বয়স বাড়লে স্বাস্থ্যগত সমস্যাও বেড়ে যায়। এটা খুবই সাধারণ শারীরবৃত্তিয় প্রক্রিয়া। তবে বয়স বাড়লে পুরুষদের তুলনায় মহিলারা বেশি স্বাস্থ্যসমস্যার শিকার হন। আর এই সমস্যার ক্ষেত্রে অন্যতম ভূমিকায় থাকে মেনোপজ। কারণ, মেনোপজ শুধু শরীরী মিলনে বিড়ম্বনা তৈরি করে কিংবা সন্তানধারণে অক্ষমতা তৈরি করে, বিষয়টা শুধু তাই নয়। মেনোপজ-এর পর সবচেয়ে বেশি কুপ্রভাব পড়ে শরীরের সমস্ত হাড়ে। এই সময় হাড়ের ক্ষমতা হ্রাস পেতে থাকে অস্বাভাবিক ভাবে। তাই সতর্কতা জরুরি।
বয়স বাড়লে, বিশেষ করে মেনোপজ-এর পর, কী ধরনের হাড়ের সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে মহিলাদের?
বয়স বাড়তে থাকলে মহিলাদের দুটি প্রধান সমস্যায় আক্রান্ত হতে হয়। একটি হল অস্টিয়োআর্থ্রাইটিস, অর্থাৎ হাঁটুর আর্থ্রাইটিস, অন্যটি হল অস্টিয়োপোরোসিস অর্থাৎ এমন একটি অবস্থা যখন হাড় ক্রমেই ভঙ্গুর হতে থাকে। প্রাথমিক ভাবে এটি বেদনাহীন রোগ হলেও, অস্টিয়োপোরোসিস হয় মুখ্যত হাড়ে ক্যালসিয়াম ও মিনারেল হ্রাস পেতে থাকলে বা হাড়ের ছিদ্রতা বৃদ্ধি পেতে থাকলে। অন্যভাবে বললে, হাড়ে অধিক ছিদ্র হলে হাড়ের শক্তি কমে যেতে থাকে।
শরীরের কোন কোন হাড়ে বেশি কুপ্রভাব পড়ে এই সময়?
হাড়ের ক্ষয়িষ্ণুতার ফলে নিতম্বে, শিরদাঁড়ায় জোর কমে যায়, ফলে এ সময়ে রোগী ঝুঁকে যান। ফ্র্যাকচার হতে পারে সামান্য আঘাতেই, যেমন কবজি, কাঁধ বা অন্যত্র। আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, অস্টিয়োপোরোসিস হল হাইপারটেনশন ও ডায়াবেটিসের মতো কিছু বেদনাহীন রোগের মতোই একটি বেদনাহীন রোগ। রোগীর হাড়ের অবস্থা কতটা ভালো বা খারাপ তা জানার জন্য বোন ডেনসিটি টেস্ট অথবা ডেক্সা স্ক্যান করিয়ে নেওয়া প্রয়োজন।
আর যে-রোগটিতে মহিলারা আক্রান্ত হন তা হল, অস্টিয়োআর্থ্রাইটিস। অস্টিয়োআর্থ্রাইটিস ও অস্টিয়োপোরোসিসের মধ্যে প্রধান পার্থক্য হল, প্রথমটি একটি বেদনাহীন রোগ। এটি একটি ডিজেনারেটিভ ডিজিজ যা অস্থিসন্ধিকে প্রভাবিত করে, যেখানে লাইনিং কার্টিলেজ ক্ষয়প্রা৫ হয় এবং বেদনা হয় অস্থিসন্ধিতে আর্থ্রাইটিক (বাতজনিত) পরিবর্তনের জন্য। অস্টিয়োপোরোসিসের মতো না হলেও, এটি শুধু শরীরের অস্থিসন্ধিতে প্রভাব ফেলে, সব হাড়ে নয়। এই রোগের ফলে শরীরের যেসব গুরুত্বপূর্ণ অংশ প্রভাবিত হয় সেগুলি হল হাঁটু, শিরদাঁড়া (যেখানে তা সাধারণত স্পন্ডিলাইটিস ঘটায়) বা বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠের গোড়া ও পায়ের বুড়ো আঙুল। এগুলি হল সবচেয়ে সাধারণ অংশ যেসব স্থান অস্টিয়োআর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত হয়।