স্বাস্থ্যের সঙ্গে রান্নাঘরের যোগাযোগটা অস্বীকার করা চলে না। শুধুমাত্র সুস্বাদু খাবার রান্না-ই নয়, সারা পরিবারের স্বাস্থ্য নির্ভর করে রান্নাঘরের উপর। কিন্তু স্বাদ এবং স্বাস্থ্যের সম্পর্ক তখনই টিকে থাকা সম্ভব যতক্ষণ রান্নাঘরের পরিবেশ স্বাস্থ্যসম্মত থাকে। খেয়াল রাখতে হবে রান্নাঘরের বৈদ্যুতিক উপকরণ যাতে ঠিকঠাক ভাবে কাজ করে, বাসনপত্র পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে, এছাড়াও রান্নাঘরকে পোকামাকড়-মুক্ত রাখাটাও একান্ত জরুরি।

বৈদ্যুতিক উপকরণের সঠিক দেখভাল

ইলেক্ট্রনিক অ্যাপ্লায়ান্সেস ছাড়া রান্নাঘরের যে-কোনও কাজ আজকের যুগে প্রায় অসম্ভব। সেই কারণে এমন উপকরণ বাছা উচিত যাতে বিদ্যুতের খরচটাও কম হয়। রান্নাঘরে সাধারণত বৈদ্যুতিক উপকরণ বলতে মিক্সি, ওভেন, টোস্টার, কফিমেকার, চিমনি, এয়ারফ্রায়ার, মাইক্রোআভেন ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। এগুলি ব্যবহার হয়ে যাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ করে দেওয়া উচিত এবং মেন প্লাগ থেকে আলাদা করে খুলে রাখা উচিত। এগুলি বেশিরভাগই অটোমেটিক বন্ধ হয়ে গেলেও, নিজে থেকেও এইটুকু সাবধানতা অবলম্বন করা জরুরি।

> বারবার ফ্রিজ খোলা উচিত নয়, এতে বিদ্যুৎ খরচ বেশি হয়। ফ্রিজের দরজা অনেকক্ষণ ধরে খুলে রাখাও বাঞ্ছনীয় নয়

> খাবার গরম করতে মাইক্রোআভেনের ব্যবহার করা সবথেকে ভালো। ১-২ মিনিটে খাবার গরম করে। তবে খেয়াল রাখতে হবে প্লাস্টিকের বাসনে খাবার রেখে মাইক্রোওভেনে গরম করা একেবারেই উচিত নয়। মাইক্রোআভেনে সবসময় কাচের বাসন ব্যবহার করাই উচিত

>বৈদ্যুতিক উপকরণ সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখাটা খুব জরুরি। যেমন টোস্টারে ব্রেড টোস্ট করে অথবা স্যান্ডউইচ বানাবার পর পাতলা কাপড় দিয়ে মুছে তারপর টোস্টার রাখা উচিত। মিক্সি অথবা হ্যান্ড ব্লেন্ডার ব্যবহার করা হয়ে গেলে লিকুইড সোপ জারে ঢেলে দিয়ে ধোয়া বাঞ্ছনীয়। সবশেষে শুকনো কাপড় দিয়ে ভিতরটা মুছে নিতে হবে

> সঠিক আলোর ব্যবস্থা রাখতে হবে কিচেনে। এগজস্ট ফ্যান অথবা চিমনির ব্যবহার জরুরি খাবার বানাবার সময়। মাঝে মাঝে এগুলিও পরিষ্কার করা খুব দরকার

> সঠিক বাসনপত্র বাছুন এবং পরিষ্কার রাখুন

> রান্নাঘরের পরিবেশ, ফ্রেন্ডলি করে তোলার জন্য সঠিক বাসনপত্র বাছুন এবং সেগুলি পরিষ্কার রাখার ব্যবস্থাও নিন। পেটের সংক্রমণ রোধ করার জন্য রান্নাঘর এবং বাসনপত্র পরিষ্কার রাখাটা খুব জরুরি।

> সিংক-এ পড়ে থাকা স্লঁটো বাসন, মিক্সার, জুসার গ্রাইন্ডারে লেগে থাকা খাবারের মধ্যে রোগ জীবাণু বাসা বাঁধে। সুতরাং এগুলো ব্যবহার করার আগে ভালো করে পরিষ্কার করুন

> মার্কেটে এখন বিভিন্ন ধরনের বাসনের সংগ্রহ চোখে পড়ে। বাসন পরিষ্কার হওয়া দরকার। খাবারে টক জাতীয় কিছু থাকলে অ্যালুমিনিয়াম বাসন ব্যবহার করা উচিত নয়। স্টিল অথবা কাচের বাসন ব্যবহার করুন। লোহার কড়াইতে রান্না করা সবথেকে ভালো

ননস্টিক বাসনের ব্যবহারই এখন বেশি হয়। এটাতে খাবার বাসনের গায়ে আটকে থাকে না আবার পুড়েও যায় না। কম তেলে রান্না করা যায়। তবে খেয়াল রাখতে হয় যে, এই ধরনের বাসনে যদি একবার কালির পরত পড়তে শুরু করে তাহলে তৎক্ষণাৎ এর ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়া উচিত– নয়তো বাসনের কালি খাবারে সঙ্গে মিশে যাবে। এটি স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারকও হতে পারে। ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া-র রিপ্রোডাকটিভ হেল্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রামের হেড ড. ট্রেসি উডরক-এর মতে, ননস্টিক বাসনে বানানো খাবারের জন্য মহিলাদের মধ্যে টেফনল-এর মাত্রা বেড়ে যায়, যার ফলে গর্ভধারণে অসুবিধা সৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে থাইরয়েড এবং ক্যান্সার হওয়ার ভয়ও বেড়ে যায়। সুতরাং ননস্টিক বাসন খালি অবস্থায় আগুনের উপর রেখে গরম করবেন না। তাছাড়া এর পরত একবার উঠতে আরম্ভ করলে এই ধরনের বাসন ব্যবহার করবেন না

 

 

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...