প্রযোজক: নিখিল আদভানি, মনিশা আদভানি, মধু ভোজওয়ানি এবং জি স্টুডিও
লেখক: সমীর সতিজা, অসীমা ছিব্বার ও রাহুল হান্ডা
পরিচালক: অসীমা ছিব্বার
অভিনয়ে: রানি মুখার্জি, অনির্বাণ ভট্টাচার্য, জিম সার্ভ, নীনা গুপ্তা প্রমুখ।
সময়কাল: 2 ঘন্টা 15 মিনিট
হায়দ্রাবাদে জন্মগ্রহণকারী এবং দিল্লিতে বেড়ে ওঠা অসীমা ছিব্বার পরিচালিত পারিবারিক আইনি ছবি 'মিসেস চ্যাটার্জি ভার্সেস নরওয়ে' দেখার পর মনে হয়, ২০১০ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণের সময় ঘটনা অনেকটাই বদলানোর চেষ্টা করা হয়েছে। ছবির গল্প কতটা সঠিক এবং কতটা বিভ্রান্তকর পরিস্থিতি তুলে ধরেছে সেটি অবশ্যই বিতর্কিত বিষয়। 'মিসেস চ্যাটার্জি ভার্সেস নরওয়ে' সাগরিকা ভট্টাচার্যের আত্মজীবনী 'দ্য জার্নি অব এ মাদার' অবলম্বনে নির্মিত, যার দুই সন্তানকে ২০১১ সালে, নরওয়েজিয়ান চাইল্ড কেয়ার সিস্টেম(বার্নভারনেট) তার কাছ থেকে নিয়ে নিয়েছিল, মা সন্তানদের সঠিক দেখভালে ব্যর্থ এই অভিযোগের ভিত্তিতে।
২০১৩ সালে অসীমা, যশরাজ ফিলমস থেকে স্বাধীনভাবে 'মেরে ড্যাড কি মারুতি' পরিচালনার সুযোগ পান। রানি মুখার্জি অভিনীত সাম্প্রতিক এই ছবিতে অনেক তথ্যগত ত্রুটি রয়েছে, তবে সাগরিকা ভট্টাচার্য এবং তাঁর সঙ্গে ঘটে যাওয়া নরওয়ের ঘটনা নিয়ে যে ছবি তৈরি করা হয়েছে, সেটি দেখে সাগরিকা নিজেও ছবিটির প্রশংসা করেছেন। সিনেমার স্বাধীনতার নামে সাগরিকা ভট্টাচার্যর জায়গায় দেবিকা চ্যাটার্জি এবং অনুরূপ ভট্টাচার্যর জায়গায় তাঁর স্বামীর নাম অনিরুদ্ধ চ্যাটার্জি রাখা হয়েছে।
গল্প: অনিরুদ্ধ একজন প্রকৌশলী এবং তাঁর স্ত্রী দেবিকা বিএসসি গ্র্যাজুয়েট। কন্যাসন্তান সুচির বয়স যখন মাত্র চারমাস, তখন ছেলে শুভ এবং সুচিকে তাদের পিতামাতার অনুপযুক্ত আচরণের ভিত্তিতে, বার্নভারনেট(নরওয়েজিয়ান চাইল্ড ওয়েলফেয়ার সার্ভিসেস নামেও পরিচিত) দ্বারা ওই দুই ভাই, বোনকে মা বাবার কাছ থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সন্তানদের ফিরে পেতে নরওয়ে সরকারের সঙ্গে মামলায় জড়িয়ে পড়েছিলেন সাগরিকা। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল তিনি সন্তানদের ঠিকমতো দেখাশোনা করতে পারছেন না, তাই শিশুদের নিরাপত্তার স্বার্থে সেই দেশের সরকার সাগরিকার দুই সন্তানকে তাঁদের কাছ থেকে কেড়ে নেয়। এই ঘটনা ভারত সরকারেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যখন নরওয়ের সঙ্গে একটি পিটিশনে স্বাক্ষর করতে আসেন, তখন দেবিকা সংবাদ সম্মেলনে তাঁর সন্তানদের ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়টি উত্থাপন করেন। কিন্তু নরওয়ে সরকার সন্তানদের ভরণপোষণের দায়িত্ব দেবিকার লোভী দেওর, শাশুড়ি ও শ্বশুরকে দেয় এবং ঠিক হয় বাচ্চারা ১৮ বছরের না হওয়া পর্যন্ত নরওয়ে সরকার বাচ্চাদের দেখাশোনার জন্য অর্থ দেবে যা ভারতীয় মুদ্রায় বিপুল একটা পরিমাণ। এর পরেই দেবিকার সঙ্গে তার স্বামীর বিবাহবিচ্ছেদ হয় এবং দেবিকার দেওর তার সন্তানদের ফিরিয়ে দিতে অস্বীকার করে। অবশেষে, ২০১২ সালের নভেম্বরে, দেবিকা বাচ্চাদের পায়।