বিয়ের চার বছর পর শিউলি যখন সন্তানের জন্ম দিল, তখন সংসার খুশিতে ভরে উঠল। স্বামী প্রদীপ এবং পরিবারের সকলের মনেই তখন ভরপুর আনন্দ। কিন্তু এর ঠিক ৬ মাস পর শিউলি হঠাৎ লক্ষ্য করল, আর-পাঁচজন সাধারণ বাচ্চার মতো ওর সন্তানের মানসিক এবং শারীরিক বিকাশ ঘটছে না। শিউলি ওর ভয়ের কথা জানাল শাশুড়ি এবং প্রতিবেশী বন্ধুদের। ওরা জানালেন, এতে ভয়ের কিছু নেই, অনেক বাচ্চার একটু দেরিতে বিকাশ ঘটে। কিন্তু শিউলির ভয় কাটল না। সে চিকিৎসকের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলল। নানারকম পরীক্ষানিরীক্ষার পর চিকিৎসক জানালেন, বাচ্চাটি অ্যাবনর্মাল। একথা জেনে শিউলি কান্নায় ভেঙে পড়ল। কিন্তু ভেঙে পড়লে চলবে না। স্পেশাল কেয়ার নিয়ে abnormal children-কে স্বাভাবিক জীবনের ছন্দের সঙ্গে তাল মেলাতে শেখাতে হবে। চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে যাতে সে তার অস্বাভাবিকতাজনিত সমস্যাগুলি অতিক্রম করতে পারে। এ ব্যাপারে সন্তানের বাবা-মা এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও গুরুদায়িত্ব পালন করতে হবে।
অ্যাবনর্মাল বাচ্চার লক্ষণ
সাধারণ বা সুস্থ বাচ্চার মতো যাদের বোধ কিংবা বিকাশ হয় না কিংবা কোনও অস্বাভাবিক লক্ষণ দেখা যায়, তাদের বলা হয় অ্যাবনর্মাল শিশু। অর্থাৎ, এক, দেড় বছর বয়স হয়ে যাওয়ার পরও যখন বাচ্চা সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারে না, মুখ দিয়ে আওয়াজ করতে পারে না কিংবা ঘাড় ঘুরিয়ে দেখতে পারে না, তখনই বুঝতে হবে বাচ্চাটি স্বাভাবিক নয়। তবে এগুলি হল অস্বাভাবিকতার প্রাথমিক লক্ষণ। বিশেষ লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে, তিন-চার বছর বয়স হওয়া সত্ত্বেও চুপচাপ বসে থাকা, ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকা, মুখ থেকে লালা পড়া, হাঁটাচলায় বিকৃতি, অকারণে হাসি, বিড়বিড় করা প্রভৃতি।
অস্বাভাবিকতার কারণ
অ্যাবনর্মালিটির কারণ জানার জন্য প্রচুর মেডিকেল রিসার্চ হয়েছে কিন্তু প্রকৃত কারণ এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি। তবে সাধারণভাবে তিনটি কারণের উল্লেখ করেন চিকিৎসকরা। এক, বংশানুক্রমিক, দুই, শৈশবের বড়ো অসুখ এবং তিন, পরিবেশ-পরিস্থিতির কারণে অস্বাভবিকতা তৈরি হওয়া।