সূর্যাস্তের পরেও যেরকম আলো অনেকক্ষণ থাকে, শীতটা এখন সেরকম। চলে গেছে, অথচ কোথায় যেন লেগে আছে একটু! পুলকের এই এক দোষ! রোজ শোওয়ার সময় চাদর নেবে না, স্বামীত্ব আর পৌরুষ দেখাবে, অথচ ভোররাতেই শিশুর মতো এসে ঢুকবে অঙ্গিরার চাদরে। আচ্ছা! বিরক্তি আর মায়া মিলে কোনও শব্দ আছে! হয়তো সেটারই নাম সংসার। বিশেষ করে রবিবার বিছানা ছেড়ে নামতে চাইলেও আটকাবেই, ‘আর একটু... অঙ্গিরা।'

—কী আর একটু? আমার একগাদা কাজ পড়ে আছে। পাশের ঘরে মেয়ে উঠে পড়েছে। এখন ছাড়ো।

—উঁহু... প্লিজ।

পুলকের হাত সরিয়ে আলতো হেসে বিছানা থেকে নেমে ঠোঁটের ওপর আঙুল চেপে বলে, 'চু...প, মেয়ে উঠে পড়েছে পাশের ঘরে। এখন যথেষ্ট বড়ো হয়ে গেছে। সব বোঝে। আবার রাত্তিরে।

এই কথা শেষ হতে না হতেই বারান্দায় ঠক করে একটা শব্দ। বোধহয় কাগজ দিয়ে গেল। গতকাল ভোট গেছে, আজ কাগজ বেশ মোটা। খবরে ঠাসা। অঙ্গিরা ভাবে, ছুটির দিন, চায়ের সাথে গুছিয়ে এলিয়ে পড়া যাবে। বারান্দায় কাগজটা আনতে গেল। উলটে পড়ে আছে কাগজটা। গল্পের পাতাটা ওপরে। নীচু হয়ে যেই না কাগজটা তুলতে যাবে, অঙ্গিরার শিরায়, ধমনীতে, শরীরের আনাচে কানাচের প্রতিটি রন্ধ্রে একটা শিহরণ খেলে গেল। গল্পটার নীচে এক লেখকের নাম দেখে। রঙ্গন মিত্র।

সাধারণত অঙ্গিরা রবিবারের পাতায় মাঝেমধ্যে গল্প পড়লেও লেখকের নাম কোনওদিনই খেয়াল করে না। গল্পটা খুব ভালো লাগলে তখন একবার চোখ বুলিয়ে দেখে। কিন্তু আজকের নামটা দেখে সারা শরীরে যে-বিদ্যুৎ খেলে গেল, ঠিক এরকম হয়েছিল প্রায় বছর কুড়ি আগে, যেদিন প্রথম দু'জনে একসাথে অন্ধকারে সুইচ বোর্ডে কারেন্ট খেয়েছিল। আসলে সুইচে হাত দিয়েছিল শুধু অঙ্গিরাই, কিন্তু তার আগেই অঙ্গিরাকে তড়িতাহত করে রেখেছিল অপর মানুষটি। ফলত একসাথেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট। তবে সে যাত্রায় দু'জনেই বেঁচে গিয়েছিল।

কে ছিল সেই অপর মানুষটি ? সে কথা আজ আর বলে লাভ কী! যে আজ সারা দুনিয়াতে হয়তো আর কোত্থাও নেই। তবু ওই কাগজের নামটা অত ভাবাচ্ছে কেন অঙ্গিরাকে? সে তো নিজের কানে শুনেছিল তার মৃত্যুসংবাদ। এক নামে তো কত মানুষই হয় ! যাক তবু তো জানা গেল এই পৃথিবীতে আরও ‘রঙ্গন মিত্র' আছে। গল্পটা পড়ে দেখল, এক স্মৃতিভ্রষ্ট মানুষের গল্প। এক সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ। অথচ এক আকস্মিক দুর্ঘটনায় অতীতের সব কথা তার বিস্মৃত।

आगे की कहानी पढ़ने के लिए सब्सक्राइब करें

ডিজিটাল

(1 साल)
USD10
 
সাবস্ক্রাইব করুন

ডিজিটাল + 12 প্রিন্ট ম্যাগাজিন

(1 साल)
USD79
 
সাবস্ক্রাইব করুন
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...