Omicron ছড়াচ্ছে  আতঙ্ক। জ্বর এলে স্বাভাবিক ভাবেই মনে হচ্ছে Covid Delta Variant  কিংবা Omicron  নয়তো? জ্বর আসলে কোনো রোগ নয়। এটি একটি উপসর্গ।জ্বর দেহের একটি প্রতিরোধমূলক প্রতিক্রিয়া।সাধারণত শিশুরা ভাইরাস বা অন্য কোনো সংক্রমণ হলে জ্বরে ভোগে। জীবাণু অনুপ্রবেশের পর শরীর তার বিরুদ্ধে লড়াই গড়ে তোলে জ্বরের মাধ্যমে।

বর্তমান সময়ে যখন কোভিড অতিমারির তৃতীয় ধাক্কায়  সকলে আতঙ্কিত, তখন বাচ্চাদের  Fever symptom হলেই ভয় করে, কোভিড সংক্রমণ নয়তো?তাই আগে থেকেই মাস্ক এবং স্যানিটাইজার ব্যবহার বিষয়ে সচেতন থাকুন৷  শিশুদের জ্বর হলে এটি নিয়ে মা-বাবারা খুব উদ্বিগ্ন থাকবেন এটাই স্বাভাবিক। তবে এ-ও সত্যি, ঘন ঘন জ্বরে পড়া ভালো নয়। এসব ক্ষেত্রে বাচ্চা অন্য কোনও সমস্যায় আক্রান্ত কিনা, জানা দরকার।

সাধারণত জ্বর এলেই কাঁপুনির অনুভূতি হতে থাকে ৷ জ্বরে আক্রান্ত হলে আমরা প্রচন্ড শীত অনুভব করি,কাপঁতে থাকি ঠক ঠক করে।বাচ্চাদের ক্ষেত্রেও একই উপসর্গ থাকে৷ প্রচন্ড গরমের দিনে জ্বর হলেও এই শীতভাব কমে না। তবে কাঁপুনি হচ্ছে মানেই যে এটা ম্যালেরিয়া, এমন ভাবার কোনও কারণ নেই৷

শীতভাব লাগা বা কাঁপুনি হওয়াটা নির্ভর করে আমাদের শরীরের ভেতরের তাপমাত্রার উপর। ভাইরাস বা অন্য কোনো জীবাণুর আক্রমণে শরীরে রোগ-ব্যাধি বাসা বাঁধলে, শরীরে জ্বর অনুভূত হয়। কারণ রোগ-জীবাণু তাদের কার্যকলাপ দ্বারা শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বাড়িয়ে দেয়। এই কারণেই জ্বর আক্রান্ত শরীর উষ্ণ হয়।

শরীরের তাপমাত্রা বেশি হওয়ার কারণে বাইরের তাপমাত্রা যা-ই হোক না কেন, তা দেহের অভ্যন্তরের তুলনায় অনেক কম হয়। হঠাৎ জ্বর কমে গেলে, কমে যায় দেহের তাপমাত্রা; ফলে আমরা আকস্মিক গরম অনুভব করি, ঘেমে উঠি। তাই কথায় বলে, ‘ঘাম দিয়ে জ্বর ছেড়ে যাওয়া’।

ভাইরাসজনিত জ্বরে বা সর্দি-জ্বরে বাচ্চারা শরীরে ব্যথা অনুভব করতে পারে।এছাড়া শরীরে নানা অস্বস্তি, জ্বরের সঙ্গে কাঁপুনি থাকে। প্যারাসিটামল খেলে সেরে যায়।জ্বর হলে শিশুকে বেশি করে বিশ্রাম দিতে হবে, খেলাধুলো বা অনলাইন ক্লাস করারও দরকার নেই।চোখ,মাথা– সবেরই বিশ্রামের প্রয়োজন৷

বারবার প্রচুর পানীয় ও তরল খাবার দিতে হবে। নুন-চিনির জল বা পরিষ্কার ও বিশুদ্ধ জল, বাড়িতে তৈরি জুস বা সুপ দিন। বাচ্চাকে ঈষদুষ্ণ জলে স্নান করতে বলুন৷ হালকা পাতলা পোশাক পরান। সাধারণ সংক্রমণের জ্বর এমনিতেই সেরে যাবে৷ অ্যান্টিবায়োটিক দরকার হলে তার পূর্ণ ডোজ যথাসময়ে সম্পন্ন করুন, নয়তো আবার জ্বর আসতে পারে।

সাধারণ জ্বর দু’দিনের বেশি স্থায়ী হয় না। কিন্তু জ্বর বেশি দিন স্থায়ী হলে বা ১০৩ ডিগ্রি ফারেনহাইট অতিক্রম করলে চিকিৎসক দেখানো উচিত।তাপমাত্রা বাড়লেই ওষুধ খাওয়ার দরকার নেই। আমাদের শরীরের নিজস্ব রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা আছে।আমাদের ছোটবেলায় প্রবীণরা বলতেন, দেহের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা কেমন কাজ করে, সেটা দেখার জন্য তিন দিন সময় নেওয়া উচিত।তাই তিন দিন পরেও যদি বাচ্চার জ্বর থাকে, তখন  চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়াই ভালো৷রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শমতো ওষুধ খাওয়ান। সাধারণত দেহের তাপমাত্রা কমাতে ডাক্তাররা প্যারাসিট্যামল দিয়ে থাকেন,প্রয়োজনে অ্যান্টিবায়োটিক৷

বাচ্চাদের জ্বর হলে কী করবেন, আসুন জেনে নেওয়া যাক৷

  • যেসব শিশু বারবার ঠান্ডা ও সর্দি-কাশিতে ভোগে, তারা বেশির ভাগ সাইনাস ইনফেকশনে আক্রান্ত হয় বারবার
  • কিছু রোগ বারবার আক্রমণ করতে পারে বা জ্বর দীর্ঘমেয়াদি করে তুলতে পারে, যেমন-যক্ষ্মা, ম্যালেরিয়া ও টাইফয়েড জ্বর
  • জন্মগত মূত্রতন্ত্রের ত্রুটি থাকলে বারবার প্রস্রাবে সংক্রমণ হয়ে জ্বর আসতে পারে।
  • বারবার জ্বরে ভোগা শিশুর জ্বর যদি একদম সেরে না যায়, তবে জটিল কোনও রোগ আছে কিনা, যেমন-কিডনি, ক্যানসার, তা দেখতে হবে।
  • ডেঙ্গু কিনা তার পরীক্ষা দ্রুত করিয়ে নিন৷
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...