সুতপা ভীষণ বিরক্ত বোধ করছিল। সারাদিন আঝোরে বৃষ্টি, তার উপর এক ঘন্টার বেশি হয়ে গেল বাড়িতে ইলেক্ট্রিসিটি নেই। আশেপাশে সব বাড়িতে আলো রয়েছে, শুধু ওদের ফ্ল্যাট-টাই অন্ধকার। ৮ বছরের ছেলে এসে বলল, পরের দিন ক্লাসে নাকি ওকে স্পোর্টস-এর ড্রেস পরে যেতে হবে। কিন্তু বৃষ্টিতে ড্রেস-টা শুকোবে কী করে? সুতপা চিন্তায় পড়ল। ঘরের ভিতর দড়ি টাঙাবারও কোনও ব্যবস্থা নেই। পেরেক দেয়ালে গাঁথবে কী করে? ড্রিল করতেও ও জানে না। ইলেক্ট্রিশিয়ান-কে ফোনে চেষ্টা করল সুতপা কিন্তু ফোনটা বারবার বেজে যাচ্ছে। ইলেক্ট্রিসিটি থাকলে, ছেলের ড্রেস-টা অন্তত ইস্তিরি করে কিছুটা শুকিয়ে নিতে পারত।
এইসময় সুতপাদের ঠিক উপরের ফ্ল্যাটের প্রতিবেশী মণীষা কোনও প্রয়োজনে সুতপার সঙ্গে দেখা করতে এসে দেখল ওর ফ্ল্যাটে ইলেক্ট্রিসিটি নেই। সঙ্গে সঙ্গে মণীষা ফিউজ-টা চেক করল। ঠিকই সন্দেহ করেছিল। ফিউজ-টা উড়ে গিয়েছে। মণীষা চট্ করে নিজের ফ্ল্যাট থেকে তার নিয়ে এসে ফিউজ ঠিক করে দিল। ড্রিলিং মেশিনের সাহায্যে বারান্দায় পেরেক গেঁথে দড়ি লাগিয়ে জামাকাপড় টাঙাবার ব্যবস্থা করে দিল। দশ-পনেরো মিনিটের মধ্যেই সুতপা-র সব সমস্যার সামাধান করে দিল মণীষা।
সুতপাকে আশ্চর্য হতে দেখে মণীষা ওকে পরামর্শ দিল, ‘তুমি কর্মরতাই হও বা গৃহিণী হও– এই সব কাজ আজকালকার দিনে অবশ্যই শিখে রাখা উচিত। অপরের উপর নির্ভর না করে বাড়ির টুকিটাকি কাজগুলো নিজে নিজে করে নিতে পারলে জীবনকে অনেকটাই সমস্যামুক্ত রাখা যাবে।’
সুতপাও আজ ভালো মতন বুঝতে পেরেছে, এই স্কিল্স হয়তো দৈনন্দিন জীবনে দরকার না-ও পড়তে পারে কিন্তু প্রয়োজন পড়লে এগুলো জানা না থাকলে প্রচণ্ড মুশকিলের মধ্যেও হঠাৎ করে পড়তে হয়।
এই কাজগুলো সবারই শিখে রাখা উচিত
ছোটোখাটো রিপেয়ারিং : বাড়ির জন্য প্রয়োজনীয় বেশ কিছু স্কিল্স বিদেশের কলেজে প্র্যাক্টিকাল ট্রেনিং দিয়ে পড়ানো হয়। কিন্তু আমাদের দেশে যারা এই ধরনের কাজ করে, তাদের দেখে অথবা আলাদা আলাদা ফিল্ডের বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে আলাদা ট্রেনিং নিয়েও এই ধরনের স্কিল্স শেখা যেতে পারে।