অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, বেকারত্ব, চাকরি চলে যাওযার ভয, শিশুদের মানসিক অস্থিরতার সম্মুখীন হওযা– এই সবই বাড়ির বড়োদের টেনশন এবং স্ট্রেস বাড়িযে তুলছে। যারা চাকুরিজীবী তাদের টেনশন আরও দ্বিগুন। বাড়ির ঝঞ্ঝাট মিটিযে অফিসের কাজের দাযিত্ব, যেখানে ভুল  হওযার কোনও উপায নেই। সুতরাং এই সবকিছুর মধ্যেও নিজেকে টেনশন ফ্রি রাখতে পারলেই, তবে ঘর ও অফিস সামলে নিজেকে সারাদিন প্রাণবন্ত রাখতে পারবেন। আর নিজে যদি খুশিতে থাকতে পারেন, তবেই আপনার আশেপাশের মানুষদের এবং পরিবেশকে অনেকটাই স্ট্রেস-মুক্ত করতে পারবেন।

বিশেষ করে মহিলাদের পক্ষে সংসারের নানা অসুবিধা সামলে অফিস করাটা একপ্রকার চ্যালেঞ্জ। অথচ এরই মধ্যে অনেক মহিলাই বুদ্ধি ও বিবেচনা দিযে সুন্দর ভাবে নিজেকে ও কাজের পরিবেশকে মেইনটেন করতে পেরেছেন এবং এটা সকলের জন্যই শিক্ষণীয। সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ যেটা, সেটা হল অ্যাডজাস্টমেন্ট।

প্রপারলি ড্রেস-আপ করে যদি বাড়িতেও থাকতে হয, তাহলেও কাজের একটা উৎসাহ তৈরি হয। রোজ নতুন কিছু ভাবনা মনে আসে, নতুন করে নিজেকে আবিষ্কার করা যায। কাজেও উত্তেজনা আসে।

সাবধানতা অবলম্বন করুন

বাড়ি থেকে অফিসের কাজ করার সমযও কিছ কিছু সাবধানতা অবলম্বন করা একান্ত জরুরি

১) অনলাইন-এ কাজ করতে হলে ভিডিও কল, চ্যাটিং, কনফারেন্স সব কিছুই অ্যাটেন্ড করতে হতে পারে। সুতরাং ঠিক করে চুল বাঁধা থেকে শুরু করে পরিষ্কার প্রেস করা জামাকাপড় পরে কাজে বসাটাই বাঞ্ছনীয

২) পুরুষ হলে রোজ শেভ করাটা দরকার এবং মহিলাদের উচিত মুখে সামান্য মেক-আপ করে তারপর কাজে বসা। এতে যারা আপনাকে দেখতে পাচ্ছে তাদের কাছে আপনি প্রেজেন্টেবল হযে উঠবেন এবং আপনি যা বলবেন তা গুরুত্ব দিযে অপরজন শুনবে

বাড়ি থেকে কাজ করার অসুবিধা

বাড়ি থেকে কাজ করার অনেক অসুবিধারও সম্মুখীন হতে হয কর্মরতাদের। পরিচারিকা না আসার কারণে বাড়ির সমস্ত কাজ এবং পরিবারের দেখাশোনা তাকেই করতে হয।

কাজে বসেও শান্তি নেই। বাচ্চাকে অনলাইন ক্লাস করতে হবে, স্বামীকেও বাড়ি থেকে কাজ করতে হবে আর আপনারও ল্যাপটপেই কাজ অথচ বাড়িতে একটি কি দুটি মাত্র ল্যাপটপ। এই ক্ষেত্রে বাচ্চার প্রযোজন আগে মিটিযে স্বামী-স্ত্রীকে কাজে কিছুটা কম্প্রোমাইজ করতে হতে পারে।

এছাড়াও নেটের সমস্যা লেগেই থাকে। ইলেক্ট্রিসিটি না থাকা, ঝড়ে লাইন খারাপ হযে যাওযা, নেটের ইন্টারনাল কিছু গণ্ডগোল অথবা ল্যাপটপে সমস্যা হলেই কাজেও তার প্রতিফলন ঘটবে।

মহিলাদের ক্ষেত্রে আরও সমস্যা হল, তারা বাড়িতে থাকলেই বাড়ির লোকেদের ফরমাযেশ থাকে, নতুন কোনও খাবার বানানোর। এর ফলে সামগ্রিক চাপ সামলাতে হয। অবসাদ দূরে রাখা, একই সঙ্গে বাড়ি ও অফিসের কাজ সমযে শেষ করা, দুই-ই সুচারুরূপে সামলাতে হয।

ভারসাম্য বজায রাখা জরুরি

বাড়ি এবং অফিস, দুটোরই দাযিত্ব ভালো ভাবে পালন করতে হলে, কাজে ভারসাম্য রেখে চলতে হবে। নযতো টেনশন এবং কাজের স্ট্রেস মানসিক ভারসাম্য নষ্ট করে, শারীরিক ক্ষতির কারণ হযে উঠতে সময নেবে না।

১) যে-কোনও কাজের জন্য শেডিউল তৈরি করা খুব জরুরি। শেডিউল তৈরি করে কাজ করলে বাড়ি এবং অফিস দুটোরই কাজ সমযে শেষ করতে সুবিধা হবে

২) প্রযোজনের নিরিখে কোন কাজটা বেশি ইম্পর্টেন্ট সেটা দেখে নিযে কাজের একটা সূচি তৈরি করাটা বাঞ্ছনীয। এতে কাজের উপর ফোকাস করা যাবে। ঠিক সময কাজ শুরু করে শেষ করা সম্ভব হবে। কাজের শেষে কাজের রিভিউ করাটা খুব জরুরি

৩) আপনি যদি বাড়িতে একাকী হন এবং ছোটো বাচ্চা থাকে আপনার, তাহলে সহকর্মীদের নিজের পরিস্থিতি জানিযে রাখা উচিত। যদি আপনার কোনও কাজে কোনওদিন অফিসের কাজে সামান্য দেরি কখনও হযে যায, আপনি সহকর্মীদের সাহায্য চাইতে পারেন

৪) যৌথ পরিবারের যদি সদস্য হন, তাহলে অফিসের কাজে বসার আগে যতটা সম্ভব বাড়ির কাজ শেষ করে ফেলার চেষ্টা করুন। তারপর কোনও দ্বিধা না করে কাজে বসুন এবং বাচ্চাকে দেখাশোনার দাযিত্ব বাড়ির অন্য সদস্যদের উপর ছেড়ে দিন

৫) বাড়ির দেখাশোনার দাযিত্ব স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভাগাভাগি করে নেওযার চেষ্টা করুন। একা সব দাযিত্ব সামলাবার চেষ্টা করবেন না। যৌথ পরিবার হলে রান্নাঘর বা বাড়ি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার কিছুটা দাযিত্ব অন্য সদস্যদের উপরেও ছাড়তে হবে। সব নিজে নিজে করার চেষ্টা করলে বাড়ি এবং অফিসের কাজের প্রেশারে অসুস্থ হযে পড়ার সম্ভাবনা বাড়বে।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...