স্থূলতার সমস্যা মানুষ সাধারণ ভাবে অবেহলা করে থাকেন। ১৯৮০ সাল থেকে বিশ্বে স্থূল ব্যক্তিদের সংখ্যা বেড়ে হয়ছে দ্বিগুন। আমাদের দেশের ৫ শতাংশ-র বেশি মানুষ এই সমস্যায় ভোগেন। জনসংখ্যার বিচারে বিশ্বে স্থূল মানুষদের পরিসংখ্যানে ভারতের স্থান তৃতীয়। আমেরিকা ও চিনের পরেই। চিন ও ভারত মেলালে বিশ্বের স্থূল জনসংখ্যার ১৫ শতাংশ-ই এই দুই দেশের। নগরায়ণ প্রক্রিয়া বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ১৯৯৯ সাল থেকে ভারতে স্থূলতা একটা মেডিকেল সমস্যা হিসাবে দেখা দিয়েছে। এর জেরে স্থূলরা আরও বেশি অসুখের শিকার হতে শুরু করেন। পুরুষদের তুলনায় এদেশে মহিলাদের মধ্যে অসুস্থতার হার বেশি।
এই অতিমারির আবহে ব্যারিয়াট্রিক সার্জারির প্রয়োজন কতটা?
এখন কোভিড অতিমারির সময়। এই সময়ে দেখা গেছে যে, যেসব স্থূল লোক কোভিড পজিটিভ হয়েছেন, তাদের মৃত্যুর হার বেশি। সংখ্যাটা প্রায় ২৭ শতাংশ। ফলে স্থূল ব্যক্তিদের নোভেল করোনা ভাইরাসে মৃত্যুর হার কমাতে, ব্যারিয়াট্রিক সার্জারি খুবই দরকারি। তাই ব্যারিয়াট্রিক সার্জারিকে এখন শুধুই সৌন্দর্য বাড়ানোর চিকিৎসা হিসাবে দেখা হয় না। স্থূলতাকেও এখন একটি মেডিকেল সমস্যা হিসাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়।
এখন এই অতিমারি কোনও না কোনও ভাবে আমাদের জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। অনেক বেশি সময় ধরে স্ক্রিনে চোখ রাখা, অনিদ্রা, অস্বাস্থ্যকর খাবার ইত্যাদির কারণে মানুষের জীবনশৈলীতে নানা রকম বদল এসেছে। অতিমারি ও তদ্জনিত লকডাউনের কারণে শারীরিক পরিশ্রমও অনেকাংশে কমে গেছে। একইসঙ্গে বেড়েছে মানসিক চাপ ও উদ্বেগ। এসব ক্ষেত্রে ব্যারিয়াট্রিক সার্জারির উপযোগিতা রয়েছে খুবই বেশি। কারণ, এর ফলে মানুষের শারীরিক প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং কোভিড ১৯ সংক্রমণের সম্ভাবনাকে দূরে রাখে। তবে একে জরুরি সার্জারি হিসাবে ধরা হয় না। আবার এই সার্জারি অনন্তকাল ফেলে রাখাও যায় না। কারণ বহু ঘাতক রোগের উৎসে রয়েছে স্থূলতা। এটাকে অবহেলা করলে কোভিড ১৯ আরও ভয়ংকর হয়ে দেখা দিতে পারে। দেখা গেছে কোভিডে সংক্রমিত স্থূলদের বয়স কম হলেও, তাদের ভেন্টিলেশনে পাঠাতে হয়েছে। এতে সেরে ওঠা আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।