তাড়াহুড়োর মধ্যে বেশিরভাগ সময় অর্ধেক জিনিসই ওয়ার্ডরোব-এ খুঁজে পেতে অসুবিধা হয়। তার কারণ হচ্ছে অগোছালো জিনিসপত্র এবং ওয়ার্ডরোব-এর অপর্যাপ্ত আলো। অথচ দৈনন্দিন জীবনে ওয়ার্ডরোব-এর প্রয়োজন অবহেলা করার নয়। ওয়ার্ডরোব-এ কীভাবে গুছিয়ে রাখবেন আপনার নিত্য প্রয়োজনীয় প্রিয় আলমারিটি তারই কিছু পরামর্শ এখানে দেওয়া হচ্ছে।

  • ওয়ার্ডরোব সবথেকে নীচের তাকটি আগে গুছিয়ে নেওয়া দরকার। আধুনিক বেশিরভাগ ওয়ার্ডরোব সঙ্গে নীচে একসঙ্গে একটা শু-বক্স দেওয়া থাকে। সুতরাং বাড়িতে শু-র্যাক না থাকলে, ফ্লোরে জুতো না রেখে টেম্পোরারি নতুন জুতো ওই শু-বক্সেই গুছিয়ে রাখুন। পরে শু-র্যাক কিনে নিতে পারেন বা হ্যাংগিং শু-অর্গানাইজার-ও, বাক্সের বদলে ব্যবহার করতে পারেন।
  • সপ্তাহে একদিন অন্তত আধঘন্টা সময় দিন পুরো আলমারিতে কী কী আছে দেখার জন্য। যেগুলো একদম পরেন না সেগুলি একটি কিংবা দুটি বাক্সে গুছিয়ে রাখুন। একটি আলমারিতেই রাখুন অসময়ে দরকারের জন্য এবং অন্য বাক্সটি অন্যত্র সরিয়ে রাখুন। লক্ষ্য হচ্ছে, যে পোশাকগুলি সবসময় পরছেন সেগুলি ওয়ারড্রোবে গুছিয়ে রাখা এবং বাকি পোশাক স্টোরেজে রেখে দেওয়া অথবা অন্য কেউ পরতে চাইলে তাকে দিয়ে দেওয়া। তবে সারাজীবন ধরে এটা করে যাওয়ার প্রয়োজন হবে না। একবার ওয়ারড্রোবের জিনিসপত্র কম হয়ে গেলে তখন মাসে একবার করে আলমারি গোছালেই চলবে।
  • যে পোশাকগুলি আপনি পরতে চান না বা পছন্দ করেন না সেগুলো কোনও অনাথ আশ্রম বা ত্রাণশিবিরে দান করে দিতে পারেন। তাই বলে দাগ লাগা, ছিঁড়ে যাওয়া বা ফুটো হয়ে যাওয়া জামাকাপড় অপরকে দান করা বাঞ্ছনীয় নয়। যদি তারা এই ধরনের ছেঁড়া, ফাটা জামাকাপড় নিতে আগ্রহী হয় তবেই এগুলি তাদের দিতে পারেন নয়তো এগুলি ফেলে দিন।
  • একটা ড্রেস হয়তো অনেকদিন ধরে আপনার ওয়ারড্রোবে পড়ে রয়েছে কিন্তু আপনি শিওর নন ওটা পরে আপনাকে কেমন লাগবে, ওটা রাখবেন না ফেলবেন বুঝে উঠতে পারছেন না। সেই ক্ষেত্রে আয়না এবং ক্যামেরার সাহায্য নিন। পোশাকটির সঙ্গে যা কিছু সেন্টিমেন্ট সব ঝেড়ে ফেলে দিন। পোশাকটি পরে আয়নায় নিজেকে দেখুন আপনাকে মানাচ্ছে কিনা অথবা যদি কনফিউজ হয়ে যান তাহলে আয়নায় নিজের প্রতিচ্ছবির একটি ছবি তুলে নিন ক্যামেরায়। ক্যামেরায় নিজের ছবি দেখে বোঝা অনেক সহজ হয়ে যাবে, আদৗ পোশাকটি আপনাকে মানাচ্ছে কিনা।
  • আপনি হয়তো আগে মোটা ছিলেন। ডায়েট কন্ট্রোল এবং জিম করে অনেকটাই রোগা হয়েছেন। সুতরাং মোটা থাকা অবস্থায় কেনা পোশাক এবং বর্তমানে রোগা হওয়ার পর কেনা পোশাক আলাদা করুন। যদি মনে করেন মোটা অবস্থায় যখন ছিলেন তখনকার কেনা পোশাক সামনে রাখতে চান নিজের ডায়েটের উপর কন্ট্রোল রাখার জন্য তাহলে একটা বা দুটো পোশাকই যথেষ্ট আলমারিতে রাখার জন্য। যেটা সর্বক্ষণ আপনাকে মনে করাবে ডায়েটে থাকার কথা এবং যেটা কন্ট্রেল না করলেই আবার মোটা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে। বাকি ওভার সাইজ পোশাক বাতিল করুন।
  • নতুন পোশাক যখনই কিনবেন, একটা পুরোনো পোশাক আলমারি থেকে সরিয়ে দিন। যে-কোনও কিছু নতুনের বদলে খারাপ হয়ে যাওয়া পুরোনো জিনিস স্যাক্রিফাইস করুন। হয়তো পাহাড়ে ঘুরতে যাওয়ার জন্য একটা ট্রেকিং-শু কিনে আনলেন, তাহলে জুতোর বাক্সে পড়ে থাকা পুরোনো কাপড়ের জুতোটা যেটা চার-পাঁচটা বর্ষায় তথৈবচ অবস্থা সেটা রেখে দেওয়াটা কি একান্তই দরকার? ভেবে দেখুন।
  • ওয়ার্ডরোব-এর ভিতরে আলোর ব্যবস্থা রাখুন। অনেক সময় আলমারির পিছনের দিকটা হাত দিতেই ইচ্ছে করে না, অন্ধকার থাকে বলে। একটা ক্লিপ লাইট আলমারির ভিতরে ঝোলাবার ব্যবস্থা করতে পারেন। অথবা ব্যাটারি চালিত স্টিক লাইট ও হার্ডওয়্যার দোকান থেকে কিনে এনে আলমারিতে ফিট্ করে দিতে পারেন। আলমারির ভিতর পর্যন্ত আলো পৌঁছোলে তবেই পিছনের দিকে থাকা জিনিস চোখে পড়বে এবং সেগুলো ব্যবহারের কথা মনে হবে।
  • আলমারিতে কোথায় কী টাঙিয়ে রাখবেন সেটা নিয়ে অনেকের সমস্যা থাকে। যেগুলো মাঝেমধ্যে ব্যবহার হয় সেগুলো পিছনের দিকে রাখা যেতে পারে। রোজের ব্যবহারের জিনিস সামনের দিকে রাখা ভালো।
  • শাড়ির সঙ্গে ম্যাচিং ব্লাউজ এক জায়গায় করুন আর সঙ্গে ম্যাচিং পেটিকোট। সালোয়ার কামিজ সেট করে গুছিয়ে তুলুন। শার্ট, কুর্তা, জাম্পার ইত্যাদি একদিকে রাখুন এবং প্যান্ট, পালাজো, লেগিংস, লং স্কার্ট ইত্যাদি একদিকে যাতে সময় নষ্ট না করে ম্যাচিং করিয়ে চট্ করে পরে নেওয়া যায়।
  • ভাবছি এটা কাল পরব, সোয়েটারটা নোংরা নয় আবার পুরোপুরি পরিষ্কারও বলা চলে না– এরকম কনফিউশন সবারই হয়। এমন একটা পোশাক বাছি যেটা কয়েকদিনই মাত্র পরা হয়েছে এবং আরও এক দুদিন পরা যাবে। উদাহরণ হিসেবে সোয়েটার, দামি শাড়ি, স্যুট ইত্যাদি বলা যায়। এগুলো একবার পরেই কেউ কাচে না। সুতরাং এগুলোর জন্য আলমারিতে একটা আলাদা র্যাক করুন।
  • প্রয়োজনীয় হ্যাঙ্গার কিনে আনুন। শার্টের জন্য, প্যান্ট, শাড়ি, লঞ্জিরি ইত্যাদি সবকিছুর জন্যই আলাদা আলাদা হ্যাঙ্গার পাওয়া যায়। হ্যাঙ্গারে টাঙিয়ে রাখা পোশাক তাহলে আলমারির ফ্লোরে পড়ে দলা পাকিয়ে যাবে না।
  • পোশাক কেনার সময়, যা আছে তার সঙ্গে কো-অর্ডিনেট করে কেনাটা জরুরি। আলমারিতে রাখা পোশাকের কথা মাথায় রেখে নতুন পোশাক ম্যাচ করে কিনলে আপনিই লাভবান হবেন। আলমারির সামনে দাঁড়িয়ে অর্ধেক পোশাক পরে বাকিটা ম্যাচিং করে কী পরবেন সেটা ভাবতে হবে না।
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...