সুন্দর ধনুকের মতো ভ্রূ-যুগল হোক, তা বোধহয় সব মেয়েই স্বপ্ন। কিন্তু প্রকৃতিগত ভাবে প্রত্যেকের Eyebrows -এর গঠন আলাদা। কারও সরু, কারও মোটা, কারও ভ্রূর রং গাঢ়, কারও আবার হালকা বাদামি বা ফিকে। আমাদের সৌন্দর্যের অনকটাই কিন্তু নির্ভর করে ভ্রূযুগলের গঠনের উপর। চোখ দুটিকে উজ্জ্বল দেখাতে সাহায্য করে ভ্রূ। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সবার ভ্রূ মোটা ও টানা টানা আকৃতির হয় না। অনেকেই আবার থ্রেডিং করান বা প্লাকার-এর সাহায্যে ভ্রূয়ের রোম উত্পাটন করেন, যাতে একটা সুন্দর শেপ দেওয়া যায়। কিন্তু তাতে ক্রমশ ভ্রূ আরও পাতলা হতে থাকে।
এই পরিস্থিতিতে আপনাকে ভ্রূ দুটি মোটা ও ঘন করার জন্য কিছু বাড়তি পরিশ্রম করতে হবে। জেনে নিন উপায়, যা মেনে চললে কিছুদিনের মধ্যেই আপনার ভ্রূ-দুটি সুন্দর হয়ে উঠবে। Eyebrow thickening -এর টিপ্স জেনে নিন।
ভ্যাসলিন
ভ্যাসলিন শুধু আপনার আঁখিপল্লবগুলি চকচকে ও সুন্দর দেখাতে সাহায্য করে না, এর নিয়মিত ব্যবহারে আপনার ভ্রূ মোটা হয়ে উঠবে। ভ্যাসলিনের কাজই হল ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে হাইড্রেটেড রাখা।
ভ্যাসলিনে থাকে মিনারেল অয়েল, যার দ্বারা ত্বক পুষ্টি আহরণ করতে পারে। ভ্রূয়ের উপর ভ্যাসলিন লাগানো হলে, তা রোমকূপে ময়েশ্চার প্রদান করে, যার কারণে রোম কিছুদিনের মধ্যেই ঘন হয়ে ওঠে। আকারেও সুন্দর হয়।
ডিমের কুসুম লাগান
চুলের পুষ্টির জন্য যেমন ডিমের কুসুমের প্রোটিন অত্যন্ত সুফলদায়ী, একই ভাবে তা ভ্রূ ঘন করতেও কার্যকর। আমাদের শরীরে প্রোটিনের অভাবেই রোম এবং চুল ঝরে যায় ও ক্রমশ পাতলা হতে থাকে। ডিম এই সমস্যা নিবারণে সহায়ক ভমিকা নেয়। ডিমের কুসুমে থাকে বায়োটিন। এই প্রোটিনই ভ্রূয়ের গ্রোথ ও ময়েশ্চার দুই-ই প্রদান করে।
সপ্তাহে দুবার ডিমের কুসুমের পেস্ট আইব্রোর উপর লাগিয়ে আধঘন্টা রেখে তারপর ধুয়ে নিন। এই পদ্ধতি ২-৩ মাস করলেই দেখবেন আপনার ভ্রূ-যুগল ঘন আকার ধারণ করেছে।
অলিভ অয়েল
প্রাকৃতিক ভাবে আইব্রো ঘন করার কাজটি করে অলিভ অয়েল। এর ময়েশ্চারাইজিং গুণ, চুল বা রোম ঝরার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। হেয়ার গ্রোথ হয় স্বাভাবিক কারণেই এবং
ভ্রূ–যুগল দেখতে ঘন লাগে।
বহু গবেষণার পর জানা গেছে, অলিভ অয়েল-এ থাকে অলিওপেন নামক উপাদান যা হেয়ার গ্রোথ-এ সহায়ক। ফলে প্রতিদিন কয়েক মিনিট অলিভ অয়েল দিয়ে ভ্রূ মাসাজ করলেই আপনি হয়ে উঠতে পারবেন ঘন ভ্রূ-যুগলের অধিকারিণী।
বাদাম তেল
বাদামে থাকে লোয়ার ফ্যাট কোলেস্টেরল, যা শরীরের জন্য অত্যন্ত সুফলদায়ী। এতে ভিটামিন ই, ম্যাগনেশিয়াম এবং পটাশিয়াম থাকার দরুন বাদাম তেল, নিউট্রিযে্টস ও অক্সিজেন রক্তের মাধ্যমে গোটা শরীরে সঞ্চলিত করার কাজে সহায়তা করে।
এছাড়াও এতে রয়েছে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, যা চুল ও রোমে পুষ্টি জোগায়, মজবুত করে। প্রতিদিন রাতে শুতে যাওয়ার আগে ভ্রূ দুটিকে বাদাম তেল দিয়ে মাসাজ করুন। কিছুদিনের মধ্যে ফল পাবেন হাতেনাতে।
পেঁয়াজের রস
পেঁয়াজের উগ্র গন্ধের জন্য এটার রস অনেকেই ত্বকে বা চুলে লাগানো অপছন্দ করেন। কিন্তু এর গুণ অশেষ। ভ্রূ ঘন করার জন্য কিন্তু পেঁয়াজের রস অব্যর্থ। এতে রয়েছে সালফার, ভিটামিন বি, ই এবং মিনারেলস। এই সবগুলোই হেয়ার গ্রোথ-এর জন্য দারুণ উপযোগী।
শরীরে কোলেজন-এর মাত্রা কমে গেলে, চুল পড়তে শুরু করে। ভ্রূ-ও পাতলা হয়ে যায়। কিন্তু পেঁয়াজের রস ব্যবহার করলে, এতে মজুদ সালফার কোলেজন পুনর্গঠনে সহায়তা করবে এবং ফলিকল্সগুলিকেও মজবুত করে তুলবে।
পেঁয়াজের রস একটা বাটিতে নিয়ে তুলোর সাহায্যে থুপে থুপে ভ্রূয়ের উপর লাগান। আধঘন্টা পর ধুয়ে ফেলুন। এই প্রক্রিয়া সপ্তাহে ২-৩দিন করলে, তফাতটা নিজেই দেখতে পাবেন।
ভ্রূ ঘন করার চিরস্থায়ী উপায়
পার্মানেন্ট আইব্রোজ হল আধুনিক সমাধান। এই পদ্ধতি অবলম্বন করতে রোজ আপনাকে আইব্রো পেন্সিলের রেখা টেনে ভ্রূ সুন্দর করে তুলতে হবে না। একই শেপে সুন্দর হয়ে থাকবে আপনার ভ্রূ-যুগল।
এই ভ্রূ আঁকা হয় বিশেষ ধরনের এফডিএ অ্যাপ্রুভড কালার দিয়ে এটি মেশিনের সহায়তায় স্কিনের ভেতর ইনসার্ট করা হয়।
এই প্রক্রিয়ায় প্রথমে পেনসিলের সাহায্যে আপনার ভ্রূ-কে মনমতো শেপ দেওয়া হয়। তারপর স্কিনের উপর এক্সটার্নাল অ্যানেস্থেশিয়া করা হয়। তারপর কালার ইনসার্ট করা হয় ত্বকে।
এতে দুটি সিটিং-ই যথেষ্ট। দ্বিতীয় সিটিং-এ ছোটো ছোটো খুঁত ঢেকে দেওয়া হয়। শুধু এই পন্থা অবলম্বন করার সময় হাইজিন পয়েন্ট-টা খেয়াল রাখবেন। স্টেরিলাইজড যন্ত্রপাতি ও নতুন নিডলই যেন ব্যবহৃত হয়।