কর্মব্যস্ত দিনের শেষে বাড়ি ফিরে সবাই চান একটু আরামে থাকতে। কিন্তু যদি অগোছালো ঘর, ফিকে হয়ে আসা রঙের দেয়াল কিংবা ম্লান আলো চোখে পড়ে ঘরে ঢুকলেই, তাহলে অবসাদ গ্রাস করার সম্ভাবনা প্রবল হয়। আসলে এ ক্ষেত্রে গৃহসজ্জার ত্রুটির কারণে যোগ হয়ে যায় স্বাস্থ্যহানির বিষয়টিও।
নিউরো স্পেশালিস্ট-এর মতে, ঘরের অভ্যন্তরীণ সজ্জা সৌন্দর্যহীন হলে এবং হাইজিনিক না হলে, এর কুপ্রভাব পড়তে পারে ওই ঘরে বসবাসকারী সদস্যদের উপর। আর আপনার গৃহসজ্জার ত্রুটি যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে আপনি অবসাদগ্রস্ত হয়ে স্বাস্থ্যহানির শিকার হতে পারেন।
রঙের বৈশিষ্ট্য
ঘরের অভ্যন্তরীণ দেয়ালের রং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর্কিটেক্ট নীতা সিন্হা দাস প্রসঙ্গত জানিয়েছেন, মানুষের বাহ্যিক সাজপোশাক যেমন তার ব্যক্তিত্বের পরিচয় বহন করে, তেমনই, ঘরের অভ্যন্তরীণ দেয়ালের রং গৃহস্থের রুচির পরিচয় বহন করে এবং স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে।
আসলে রঙের একটা আলাদা মাহাত্ম্য আছে। দেয়ালের রং বাসিন্দার মনের রঙের প্রতিফলন ঘটায়। ইন্টিরিয়র ডিজাইনার নাতাশার মতে, ‘দেয়ালে লাগানো ভালো রং যেমন মন ভালো করে, ঠিক তেমনই খারাপ রং অবসাদগ্রস্ত করে তোলে। তাই ঘরের দেয়ালের রং নির্বাচনের ক্ষেত্রে সতর্কতা জরুরি।’
কোন রঙের কেমন প্রভাব পড়ে মানুষের দেহে মনে, এই প্রশ্নের উত্তরে ইন্টিরিয়র ডিজাইনার নাতাশা জানান, গাঢ় লাল, নীল, হলুদ, সবুজ রং খুব উজ্জ্বল কিন্তু বেডরুম-এ এই রং ব্যবহার করা উচিত নয়। কারণ, গাঢ় লাল রং রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয় আর গাঢ় নীল, হলুদ, সবুজ চিত্ত চঞ্চল করে তোলে। এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ে শিশুদের উপর। অবশ্য এত-সত্ত্বেও অনেকে বেডরুম-এ গাঢ় লাল, নীল, সবুজ প্রভৃতি রং ব্যবহার করেন এবং এর কুপ্রভাবের শিকার হন। কিন্তু যদি সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার কথা ভাবা হয়, তাহলে বেডরুম-এ হালকা রং ব্যবহার করা উচিত। এ ক্ষেত্রে হালকা গোলাপি, হালকা হলুদ কিংবা হালকা নীল রং ব্যবহার করা উচিত বেডরুম-এর দেয়ালে। তবে দেয়ালে সাদা রং ব্যবহার না করলেও সিলিং-এ সবসময় সাদা রং ব্যবহার করবেন। কারণ, সিলিং-এর সাদা রং ঘরে পর্যাপ্ত আলো ছড়াতে সাহায্য করবে।