—এসকিউজ মি! মল্লিকা সেনের ঘরটা কোথায়, একটু বলতে পারেন?

অফিসঘর থেকে ম্যানেজার রমানাথবাবু দোতলায় উঠে আসতে বললেন। রুম নাম্বার ৪০৮? রাজেশ দত্ত বড়ো উৎসুক হয়ে জিজ্ঞেস করল।

আটাত্তর বছরের বৃদ্ধা আলো মুখার্জি আপাদমস্তক নিরীক্ষণ করে বললেন, ‘কেন মল্লিকাদি আপনার কে হয়? এতদিন পর এসেছেন তাঁর খোঁজ নিতে? মানুষটি তো প্রায় শেষ হয়ে যেতে বসেছেন।’

লম্বা সুদর্শন যুবকটি বলল, 'আমি ওঁর নিজের ছেলে নই, তবে ছেলের মতোনই, জেঠিমার খোঁজ নিতে এসেছি।'

বৃদ্ধা রাগ সংবরণ করে বললেন, 'আমার নাম আলো মুখার্জি। আমি ভেবেছিলাম তুমি ওঁর ছেলে।' রাজেশ মুচকি হাসল।

বৃদ্ধা বললেন, 'আসলে আমরা সবাই ঠিক করেছি ওঁর ছেলে এলে বলব যে, মাকে এত কষ্ট কখনও দিতে নেই। ভগবান যদি উপরে থাকেন তিনি ঠিক বিচার করবেন। দিদি যখন প্রথমে আশ্রমে এসেছিলেন তখন আমাদের সঙ্গে গান, গল্প, আড্ডায় জমিয়ে রাখতেন। দু’বছর আগে সিঁড়ি থেকে পড়ে চোখ দুটো চলে গেল। ম্যানেজার কতবার ফোন করেছিল কিন্তু ছেলে কিছুতেই এল না। সেই সময় চোখের চিকিৎসাটা করলে দিদির চোখটা ঠিক হয়ে যেত। সারাক্ষণের জন্য একটি লোক রাখাতেও আপত্তি ছিল। ম্যানেজার ধমক দিতে অবশেষে লোক রাখল। এখন দিদি কেবল চার দেয়ালের মধ্যে স্বামীর ছবি আঁকড়ে এক মনে বসে থাকেন। কারও সঙ্গে কথা বলতে চান না। এত বড়ো বাড়ির বউ ছিলেন, কত গুণী মানুষ, আর সেই মাকে কিনা এভাবে অত্যাচার? বাড়ি নিয়েছিস, সম্পত্তি নিয়েছিস, সবই ভুল বুঝিয়ে কেড়ে নিয়েছিস। সব মানলাম না হয়! মায়ের সঙ্গে মাঝেমধ্যে কথা তো বলতে পারিস। এখানকার ব্যবস্থা যত ভালোই হোক তবু মায়ের কাছে একবার তো আসবি! মায়ের মন বলে কথা! তোকে জন্ম দিয়েছেন, পৃথিবীর আলো দেখিয়েছেন, তাঁর প্রতি কোনও কৃতজ্ঞতা নেই? দেখতে দেখতে ছয় বছর হয়ে গেল একবারও আসেনি। একজন আত্মীয়স্বজনও না। এই প্রথম তুমি দিদির খোঁজ নিতে এলে। তাই খুব অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। আমাদের সবারই যন্ত্রণা আছে। অনেক কষ্ট চেপে আমরা বৃদ্ধাশ্রমে থাকি, তারপর সবাই মিলে নিজেদের দুঃখ ভাগ করে একে অপরের আশ্রয় হয়ে দাঁড়াই। একটা সময় পর সংসারের ঘানি টানতে টানতে আমরা তোমাদের কাছে বোঝা হয়ে উঠি। তোমরা যখন এই শেষ বয়সে অসহায় অবস্থায় আমাদের একা ফেলে দাও তখন আমরা এভাবেও মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু আমাদেরও তো ইচ্ছা হয় বাড়ির লোকের ভালোবাসার ছোঁয়া পেতে। মাসে অন্তত একবার দেখা করতে এসে একটু ভালো মন্দ রান্না আমাদের জন্য যদি কেউ করে আনে! যদি মাঝে মাঝে ফোনে খোঁজখবর নেয়, এইটুকু কি অনেক বেশি চাওয়া?'

आगे की कहानी पढ़ने के लिए सब्सक्राइब करें

ডিজিটাল

(1 साल)
USD10
 
সাবস্ক্রাইব করুন

ডিজিটাল + 12 প্রিন্ট ম্যাগাজিন

(1 साल)
USD79
 
সাবস্ক্রাইব করুন
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...