নতুন পোশাকে নতুন সজ্জায় সজ্জিত হয়ে সকলেই এই কটা দিন আনন্দে হইচই করে কাটিয়ে দিতে চায়। এই আড়ম্বরের মহড়া চলে অন্তত দুমাস ধরে। বলিউডি ছবিতে নায়িকা কী পোশাক পরল বা নায়ক কোন পোশাকের জাদুতে নায়িকার মন কাড়ল এসব নিয়ে চলে চর্চা। ফ্যাশনের উৎপত্তি তো এইসব ছবিগুলো থেকেই সাধারণত হয়ে থাকে। পোশাক যারা ডিজাইন করেন তারাও এই উৎসবের শুরুতেই পোশাকের ডিজাইন নিয়ে নানা এক্সপেরিমেন্ট করেন। যেটা ক্রেতাদের মধ্যে বেশি সাড়া জাগায় সেটাই সেই বছরের মতো Fashion স্টেটমেন্ট হয়ে দাঁড়ায়।
প্রিয় উৎসব যখন তখন যুগের দাবি মেনে হাল ফ্যাশনের পোশাক কেনাই বাঞ্ছনীয় বলেই মনে করেন সকলে। শারদীয়ার কেনাকাটা মানেই শাড়ি কিন্তু পয়লা নম্বরে। শুধু বয়স্করাই শাড়ি পরবেন, নতুন প্রজন্ম শাড়ির বিরুদ্ধে, ধারণাটা সবসময়ই ভুল প্রমাণিত হয়ে এসেছে। বরং তরুণী, যুবতিদের মধ্যে শাড়ির ক্রেজ বেশ প্রশংসনীয়। শাড়ি পরাটা এখন মোটেই ওল্ড Fashion নয় বরং বিভিন্ন ধরনের সুন্দর সুন্দর ডিজাইনের শাড়ির সঙ্গে রুপো বা অক্সিডাইজড গয়নার মিলমিশে সৌন্দর্যকে আকষর্ণীয় মাত্রায় পেঁছে দেওয়াটা অনেক নবীনারই সাধ থাকে।
এবছর আবার শাড়ির সঙ্গে কনট্রাস্ট ব্লাউজ, প্রিন্টেড ব্লাউজ, সুতো দিয়ে নকশা তোলা ব্লাউজ এগুলো যেমন নজর কাড়ছে, তেমনি ব্লাউজের বিভিন্ন ডিজাইনের গলা যেমন টি-কলার নেক, বোট নেক, হল্টার নেক, সামনে পিছনে ভি নেক, ব্যাক নট, গলাবন্ধ ব্লাউজ, কলার দেওয়া এবং লম্বা রাজস্থানি স্টাইলের ব্লাউজ কোমরের দুইপাশে স্লিট করা, অল্প বয়সি কন্যাদের থেকে মাঝবয়সি মহিলারা সকলেই পছন্দমতো রং মিলিয়ে বা কনট্রাস্ট করে কিনছেন। শাড়ি এবং ড্রেস সবকিছুর সঙ্গেই পরার জন্য জাংক জুয়েলারির ফ্যাশন এখন ভীষণ ভাবে ইন। কোল্ড শোল্ডার ডিজাইনার ব্লাউজ শারদীয়া ফ্যাশনে এনেছে আধুনিকতার ছোঁয়া। জাঙ্ক জুয়েলারি ফ্যাশন ভীষণ ভাবে ইন। আর শাড়ির কথা যদি বলতেই হয়, এবছর জামদানি, অরগ্যাঞ্জা, হ্যান্ডলুম শাড়ির ডিম্যান্ড বেশ লক্ষনীয়।
শারদীয়ার সাজে স্কার্ট এবং পালাজো এখন ফ্যাশনিস্তাদের দারুণ পছন্দ। লুক-টাকে কোমল, ক্যাজুয়াল ছোঁয়া দিতে দুটি পোশাকেরই কোনও তুলনা হয় না। দুই তিন বছর ধরেই এগুলোর ফ্যাশন চলছে। এবছরে স্কার্ট-এর নানা ভ্যারাইটি বাজার সরগরম করে রেখেছে। এই পোশাকটি ভারতীয় লুক বজায় রেখেই পাশ্চাত্যের বর্ণাঢ্য স্টাইলটাকেও বেশ সুন্দর ভাবে মেলে ধরে। ফিউশন পোশাক হিসেবেও এটি সুন্দর মানিয়ে যায়। লং স্কার্ট-এর সঙ্গে ভারতীয় কুর্তির মিক্স অ্যান্ড ম্যাচ করে নিলেই আপনার সাজ কমপ্লিট। এবারে সুতোর কাজের নকশা তোলা বিভিন্ন ডিজাইনের স্কার্ট এবং ট্রাইবাল নকশার স্কার্ট-ও ফ্যাশানে ভীষণভাবে ইন। আর সুতোর কাজের জংলা নকশা বলতেই রাজস্থানি এবং কাচ (গুজরাতি) মিরর ওয়ার্ক সর্বকালেই ক্রেতাদের খুবই পছন্দের।
এবার শারদ প্রাক্কালে বাজার ভরে গেছে লং ও মিনি স্কার্ট-এ, এছাড়াও জিপসি স্কার্ট, মাইক্রো স্কার্ট, প্লিটেড স্কার্ট, পোলকা ডটেড মিডি স্কার্ট, পেপলাম স্কার্ট ইত্যাদি বেশ সাড়া জাগিয়েছে। আরও রয়েছে লেহেঙ্গা স্কার্ট, বেলি স্কার্ট, সার্কুলার স্কার্ট আরও নানা ভ্যারাইটি। শারদীয়ার পোশাক চয়নের সময় ফাঙ্কি লুক ক্যারি করতে শর্ট বোহেমিয়ান টপ পেয়ার করতে পারেন যে-কোনও পছন্দের স্কার্ট-এর সঙ্গে।
পুরুষরা জিন্স এবং টি-শার্ট পরতেই বেশি কমফর্ট ফিল করেন, তবে চুড়িদার পাঞ্জাবি পরলে বেশ একটা উৎসবের মেজাজ ধরে রাখা যায়। এর সঙ্গে ম্যাচ করিয়ে পরতে পারেন নেহরু কোট, দেখতে স্মার্ট লাগবে। পাশাপাশি অষ্টমীর বিশেষ সন্ধ্যার জন্য বান্ধবীর ঢাকাই জামদানি শাড়ির সাজকে ঈর্ষণীয় করে তুলতে রঙিন সিল্কের ধুতির সঙ্গে কনট্রাস্ট পাঞ্জাবি পরে বান্ধবীর সঙ্গে শারদীয়ার সন্ধ্যা উপভোগ করুন। বলতে বাধা নেই, আপনারাই হয়ে উঠতে পারেন শারদীয়ার বিশেষ আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।