা। ওই স্বাধীন সমীক্ষা`য় গ্রাহকদের মধ্যে তাদের ব্যবহার করা সর্ষের তেল সম্পর্কে অজ্ঞতা বিস্ময়কর ভাবে উঠে এসেছে। প্রায় ৮৫ শতাংশ উত্তরদাতারা তাদের রান্নায় ব্যবহৃৎ সর্ষের তেলের গুণাগুণ সম্পর্কে একদমই অবগত নন।
এই সমীক্ষার লক্ষ্য ছিল, সর্ষের তেলের তীব্রতা বা ঝাঁঝের স্তর সম্পর্কিত বিষয়ে কনজিউমারদের মধ্যে সচেতনতা, উপলব্ধি এবং নিজেদের পছন্দ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে, কনজিউমাররা নির্দিষ্ট স্বাদ এবং সুগন্ধের জন্য সর্ষের তেল ব্যবহার করার ক্ষেত্রে প্রাথমিক কারণ হিসেবে তেলের ‘তীব্রতা’ বা ঝাঁঝ এবং স্বাদ-এর খোঁজ করেন। উত্তরদাতারা স্বীকার করেছেন যে, সর্ষের তেলের তীব্রতা তেলের মধ্যে একটি জোরালো ঘ্রান ও সুবাস প্রদান করে, যা তাদের রান্নার একটি অপরিহার্য উপাদান।
৭৫ শতাংশ ব্যবহারকারী সর্ষের তেলের ঝাঁঝের মাত্রা সম্পর্কে জানার জন্য গভীরভাবে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এছাড়াও, সমীক্ষায় দেখানো হয়েছে যে, ৯১ শতাংশ ব্যবহারকারী সর্ষের তেলের ব্র্যান্ড ব্যবহার করার ক্ষেত্রে প্যাকেজিংয়ে তেলের ঝাঁঝের মাত্রা সম্পর্কে স্পষ্ট তথ্য দেখে নিতে চান। তারা চাইছেন, সর্ষের তেল কেনার সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষেত্রে তাদের অবগত করার জন্য তেলের ব্র্যান্ডগুলি যেন স্বচ্ছতার সঙ্গে এই বিষয়গুলি উল্লেখ করে।
সমীক্ষার ফলাফল এবং একটি অভিনব প্রোডাক্ট প্রয়াস চালু করার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে, ইমামি এগ্রোটেক লিমিটেডের মার্কেটিং–এর প্রেসিডেন্ট দেবাশিস ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, ‘আমরা গ্রাহকদের কেবলমাত্র প্রোডাক্ট নয়, প্রোডাক্টের বিষয়ে স্বচ্ছতা এবং সততা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাই, সর্ষের তেল-এর বিষয়ে কনজিউমারদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে ‘ঝাঁঝ কি জানচ সমীক্ষা’ আমাদের কনজিউমারদের সম্মান করার এবং তাদের ‘জানার অধিকার’ দিয়ে ক্ষমতায়নের সঠিক সুযোগ দিয়েছে। এর ফলে তারা সর্ষের তেলের বিষয়ে নিজেদের পছন্দ সম্পর্কে অবগত হতে পারবেন। কারণ, সর্ষের তেল হল রান্নাঘরের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় এক উপাদান।’
সমীক্ষা এবং কনজিউমারদের জানার অধিকার সম্পর্কে তাঁর নিজের চিন্তাভাবনা প্রকাশ করে, ভারতের প্রথম মাস্টারশেফ পঙ্কজ ভাদৌরিয়া জানিয়েছেন, ‘ভারতের উত্তর ও পূর্বাঞ্চলের সমৃদ্ধ রান্নার ঐতিহ্যে সর্ষের তেল একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দুর্ভাগ্যবশত ভারতে, সর্ষের তেলের ব্র্যান্ডগুলির তীব্রতার মাত্রা যাচাই করার জন্য কোনও মাপকাঠি নেই এবং প্রায়শই এটি একই ব্র্যান্ডে এবং প্যাক থেকে প্যাকে পরিবর্তিত হয়। কনজিউমাররা প্রায়শই এই বিষয়ে অসচেতন থাকেন। শেষ পর্যন্ত তারা এমন একটি প্রোডাক্ট ক্রয় করেন, যা তাদের সন্তুষ্টি পূরণ করতে পারে না।’