সকলেই চান চোখের সৌন্দর্য প্রদর্শন করতে। কিন্তু বড়ো বড়ো চোখও অনেক সময় কোনও আকর্ষণ তৈরি করে না। কারণ চোখের নীচে ডার্ক সার্কল্স সৌন্দর্যহানি করে। আসলে বেশি টেনশন এবং স্ট্রেসের প্রভাব, চোখের সৌন্দর্যকে ঢেকে দেয়। তখন নষ্ট হয় চোখের স্বাভাবিক সৌন্দর্য। মহিলাদের চোখের এই সৌন্দর্য-সমস্যা আজকাল ক্রমশই বাড়ছে।
যদি আপনারও চোখের নীচে কালো দাগের সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে সেই নিয়ে অযথা চিন্তা না করে, সমস্যামুক্ত হওয়ার চেষ্টা করুন।
অত্যধিক স্ট্রেস এবং টেনশনের ফলে অনেকেরই এখন চোখের তলায় কালোভাব ফুটে ওঠে। তবে আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতিতে কোনওরকম কাটাছেঁড়া (অপারেশন) না করেই, শুধুমাত্র থেরাপিতে এই সমস্যা দূর করা যায়।
ডার্ক সার্কল্স-এর কারণ
চোখের নীচে কালো ছাপ পড়ার বেশ কয়েকটি কারণ তুলে ধরেছেন ডা. গুপ্তা। তাঁর মতে, এই সমস্যাটির মুখ্য কারণ বংশগত। যদি মা-বাবার এই সমস্যা থেকে থাকে, তাহলে সন্তানও এই সমস্যার শিকার হতে পারে। এ ছাড়া যদি বেশি কসমেটিক্স ব্যবহার করেন এবং সেই কসমেটিক্স যদি খারাপ মানের হয়, তাহলেও চোখের নীচে কালো ছোপ পড়তে পারে। সেইসঙ্গে, কাজের অতিরিক্ত চাপ, স্ট্রেস প্রভৃতি কারণেও চোখের সৌন্দর্য নষ্ট হতে পারে। রোদে বেশি ঘুরলেও হতে পারে ওই একই রকম সমস্যা।
চিকিৎসা পদ্ধতি
চোখের নীচে কালি দূর করার চিকিৎসা পদ্ধতির নাম ‘আন্ডার আই ট্রিটমেন্ট’। এটি খুব প্রচলিত থেরাপি। অ্যালোপ্যাথিক ওষুধ দিয়ে দূর করা হয় এই ডার্ক সার্কল্স। মলম এবং ট্যাবলেট দুই-ই থাকে এই ওষুধের তালিকায়। অন্তত ৬ মাস ব্যবহার করতে হয় এই মলম এবং সঙ্গে ওষুধও খেতে হয়। সবচেয়ে বড়ো কথা, এই থেরাপিতে কোনও সাইড এফেক্ট নেই অর্থাৎ কোনও ক্ষতি হয় না। দুই থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হয় এই থেরাপিতে। তবে কোনও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শমতোই চিকিৎসা শুরু করা উচিত। চোখ যেহেতু শরীরের খুব গুরুত্বপূর্ণ অংশ, তাই ওষুধের দোকান থেকে ওষুধ কিনে নিজে কোনওরকম চিকিৎসার ঝুঁকি নেবেন না।
ত্বকের যত্ন
অনেক সময় মধ্যবয়সি মহিলাদের চোখের নীচের ত্বকে ভাঁজ পড়তে দেখা যায়। এতে চোখের এবং এমনকী মুখমণ্ডলেরও সৌন্দর্য নষ্ট হয়। বয়সও একধাপে অনেক বেড়ে গিয়েছে মনে হয়। তবে এটা এখন আর তেমন সমস্যার নয়। রিংকল থেরাপির দ্বারা এই সমস্যা এখন খুব সহজেই দূর করা যায়। চোখের নীচের ত্বকে ভাঁজ দূর করার এই চিকিৎসা পদ্ধতিটিকে বলা হয় ‘নন এবিলেটিভ রেডিয়ো ফ্রিকোয়েন্সি’। তিন থেকে চারটি সিটিংয়ে ত্বক টানটান করে লাবণ্য ফিরিয়ে আনা যায়।
জরুরি পরামর্শ
১) পর্যাপ্ত জল পান করলে চোখের নীচের কালো দাগ কিছুটা আটকানো যায়।
২) চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনওরকম ওষুধ সেবন কিংবা মলম লাগানো উচিত নয়।
৩) ত্বক ড্রাই নাকি অয়েলি তা বিচার করে, সেইমতো ক্রিম ব্যবহার করা উচিত।
৪) রোদে বেশি ঘোরাঘুরি করা উচিত নয়, এতে চোখের নীচে কালো দাগ পড়তে পারে। আর যদি বের হতেই হয়, তাহলে রোদচশমা এবং ছাতা ব্যবহার করা উচিত।
৫) ত্বকে যদি লাবণ্য থাকে তাহলে অযথা প্রসাধন সামগ্রী ব্যবহার করে ত্বকের ক্ষতি করবেন না। কারণ অতিরিক্ত কসমেটিক্স ব্যবহারের ফলে ত্বকে রিংকল আসতে পারে।
৬) রাতে অন্তত আট ঘণ্টা ঘুমোতে হবে। কারণ ঘুম কম হলে চোখের নীচে কালো দাগ পড়তে পারে।
৭) স্ট্রেস এবং টেনশন কাটাতে হবে।
8) নিয়মিত শাকসবজি খেতে হবে।