শিশুর জন্মের সঙ্গে সঙ্গে তার জন্মের সঙ্গে যুক্ত চাইল্ড স্পেশালিস্ট-ই বুঝিয়ে দেন শিশুর যত্নের Skin care জন্য বাড়িতে কী কী করা দরকার। নবজাতকের ত্বক, যেহেতু খুব পাতলা এবং সংবেদনশীল হয় তাই শিশুর ত্বকের জন্য বিশেষ যত্নের প্রযোজন।
প্রায় ১ বছর সময় লাগে শিশুর ত্বকের সুরক্ষিত কবচ পুরোপুরি বিকশিত হতে। পরিবেশ এবং তাপমাত্রার পরিবর্তন প্রত্যক্ষ ভাবে শিশুর ত্বককে প্রভাবিত করে। নবজাতকের জন্য ভালো মানের বেবি প্রোডাক্টস-ই ব্যবহার করা উচিত। এছাড়াও সঠিক তাপমাত্রা এবং মযে্শচারাইজারের ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গে মা-ঠাকুমাদের শেখানো ঘরোয়া টোটকাও উপকারে লাগানো যেতে পারে। শিশুর ত্বকের স্বাস্থ্যের খেয়াল Skin care এবং কোনওরকম অ্যালার্জি বা সংক্রমণ থেকে শিশুর ত্বককে বাঁচাবার দাযিত্ব কিন্তু অভিভাবকদেরই।
ত্বকের সাধারণ সমস্যা : ত্বকের কোঁচকানো ভাব, লাল হয়ে ফুসকুড়ি বেরোনো, ড্রাই হয়ে যাওয়া ইত্যাদি নবজাতকের ত্বকের খুব কমন সমস্যা। মায়ের গর্ভ থেকে বাইরের পরিবেশে এসে নবজাতক নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। একই ভাবে শিশুর ত্বকও বাইরের পরিবেশের সংস্পর্শে আসে, সুতরাং স্বাভাবিক ভাবেই কিছু সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। কিন্তু সমস্যাগুলি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চলেও যায়। প্রিম্যাচিওর বেবি অর্থাৎ নির্দিষ্ট সময়ের আগেই য়েসব শিশু জন্মায় তাদের অনেকেরই মুখ, পিঠ, নরম রোম দ্বারা আবৃত থাকে। এছাড়াও নবজাতকের ত্বক জন্মাবার সময় বেশিরভাগ ড্রাই অবস্থায় থাকে এবং চামড়া পাপড়ির মতো উঠতে থাকে। কিন্তু কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ত্বকের এই সমস্যা দূর হয়ে যায়। কোনও কারণে শিশুর ত্বকের সমস্যা সময়ের সঙ্গে ঠিক না হলে, অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া বাঞ্ছনীয়।
জন্মদাগ : জিন মিউটেশন-এর কারণে সাধারণত শিশুর শরীরে বার্থমার্ক বা জন্মদাগ দেখা দেয় যা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ক্ষতিকারক নয়। শরীরের যে-কোনও জায়গায় এই দাগ দেখা দিতে পারে। অনেক সময় ১ বছর পরে দাগ নিজের থেকে মিলিয়ে যেতে পারে আবার কারও কারও থেকে যায়। শিশু কাঁদলে আরও সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে দাগগুলি।
কিছু সাবধানতা অবলম্বন করুন : শিশুর ত্বক হেলদি এবং মসৃণ রাখতে দৈনন্দিন জীবনে কিছু সাবধানতা মেনে চলা উচিত।
শিশুকে স্নান করানো : নবজাতকের ত্বক অত্যন্ত কোমল এবং সংবেদনশীল হয়। স্নানের সময় তাই খুব সাবধান থাকা উচিত। নবজাতককে রোজ স্নান করানোর প্রযোজন হয় না। প্রথম কয়েক সপ্তাহ নোংরা ডায়াপার বদলানো এবং স্পঞ্জবাথ দেওয়াই যথেষ্ট। এর পর ধীরে ধীরে ২-৩ দিনের মধ্যে একবার স্নান করানো প্রযোজন। এতে জীবাণুমুক্ত থাকার সঙ্গে সঙ্গে শিশুর নিজেকে ফ্রেশ লাগবে। স্নানের জন্য বাথটাব-এ ৩-৪ ইঞ্চি জল ভরা উচিত। বাচ্চার স্নানের আগে টাবের জল চেক করে নেওয়া দরকার, যাতে জল খুব বেশি ঠান্ডা বা গরম না হয়। হালকা গরমজলে ৩-৪ মিনিট স্নান করানোই যথেষ্ট। খেয়াল রাখতে হবে বাচ্চার চোখে যেন সাবান বা শ্যাম্পু না ঢোকে।
স্নান করাবার পর বাচ্চার ত্বক ড্রাই হয়ে যায় সুতরাং বেবি পাউডার বা মযে্শচারাইজার ত্বকে লাগানো জরুরি। লোশন যদি ব্যবহার করেন তাহলে ভিজে ত্বকেই লোশন লাগিয়ে দিন যাতে ত্বক ঘষা না খায়। যে-কোনও বেবি প্রোডাক্ট ব্যবহারের আগে খেয়াল রাখতে হবে প্রোডাক্টটি যাতে সফট এবং প্যারাবিন ফ্রি হয়।
মাসাজ : শিশুকে মালিশ করার প্রথা বহু আগে থেকেই চলে আসছে। প্রাকৃতিক তেল দিয়ে মাসাজ শিশুর ত্বকে পুষ্টি জোগায়। শিশুর ত্বকের Skin care জন্য অলিভ অয়েল, সরষের তেল, নারকোল তেল অথবা আমন্ড বেবি অয়েল ব্যবহার করা যেতে পারে। সুগন্ধি-যুক্ত অথবা কেমিক্যালযুক্ত তেল শিশুর ত্বকে একেবারেই ব্যবহার করা উচিত নয়। মালিশ করাবার ঠিক আগেই বাচ্চাকে স্তন্যপান করানো অনুচিত এবং বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে, যেখানে মালিশ করানো হচ্ছে সেই ঘরের তাপমাত্রা যেন স্বাভাবিক থাকে।
খেয়াল রাখুন ডায়াপার-এর : শিশুর ত্বকে ডায়াপার থেকে সমস্যা দেখা দিতে পারে। বাচ্চাকে যখন অনেক্ষণ ডায়াপার পরিয়ে রাখা হয়, তখনই এই সমস্যা দেখা দেয়। ভিজে ডায়াপার যদি তৎক্ষণাৎ বদলানো না হয় তাহলে র্যাশের সমস্যা দেখা দেবে। শিশুর ওই অংশের ত্বক লাল ফুসকুড়িতে ভরে যেতে পারে, যার থেকে চুলকানি এবং জ্বালা হওয়ার সমস্যাও সৃষ্টি হবে। এছাড়াও খুব টাইট ডায়াপার শিশুকে পরানো উচিত নয়। অনেক সময় শিশুর ত্বক বিশেষ একটি ব্র্যান্ডের ডায়াপারের প্রতি সংবেদনশীল হতে পারে। সেই ক্ষেত্রে ডায়াপারের ব্র্যান্ড পরিবর্তন করুন।
শিশুর গুপ্তাঙ্গ সবসময় শুকনো এবং পরিষ্কার রাখুন। ডায়াপার বদলাবার সময় শিশুর ওই অংশের ত্বক হালকা গরমজলে ভালো করে পরিষ্কার করে শুকনো করে মুছে নিয়ে পাউডার লাগিয়ে দিন, তার পরেই নতুন ডায়াপার পরান। যে-ডায়াপার খুব মোলায়েম এবং জল শোষণ ক্ষমতা বেশি, সেই ডায়াপারই শিশুর জন্য বাছুন। র্যাশ-এর সমস্যা যদি এতে না ঠিক হয় তাহলে ডাক্তারের পরামর্শে জিংক অক্সাইড বেসড ডায়াপার র্যাশ ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন।