হাত ধোয়া, দূরত্ব বজায় রাখা, মুখে মাস্ক পরিধান করা, বাড়ির দরজা থেকে শুরু করে মেঝে, রান্নাঘরের পরচ্ছন্নতা আমরা সকলেই মেনে চলি।  করোনাকালীন সময়ে দরজার হ্যান্ডেল আমরা বারে বারে পরিষ্কার করি স্যানিটাইজার ব্যবহার করে। নিজেদের শারীরিক যত্ন নিতেও ভুল হয় না, বাইরে থেকে এসেই বাইরের জামাকাপড় কাচার জন্য ছেড়ে পরিষ্কার বাড়ির পোশাক পরি। তবে কিছু কিছু ব্যাপার আমরা সঠিক না জানা থাকার ফলে করি না অথবা এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি। যেমন বাড়ির কার্পেট, শু-র‍্যাক, বাথরুম এর খুঁটিনাটি, কম্পিউটার-এর কিবোর্ড এবং মাউজ, ফার্নিচার ইত্যাদি। আজ জেনে নিই এগুলো ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখতে কতটা সহায়তা করে।

 ১)  কার্পেট-এও ভাইরাস লুকিয়ে থাকে কার্পেটে ই-কোলি, নেরো, সালমোনেলা-র মতো ভাইরাস লুকিয়ে থাকে। দেখে পরিষ্কার মনে হলেও চলাফেরা করার সময় ভাইরাসগুলি হাওয়ায় মিশে যায় ফলে পেটের নানা সমস্যা হতে পারে। তাই রোজ ভ্যাকুয়াম ক্লিনার দিয়ে কার্পেট পরিষ্কার করা উচিত। কার্পেট ওয়াশ করার সময় প্রফেশনাল কার্পেট ক্লিনিং সার্ভিস-এর সাহায্য নিন অথবা অ্যান্টি ব্যাক্টেরিয়াল ক্লিনার দিয়ে পরিষ্কার করুন, ফলে ধুলোমাটি, ব্যাক্টেরিয়ার সঙ্গে সঙ্গে অ্যালার্জির মতো সমস্যা হওয়ার ভয় থাকবে না।

২)  টয়লেট-এ রোটা ভাইরাস – টয়লেট সব থেকে ভিজে থাকার ফলে ব্যাক্টেরিয়া জন্মাবার অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়। সেজন্য বাথরুম ব্যবহারের পর জল, ঝাড়ু দিয়ে পুরো বার করে সেটা শুকিয়ে নিন। প্রত্যেকবার টয়লেট ফ্লাশ করার পর জীবাণুনাশক লিকুইড ব্যবহার করে হাত ধুয়ে নিন, কারণ রোটা ভাইরাসের উৎপত্তিস্থল এখানেই। এই ভাইরাসের কারণে ডায়ারিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, কারণ এটি পাচন তন্ত্রকে প্রভাবিত করার কাজ করে। টুথব্রাশ হোল্ডার রোজ জল দিয়ে পরিষ্কার করুন। টুথব্রাশ ব্যবহারের পর এটি ক্যাপ লাগিয়ে ঢেকে রাখতে ভুলবেন না।

৩)  বেডরুম পরিষ্কার রাখুন – বেডরুম হল রিল্যাক্স করারা জায়গা যেখানে ইচ্ছেমতন শোওয়া-ওঠা যায়, শুয়ে গান শোনা যায়, পার্সোনাল মোমেন্টস নিজের মতো করে এনজয় করা যায়। অথচ যে-বালিশে মাথা রেখে আমরা আরামের নিদ্রা যাই সেখান থেকে অসুস্থ হওয়াটা কোনও আশ্চর্যের ঘটনা নয়। কারণ এতে ডাস্ট মাইটস জীবাণু থাকে যার থেকে অ্যালার্জি, ফাংগাল ইনফেকশন এবং ফুসফুসের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। সুতরাং তোশক, গদি, বালিশ সব রোদে দিন মাঝেমধ্যেই। বালিশের কভার তিন-চারদিন অন্তর অন্তর বদলান। এতে বেডরুম থেকে অসুস্থ হয়ে পড়ার সম্ভাবনা কমে আসবে।

৪)  শু-র‌্যাক পরিষ্কার রাখুন – সাধারণত প্রত্যেক বাড়িতেই জুতো এক জায়গায় রাখার জন্য শু- র‌্যাক থাকে। এটা রোজ পরিষ্কার করা উচিত, নয়তো এটাই হয়ে উঠতে পারে আপনার বাড়ির জীবাণুর আঁতুড়ঘর। বাইরের যত নোংরা, ধুলো, ব্যাক্টেরিয়া সব জুতোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়ির ভিতরেও চলে আসে। এতে এসচেরিশিয়া কোলি নামক এক ধরনের ব্যাক্টেরিয়া থাকে যা পেটের সমস্যার সঙ্গে সঙ্গে ইউরিন ইনফেকশন-এরও কারণ। এছাড়াও চেষ্টা করবেন খুব নোংরা অথবা ভিজে জুতো শু- র‌্যাকে না রাখতে।

৫)  ফার্নিচার-এর ক্লিনিং – ফার্নিচারে প্রায় 80 শতাংশ ব্যাক্টেরিয়া থাকে যা শরীরের জন্য ক্ষতিকারক। পোশাক অথবা হাতের মাধ্যমে আসবাবপত্রের জীবাণু মানবশরীরে প্রবেশ করে। 15-20 দিন অন্তর অন্তর কুশন কভার, সোফা কভার সব ধুয়ে ফেলা বাঞ্ছনীয়। এছাড়াও ভ্যাকুয়াম ক্লিনার দিয়ে ফার্নিচার পরিষ্কার করুন।

৬)  কম্পিউটার-এর কিবোর্ড এবং মাউজ – কিবোর্ডেও জীবাণুরা বাসা বাঁধে যেটাকে কিনা আমরা শরীরের অত্যন্ত কাছে নিয়ে বসি ও ব্যবহার করি। মোবাইলও নানা অসুখের জীবাণু বয়ে আনে যা ব্যবহারের সময় হাতের মাধ্যমে মানুষের শরীরে ঢোকে। সুতরাং কাপড় অথবা তুলোর সাহায্যে রেগুলার গেজেটস পরিষ্কার করুন।

 

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...