মাথার উপর বনবন করে ঘুরছে পাখাটা। চলছে টিভিটাও। বালিশের পাশে রাখা মোবাইল ফোনটা বেজে চলেছে অনবরত। হঠাৎ ঘুমের ঘোর কাটলো সায়কের।
আধখোলা জানলা দিয়ে সকালের মিঠেকড়া রোদের এক ঝলক এসে পড়েছে সায়কের ঠিক চোখের উপর। তাই চোখ খুলতে সময় লাগলো তার।
রিমোটটা খুঁজে নিয়ে বন্ধ করলো টিভিটা। ততক্ষণে মোবাইল ফোনটা বাজা বন্ধ হয়ে গেছে।
বিছানা থেকে নামতে গিয়ে হাতে-পায়ে ঠেকল উলটানো গেলাস, চিপস-এর প্যাকেট, জলের বোতল ইত্যাদি। দেওয়াল ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো, আটটা বেজে দশ মিনিট।
আবার বাজছে মোবাইল ফোনটা। সায়ক দেখলো, অরুণিমা-র কল।
---হ্যাঁ বলো...
----আগে দু'বার কল করেছি, ধরোনি। ঘুমোচ্ছিলে নাকি ? কত বেলা হল। গতকাল সেই সন্ধে সাতটায় লাস্ট কথা হয়েছিল, মিটিং আছে বলে,সেই যে কথা বলা বন্ধ করলে.... '
এক নিঃশ্বাসে বলা অরুণিমার কথাগুলো শোনার পর সায়ক বললো, 'না মানে রাতের দিকে আমার শরীরটা একটু খারাপ ছিল। '
-----বেশি গিলে ফেলেছিলে নাকি ? ক'পেগ ? মেয়েকে নিয়ে আমি বাবার বাড়িতে চলে এলে যা ইচ্ছে তাই করছো!
' না, ঠিক তা নয়। একটা অদ্ভুত ঘটনা ঘটেছে। আমি এখনও বুঝে উঠতে পারছি না কী করবো! '
------কী হয়েছে ?
'তোমাকে তো বলেছিলাম, আমার আগের ছবিটা কলকাতা ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল-এ দেখে,এক ভদ্রলোক আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে একটা শর্ট ফিল্ম প্রযোজনা করবেন বলেছিলেন। কিন্তু তিনি হরর ফিল্ম পছন্দ করেন।'
'তা এর মধ্যে অদ্ভুত ঘটনাটা এল কোত্থেকে ?'---- প্রশ্ন অরুণিমার।
'না মানে কলকাতায় আমাদের বাড়িতে যিনি সন্ধে সাতটা থেকে আটটা পর্যন্ত ছিলেন,তিনি কি করে দিঘার কাছে সন্ধে সাতটায় পথ দুর্ঘটনায় পড়লেন!'
'কী বলছো আমি মাথামুণ্ডু কিছুই বুঝতে পারছি না!' ...রাগত সুরে জানায় অরুণিমা।
'আরে, সুরজিৎ বসু নামের ওই প্রযোজক ভদ্রলোকই তো গতকাল আমার সঙ্গে মিটিং করতে এসেছিলেন। জাতীয় সড়কের ধারে পেট্রোল পাম্প আছে তাঁর। গতকাল সন্ধে সাতটা থেকে আটটা পর্যন্ত ছিলেন আমার সঙ্গে। এক কাপ চা-ও খেলেন। গল্প রেডি নেই জেনেও, ভরসা করে পঞ্চাশ হাজার টাকা অ্যাডভান্স করে গেলেন! '