গরম পড়তে না পড়তেই ঘরের ভিতরটা কেমন যেন গুমোট হয়ে উঠছে৷ সর্বক্ষণ এয়ারকন্ডিশনার চালিয়ে রাখা তো আর সম্ভব নয়৷ এই সময় যদি আপনার জানা থাকে ঘর স্নিগ্ধ রাখার পদ্ধতি, তাহলে আচিরেই আপনার ‌বাড়িটি থাকার পক্ষে আরামদায়ক হয়ে উঠবে৷এ বিষয়ে কয়েকটি ঘরোয়া পদ্ধতিও অবলম্বন করে দেখতে পারেন৷সুফল পাবেন৷

ঘর শীতল রাখতে

 দুপুরের রোদ ঘরে ঢুকতে দেবেন না৷ দরকার পড়লে জানলা অনেক আগেই বন্ধ করে দিন৷ দুপুরে টেনে রাখুন ভারী পর্দা৷ অনেকে দুরকমের পর্দা ব্যবহার করেন৷ একটি স্বচ্ছ, দ্বিতীয়টি ভারী৷ প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করুন৷ তবে বিকেল হতেই ঠান্ডা হাওয়া ঘরে ঢোকার জন্য পর্দা সরিয়ে জানলা খুলে দিন৷

দুপুরের ভ্যাপসা গরম থেকে বাঁচতে আপনার টেবিল বা পোর্টেবল ফ্যানটি জানালার কাছে নিয়ে চালিয়ে দিন। এটি বাইরের ঠান্ডা হাওয়া ভিতরে টেনে আনবে এবং ঘরের অসহনীয় গরম দূর হবে।

টেবিল ফ্যানের সামনে গামলা ভর্তি বরফ রেখে ফ্যান চালিয়ে দিলেও কিন্তু সুরাহা হবে৷৷ নয়তো একটি জলের বোতলে বরফ জমিয়ে ফ্যানের সামনে রাখুন। যখনই ফ্যান চালাবেন, বরফের শীতল হাওয়া ঘরের পরিবেশ আরামদায়ক করে তুলবে৷

ঘর অতিরিক্ত গরম হয়ে ওঠে অপ্রয়োজনীয় ইলেকট্রিক জিনিস চালিয়ে রাখলে৷ তাই বিনা কারণে কম্পিউটার, টিভি, টিউব, ফ্যান চালিয়ে রাখলে ঘর গরম হয়ে ওঠার প্রবণতা থাকে৷ চেষ্টা করুন আপ্রয়োজনে এসব বন্ধ রাখতে। এতে ইলেকট্রিক বিলও কমবে, ঘরের ভিতরে গরমও কম লাগবে৷

জানলার কাঁচের মধ্যে দিয়ে তাপ শোষিত হয়৷ ফলে ঘর গরম হয়ে ওঠে৷আপনার ঘরে যদি বেশির ভাগই কাচের জানালা থাকে তাহলে ঘর গরম হয়ে ওঠাই স্বাভাবিক৷ তাই যেসব জানলায় সরাসরি সূর্যের আলো পড়ে, সেখানে হিট প্রটেক্টিং উইন্ডো ফিল্ম লাগান। এতে তাপ শোষণ ৬০% পর্যন্ত কমে যায়৷ ঘর ঠান্ডা থাকবে৷ তবে আরেকটা কাজ করতে পারেন, জানলার বাইরের দিকে সাদা রঙ করে নিতে পারেন৷ এর ফলে সূর্যের আলো প্রতিফলিত হয়ে যাবে এবং কম তাপ শোষণ করবে।

ঘরের বাতাসকে পরিশুদ্ধ করতে  

রুম ফ্রেশনার ব্যবহার করতে আমরা সকলেই বেশ পছন্দ করি। কিন্তু এটা সাময়িক ভাবে ঘরের বাতাসকে সুবাসিত করে, একটা ফ্রেশনেস-এর অনুভব এনে দেয়। পরিবর্তে ঘরে যদি কযেটি ইন্ডোর প্ল্যান্টস রাখেন, ঘরের সামগ্রিক পরিবেশটাই বদলে যাবে। সারাদিন সতেজ থাকবে ঘর। অতিরিক্ত পরিচর্যা ছাড়াই ঘরে রাখা যাবে, এমন তিনটি গাছ রাখার পরামর্শ দিচ্ছি আমরা।

গ্রেপ আইভি : মাঝারি সূর্যের আলো, অল্প জল এবং সামান্য যত্নেই এই গাছ বাতাসকে দূষণমুক্ত রাখতে সক্ষম। গ্রেপ আইভি গাছ যদি বেডরুমে, আপনার খাটের পাশে টেবিলে রাখেন তবে ঘরের বাতাস শুদ্ধ থাকবে। গাছ বাড়তে শুরু করলে নিয়মিত জল দিন। যাদের ত্বকে সামান্য কারণে ইনফ্কেশন হয় বা আ্যলার্জি হয়, এই গাছ ঘরে রাখলে বিশেষ উপকার পাবেন। গ্রেপ আইভি গাছ, বিষাক্ত গ্যাস নিষ্ক্রিয় করতেও সক্ষম।

lরাবার প্ল্যান্ট : ইজি কেয়ার হাউস-প্ল্যান্টগুলির মধ্যে রাবার প্ল্যান্ট অন্যতম। এর বড়ো বড়ো পাতা বাতাসের দূষিত পদার্থ শুষে নেয়। এই গাছ কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে দ্রুত পরিশুদ্ধ অক্সিজেন বের করে। রান্নাঘরের একপাশে গাছটি রাখা যেতে পারে, যেখানে কার্বনের আধিক্য। পরিচর্যা সহজ এবং দেখতেও সুন্দর। রাবার প্ল্যান্ট আপনার ঘরের লুক বদলে দেবে।

বাম্বু প্ল্যান্ট : এই গাছ জলে এবং মাটি উভয় জায়গাতেই হয়। ফলে এটাকে অ্যাকুয়ারিয়াম প্ল্যান্ট হিসেবেও ঘরে রাখতে পারেন। অ্যাকুয়ারিয়ামের জলে প্রচুর পরিমাণ অক্সিজেন সরবরাহ করে এই গাছ, ফলে মাছগুলিও সুস্থ থাকে। অন্যান্য ইন্ডোর প্ল্যান্টের তুলনায় এটি বাড়ে তাড়াতাড়ি। ঘরের পূর্ব দিকের কোণটা বাছতে পারেন এই গাছ রাখার জন্য। ফেং শুই মতে এই গাছ প্রচুর পরিমাণ পজিটিভ এনার্জির বাহক। ফলে সুস্বাস্থ্য, আনন্দ ও স্বচ্ছ্বলতা বৃদ্ধি করে।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...