বাচ্চাদের জেদের কারণ : অনেক কারণে এবং পরিস্থিতির নেতিবাচক ফলাফলের জন্য বাচ্চার শিশুমনে জেদ উৎপন্ন হয়। এতে শিশুর সঙ্গে তার মা-বাবাও সমান ভাবে দায়ী।

কী কী কারণে বাচ্চা জেদি হয়ে ওঠে :

মা-বাবার ব্যবহার : অভিভাবকেরা যদি বাচ্চার সঙ্গে সঠিক ব্যবহার না করেন, সবসময় তাদের বকাঝকা করতে থাকেন, মারেন অথবা তাদেরকে সময় না দেন তাহলে বাচ্চার জেদি হয়ে ওঠার সম্ভাবনা প্রবল। বাচ্চাদের সঙ্গে অভিভাবকদের সম্পর্ক বাচ্চার মানসিক বিকাশের উপর প্রভাব ফেলে। বাচ্চাকে এড়িয়ে গেলে অথবা ওরা যা বলতে চায় তার উপর গুরুত্ব না দিলেও শিশুরা বায়নাবাজ, জেদি হয়ে ওঠে। অভিভাবকের মন পেতে অথবা তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বাচ্চা stubbornness-প্রকাশের রাস্তাকেই সঠিক রাস্তা ভেবে নেয়। এছাড়াও সন্তানকে অতিরিক্ত আদর দিয়ে মাথায় চড়ালেও সে জেদি হয়ে ওঠে।

পরিবেশ : খুব ছোটো শিশুরা অনেক সময় শারীরিক সমস্যা বড়োদের বোঝাতে না পারলে, খিদে পেলে, ঘুম এসে গেলে, অথবা সকলের দৃষ্টি নিজের প্রতি আকর্ষিত করতে জেদ প্রকাশ করে থাকে। কিন্তু একটু বড়ো বাচ্চারা পারিবারিক পরিবেশের কারণে, অতিরিক্ত আদরে অথবা বাড়িতে অত্যধিক শাসনের কারণে এবং অনাবশ্যক পড়াশোনার চাপে জেদি হয়ে ওঠে।

শারীরিক উৎপীড়ন : অনেক সময় ছোটোরা নিজেদের জীবনে, অপর ব্যক্তির দ্বারা শারীরিক উৎপীড়নের শিকার হয় যেটা সম্পর্কে লজ্জায়, ভয়ে সে কারও কাছে মুখ খুলতে পারে না। এমনকী মা-বাবার কাছেও ঘটনাক্রম অজানাই রয়ে যায়। এরকম ঘটনায় সন্তানের মনে ক্ষতিকারক প্রভাব পড়ে। এরা বাইরের লোকেদের এড়িয়ে যেতে শুরু করে, খিটখিটে মেজাজের হয়ে ওঠে, অবাধ্যতা করে। প্রতি কথায় জেদ দেখানো শুরু করে অথবা একদম চুপচাপ হয়ে যায়।

অবসাদ : স্কুলে, বন্ধুদের সঙ্গে মনোমালিন্য অথবা বাড়িতে মা-বাবার সঙ্গে মতপার্থক্যও বাচ্চাকে অবসাদের দিকে ঠেলে দেয়, বাচ্চা যার বহিঃপ্রকাশ করে তার জেদের মাধ্যমে। এরকম পরিস্থিতিতে তাদের সামলানো মাঝেমধ্যে খুবই সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

গর্ভাবস্থায় ধূমপান ও অ্যালকোহল সেবন : অনেক সময় বাচ্চার stubbornness-এর পেছনে থাকে গর্ভধারণ করার পর মায়ের অতিরিক্ত ধূমপান বা অ্যালকোহল সেবন।

জেদি বাচ্চাকে সামলাবার উপায় : বিশেষজ্ঞদের মতে জেদি শিশুরা খুবই সংবেদনশীল হয়। তার প্রতি মা-বাবার ব্যবহার কীরকম, সেই বিষয়ে বেশি স্পর্শকাতর হয়। সন্তানের সঙ্গে কথা বলার সময় টোন, বডি ল্যাংগুয়েজ এবং শব্দ চয়নের উপর বড়োদের বিশেষ ভাবে খেয়াল রাখা উচিত। সন্তান যদি ভয় বা দ্বিধা ছাড়াই অভিভাবকদের সঙ্গে কমফর্টেবল হয়ে কথা বলতে পারে, তাহলে তাদের চরিত্রের ব্যবহারের ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটতে পারে।

 

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...