আমরা নিজেদের বাহ্যিক সৌন্দর্যের জন্য অনেক কিছুই করে থাকি। বিভিন্ন নামিদামি প্রসাধনী ব্যবহারের পাশাপাশি বিউটি ট্রিটমেন্ট, মেডিসিন, এমনকী কসমেটিক সার্জারিরও দ্বারস্থ হই, কিন্তু মনকে সতেজ রাখার বিষয়টি বেমালুম এড়িয়ে যাই। অথচ বাস্তবে প্রাণোচ্ছল থাকতে গেলে এনার্জেটিক মনও সমান জরুরি। জেনে নিন কীভাবে নিজেকে গরুম করে আমূল বদল আনতে পারেন আপনার ব্যক্তিত্বে৷

সমাজসেবা

মানুষের পাশে দাঁড়ানোর মধ্যে মানসিক তৃপ্তি রয়েছে। অন্যের বিপদ-আপদে ছুটে যান। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন। দূরে না থেকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সমাজসেবায় কিছু সময় ব্যয় করুন। আপনার হাউজিং সোসাইটির বিভিন্ন কাজে অংশ নিন। বাকিদের কাছে নিজের একটা ভাবমূর্তি গড়ে তুলুন। মানসিক শান্তি পাবেন, যা আপনার চেহারায় প্রতিফলিত হবে।

শখ প্যাশন

প্রতিটি মানুষেরই কিছু না কিছু শখ নয়তো প্যাশন থাকেই। সময় ও কাজের চাপে সেগুলো উপেক্ষা করবেন না। বরং সময়-সুযোগ বের করে ভালোলাগা কাজগুলো করুন। শখ মেটান। দেখবেন ভালো আছেন।

নতুন কিছু শিখুন

শেখার কোনও বয়স নেই। বসে না থেকে অবসর সময়টাকে কাজে লাগান। দেশি-বিদেশি ভাষা শিক্ষার অনেক কেন্দ্র রয়েছে। অনলাইনে কোনও একটাতে ভর্তি হয়ে যান, কিংবা বই কিনে বাড়িতে বসে চর্চা করুন। কম্পিউটার রিলেটেড কিছুও শিখতে পারেন। হবির উপর জোর দিন। নিজের এন্টারটেইনমেন্ট-এর জন্য গান শুনুন। দেখবেন সময়টা দারুণ কাটছে।

ছোটোদের সঙ্গে আপনিও শিশু হয়ে যান

বাচ্চা ও টিনএজারদের সঙ্গে সময় কাটান। ইয়ং ফিল করবেন। বাচ্চাদের দাপাদাপি হাসিখুশি, সরলতা আমাদের মনকে ভীষণ ভাবে ছুঁয়ে যায়। নিজের অজান্তে নিজেরাই ছেলেমানুষ হয়ে যাই। ফিরে যাই নিজেদের ছোটোবেলায়। শরীর ও মনে যা ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই বলছি যতটা সম্ভব বাচ্চাদের সঙ্গে খেলুন, হাসুন।

ভয়কে গুডবাই

মধ্যবয়সে এসে মহিলাদের মনে কিছু ভয় চেপে বসে। ‘আমার পক্ষে সম্ভব নয়’, ‘বয়স হয়ে গেছে’, ‘লোকে কী বলবে’– এই ধরনের নেতিবাচক শঙ্কাগুলিকে ঝেড়ে ফেলতে হবে। কারণ এই ফ্যাক্টরগুলিই আপনার পথের কাঁটা। অনেক মহিলাই বাইরে বেরোতে ভয় পান। হলিডে টুর, পার্টি, সোশান ওয়ার্ক থেকে নিজেকে গুটিয়ে রাখেন। যার নেগেটিভ প্রভাব পড়ে মনের মধ্যে। স্বাস্থ্যের প্রতি নজর দিন এবং নিয়মিত শরীরচর্চা করে নিজেকে ফিট রাখুন। অভ্যাস করলে সবই সম্ভব। পারিবারিক অনুষ্ঠানে যাতে বেমানান না হয়ে পড়েন, নাচের অভ্যাস করুন। দেখবেন জড়তা কেটে গেছে। বন্ধুদের সঙ্গে সময়টা অনেক ভালোভাবে উপভোগ করতে পারছেন।

পজিটিভ মানসিকতা

মুখ মনের আয়না। মনটা যত পরিষ্কার, সদর্থক রাখবেন, তার প্রতিফলন পড়বে বডি ল্যাঙ্গুয়েজে। পজিটিভ থাকার চেষ্টা করুন। মন থেকে নেগেটিভ ভাবনা সরিয়ে ফেলুন। সদর্থক মনোভাব নিয়ে সব কাজে এগিয়ে যান। মানসিক ভাবে অনেক বেশি তরতাজা থাকবেন।

ঘৃণা নয়

কারও প্রতি ঘৃণা, বিদ্বেষ জমিয়ে রাখবেন না। ক্ষমা করতে শিখুন। বিদ্বেষ, ক্ষোভ যত জমে থাকবে, নেগেটিভ ভাবনা ঘিরে ধরবে। মনের বয়স বাড়বে।

টেনশনে নিয়ন্ত্রণ

রিল্যাক্সড্ থাকার চেষ্টা করুন। সহজে উত্তেজিত হবেন না।

স্মৃতিশক্তি

প্রখর স্মৃতিশক্তি এবং ক্ষুরধার মস্তিষ্ক পেতে হলে দিনের কিছুটা সময় ব্যয় করুন পাজল গেম বা ক্রসওয়ার্ড সমাধানে। কারণ বয়সটাকে ধরে রাখতে মস্তিষ্কের তরতাজা থাকাটাও জরুরি।

ব্যায়াম

শরীরচর্চাকে দৈনন্দিন রুটিনে ঢুকিয়ে ফেলুন। শক্তি ও সক্ষমতা বাড়াতে ব্যায়ামের বিকল্প নেই। শরীর ফিট মানে ফিল গুড। তবে কী ধরনের ব্যায়াম করবেন, সে ব্যাপারে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিন। ঘরের কাজ, সাইকেল চালানো, সাঁতারও শরীর ফিট রাখে।

খাদ্যাভ্যাস

ব্যালান্সড ডায়েট গুরুত্বপূর্ণ। তাজা ফল, শাকসবজি, প্রোটিন, ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার প্রয়োজন। ওজন বেড়ে যাচ্ছে বলেই খাওয়াদাওয়া কমাতে যাবেন না। বরং কাজের পরিমাণ বাড়ান। দৌড়ঝাঁপ করুন। স্বাদ বদল করতে খাদ্যতালিকা মাঝেমধ্যে বদলান। দেখবেন খাবার ইচ্ছেটা বজায় থাকবে।

কাজে নিয়োজিত থাকুন

বাড়িতে নতুন বউ এলে বা মেয়ে বড়ো হলে, মায়েরা ভাবেন তাদের দায়িত্ব শেষ। সংসার সামলাবে মেয়ে-বউরা। ভাবনাটা ভুল। কাজ কিছুটা কমান,কিন্তু পুরোপুরি নয়। নাহলে শরীরে জং ধরে যাবে। ক্রমশ অকেজো হয়ে পড়বেন। আর বাড়ির কাজ হালকা হলে নিজেকে বাইরের কাজে নিযুক্ত করুন। আগে সংসারের দায়িত্বে যা করতে পারেননি, তা করুন। সময় পেলে বেরিয়ে পড়ুন লম্বা আউটিংয়ে।

জমিয়ে ঘুমোন

প্রতিটি মানুষেরই প্রয়োজন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম। তাড়াতাড়ি ঘুমোতে যান, সকাল সকাল উঠুন। একটু বয়স্ক মহিলাদের রাতে ভালো ঘুম হয় না। বারবার ঘুম ভেঙ্গে যায়। ভাবেন, এটা বয়সের দোষ। আসল ঘটনা হল, বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ভার কিছুটা কমে। দিনের বেলাতেও অবসর সময়ে ঘুমিয়ে নেওয়ার সুযোগ থাকে। ফলে রাতের ঘুম কমে যায়। তাই সারাদিন আলসেমিতে সময় নষ্ট না করে কাজের মধ্যে কাটান। রাতে সময়মতো শুতে যান দেখবেন ঠিক ঘুম হচ্ছে। সকালে যখন উঠছেন শরীর ও মন অনেক বেশি প্রাণোচ্ছল লাগছে।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...