এটাই প্রচলিত যে, বাচ্চা ভালো সংস্কার এবং ব্যবহার শেখে মা-বাবার কাছ থেকেই এবং শৈশবেই এই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। বাচ্চাকে এই শিক্ষা দেওয়ার দাযিত্ব অভিভাবকদের। কিন্তু বাচ্চাকে শেখাতে গিয়ে মা-বাবারা ওভার কারেক্টিভ অথবা অসম্ভব ক্রিটিকাল হয়ে ওঠেন। তাঁরা মনে করে বসেন তাদের সন্তানকে সর্বাপেক্ষ ভালো হতে হবে এবং এই ভালো করে তুলতে গিয়ে অতিরিক্ত শাসন এবং সমালোচনা করা শুরু করেন। কিন্তু তাদের এই ব্যবহার বেশিরভাগ সময় ভালোর বদলে বাচ্চার ক্ষতি করে বসে। কোনওরকম সিদ্ধান্ত নিতে অথবা নিজেদের সমস্যার সমাধান করা বাচ্চাদের মুশকিল হয়ে ওঠে এবং সমস্যা আরও বেশি তাদের আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে। এই ক্ষেত্রে অভিভাবকদের উচিত হচ্ছে বাচ্চার বদলে নিজেকে বিশ্লেষণ করা এবং নিজেকে আগে উপযুক্ত করে তোলা। এই সমস্যার সমাধানে বিশেষজ্ঞদের মতামত হল,
বাচ্চার কনফিডেন্স এবং সেলফ রেসপেক্ট কমতে থাকে : বাচ্চাকে সবসময় ডমিনেট করতে চাইলে সেটা বাচ্চাকে ভিতরে ভিতরে অসহজ করে তুলতে পারে। যার ফলে বাচ্চা নিজের উপর বিশ্বাস এবং সম্মান হারিয়ে ফেলতে শুরু করে। এটা আরও হয় যখন বাচ্চাকে কিছু করতে না দিয়ে মা-বাবাই বাচ্চার হয়ে সিদ্ধান্ত নেয় এবং বাচ্চার করার ক্ষমতাকে সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করে। এতে বাচ্চার মনে নিজের প্রতি বিশ্বাস কমতে থাকে, সে নিজেকে দুর্বল ভাবতে শুরু করে এবং হীন মনোভাবের শিকার হয়। কারণ তারা বড়োদের সিদ্ধান্তের সামনে মনের মধ্যে অস্বস্তিবোধ করতে থাকে।
বাচ্চা জেদি হয়ে ওঠে : মা-বাবা যদি সবসময় বাচ্চাকে শোধরানোর চেষ্টা করতে থাকে এবং বাচ্চাকে পারফেক্ট করে তুলতে চায় তাহলে বাচ্চার দম বন্ধ হয়ে আসতে থাকে। বাচ্চার ক্ষমতাও এতে সীমিত হয়ে পড়ে। অপরের সামনে নিজেকে তার অক্ষম বলে মনে হয়। এতে বাচ্চারা খিটখিটে মেজাজের এবং জেদি হয়ে ওঠে।
মূল্যবোধ হারিয়ে ফেলে : যত কম কথা বলবেন, ততই আপনার আশেপাশের লোকজন আপনার কথার গুরুত্ব দেবে, এই প্রবাদবাক্য আপনি আপনার সন্তানের উপরেও চেষ্টা করে দেখতে পারেন। যখনই বাচ্চার প্রত্যেকটি সিদ্ধান্তকে আপনি সমালোচনা করতে শুরু করবেন এবং প্রত্যেক কথায় ওকে বকাঝকা করবেন তখনই আপনার কথার গুরুত্ব বাচ্চার কাছে কমে যাবে। পরিস্থিতি যতই গম্ভীর হোক না কেন, আপনার বাচ্চাকে শুধরোবার চেষ্টা সব বিফল হয়ে যাবে। মা-বাবা সবসময়ই সব জিনিস নিয়ে বলতেই থাকে - এই ধরনের পাত্তা না দেওয়ার মনোভাব তৈরি হবে বাচ্চার মনে। মা-বাবার কথার জবাব দেওয়াও বাচ্চা ধীরে ধীরে বন্ধ করে দেবে। গুরুজনদের প্রতি বাচ্চার মনে মূল্যবোধ হারিয়ে যাবে।