আমার বয়স ২৩। সদ্য একটি চাকরিতে ঢুকেছি। একটি ছেলের সঙ্গে গত দুবছর ধরে আমার একটি সম্পর্কও তৈরি হয়েছে। আমরা পরস্পরকে বিয়ে করতে চাই। তাই দুজনেই অভিভাবকদের জানাই সে কথা। আমাদের মা-বাবারা পরস্পরের সঙ্গে আলাপ পরিচয়ও করেন এবং আমাদের বিয়ের দিনক্ষণ স্থির করারও উদ্যোগ নেন।

এর মধ্যে হঠাৎই আমার একমাত্র দাদার মৃত্যু হয় একটি অ্যাক্সিডেন্ট-এ। এই পরিস্থিতিতে আমিই আমার মা-বাবার একমাত্র অবলম্বন। ওঁরা দাদার মৃত্যুতে সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়েছেন। ওঁদের এই অশক্ত অবস্থায় আমি বিয়ে করে অন্যত্র চলে গেলে ওঁরা অসহায় হয়ে যাবেন।

আমি আমার ফিয়ঁসেকে এই সমস্যার কথা বলি এবং তাকে জানাই যে বিয়ের পর আমার বাবা-মাকেও তাদের বাড়িতে এনে রাখতে চাই। এতে সে ভয়ানক অসন্তুষ্ট হয় এবং বলে আমার এরকম সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয়। বিয়ের পর আমার বা তার, আমার মা-বাবার প্রতি কোনও দায়িত্ব থাকা উচিত নয়, বরং আমারই উচিত তার বাড়িতে এসে তার মা-বাবার সেবা যত্ন করা। এই কথাটিতে আমার মনে হয়েছে তার চিন্তাভাবনা বেশ আত্মকেন্দ্রিক। অথচ দু-বছরের অন্তরঙ্গতায় আমি অনেকদূর এগিয়ে গেছি। আমাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্কও গড়ে উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে আমি তাকে ছেড়ে যাওয়ার কথাও ভাবতে পারছি না, আবার মা-বাবার দায়িত্বও ঝেড়ে ফেলতে পারছি না। কী করি, যদি সমাধান দেন কৃতজ্ঞ থাকব।

আপনি ঠিকই বুঝেছেন, আপনার প্রেমিকটি অত্যন্ত স্বার্থপর এবং আত্মকেন্দ্রিক। সে তার বাবা-মায়ের ব্যাপারে যতটা কনসার্নড– আপনার অভিভাবকদের ব্যাপারে ততটাই উদাসীন।

তাকে বোঝানোর চেষ্টা করে যদি বিফল হন, তাহলে আপনার এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসাই বুদ্ধিমত্তার কাজ হবে। প্রাথমিকভাবে কষ্ট হলেও আখেরে দেখবেন এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে এলে আপনার জীবনটা সুখকর হবে। এই মুহুর্তে আপনার বাবা-মা কে দেখা, তাদের পাশে থাকাই আপনার আশু কর্তব্য। জীবনটা অনেক বড়ো। আপনার এই সিদ্ধান্তকে সম্মান জানানোর মতো কোনও জীবনসঙ্গী নিশ্চয়ই পাবেন। তাকে নিয়ে সুন্দর করে আপনার ভবিষ্যৎ গড়ে তুলবেন, এখনই হঠকারি সিদ্ধান্ত নেবেন না।

 

 

 

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...