সকাল সকাল অফিসের কাজে ডুবে যাওয়া, সারা দিন তাতেই মগ্ন থাকা, ডেডলাইন মিট করতে রাতের পর রাত জেগে কাজ করা, সব মিলিয়ে শরীরের রুটিনের বারোটা বাজতে বেশিক্ষণ লাগে না। সত্যি বলতে একটানা রাত জেগে কাজ করার অভ্যেস থাকলে তা শরীরের নানাভাবে ক্ষতি করতে পারে। ঘুমোনোর রুটিন তো ঘেঁটে যায়ই, খিদে নষ্ট হওয়া, রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়ার মতো নানা উপসর্গ দেখা দেয়। Over stressed lifestyle – এ দিনের পর দিন রাত জেগে কাজ করলে অনেক বড়ো শারীরিক সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
সমস্যার ধরন
শুধু কি শারীরিক সমস্যা? রাতের পর রাত জেগে কাজ করলে শরীরের পাশাপাশি পারিবারিক জীবনেও ঝড় ওঠার আশঙ্কা প্রবল হয়ে উঠতে পারে! প্রথমত আপনার ফ্যামিলি লাইফ বলে কিছু আর থাকে না, পুরোটাই অফিসের সময় হয়ে যায়। দুই, বাড়ির কাজ, দায়দায়িত্বও আপনি সেভাবে আর নিতে পারেন না সময়ের অভাবে। ফলে অফিস ও পরিবার, দু’দিক থেকেই একটা চাপ কাজ করতে শুরু করে যার অবশ্যম্ভাবী ফল বাড়তি স্ট্রেস! আর সেই স্ট্রেসের ফল ফের গিয়ে পড়ে শরীর আর মনের উপর! এই কারণেই নাইট শিফটের কর্মীদের অনেকেই শারীরিক মানসিকভাবে সহজেই বিধ্বস্ত হয়ে পড়েন। রোজ এক্সারসাইজ করার হ্যাবিট গড়ে তুলুন, stress free থাকতে।
টাইম ম্যানেজমেন্ট
হাতে যদি কাজের চাপ থাকে, তা হলে ম্যানেজ দিতে রাত জেগে কাজ করা ছাড়া উপায় কী! উপায় আছে আর সেটার নাম টাইম ম্যানেজমেন্ট! আপনার যদি বিশেষ করে নাইট শিফটের কাজ না হয় বডি ক্লকের বারোটা না বাজিয়ে বরং শিখে নিন কীভাবে অফিসের সময়টা পুরোটা কাজে লাগাবেন আর পরিবারের সময়টা বরাদ্দ থাকবে শুধুই পরিবারের জন্য!
কাজের রুটিন বানিয়ে নিন
আজকের দিনে আপনার হাতে কী কী কাজ আছে, আর কোন কাজগুলো আজই সেরে ফেলতে হবে তার একটা লিস্ট বানিয়ে রাখুন আগের রাতে। যদি হাতে অনেক কাজ জমে গিয়ে থাকে, তা হলে রাত না জেগে বরং ভোরবেলা উঠুন। সকালের দিকে আপনার এনার্জি লেভেল বেশি থাকে, আর চারপাশটাও নিরিবিলি থাকে। ফলে তখন মন দিয়ে কাজ করতে পারবেন।
প্রায়োরিটি ঠিক করুন
কোন কাজটা আগে জমা দিতে হবে, কোনটা দু’দিন পরে দিলেও চলবে, সেটা ঠিক করে নিন। এবার প্রতিটি কাজের জন্য সময় বেঁধে নিন মনে মনে এবং চেষ্টা করুন সেই সময়ের মধ্যে কাজটা শেষ করতে। তাতে অনেকটা এগিয়ে থাকতে পারবেন।
কাজ নিয়ে বসে থাকবেন না
কাজের ফাঁকে অনেকেরই একটু গেম খেলা, একটু সোশাল মিডিয়া দেখার অভ্যেস থাকে। হালকা ব্রেক নিতে একটু আধটু এ সব করতেই পারেন, কিন্তু এটাই যেন নিয়ম হয়ে না যায়! তা হলে কিন্তু সময় নষ্ট হবে আর কাজের বোঝা বাড়তেই থাকবে! সারাদিনে ওয়ার্কিং আওয়ারের মধ্যে পনেরো মিনিটের বেশি সোশাল মিডিয়া বা গেমের পিছনে নষ্ট করবেন না! বরং দ্রুত কাজগুলো সেরে ফেলুন, তারপর ইচ্ছেমতো অবসর কাটান।
জটিল কাজগুলো আগে করে নিন
কাজের নানা রকমফের হয়। কোনওটা সহজেই হয়ে যায় আবার কোনওটা করতে সময় বেশি লাগে। আবার কোনওটা শেষ করতে অপরের সহায়তা দরকার হয়। সহজ কাজগুলো পরে করবেন, অপেক্ষাকৃত সময়সাপেক্ষ কাজ বা যে কাজ করতে অপরের ইনপুট প্রয়োজন, সেগুলো আগে শেষ করুন। তাতে মাথা থেকে বোঝা নেমে যাবে, সহজ কাজগুলো চটপট করে ফেলতে পারবেন।
‘না’ বলতে শিখুন
অনেক সময়ই আমাদের সহকর্মীরা নিজেদের কাজ আমাদের উপর চাপিয়ে দেন। সব ক্ষেত্রে না বলা সম্ভব নয়, কিন্তু প্রয়োজনে অবশ্যই ‘না’ বলুন। হাতে খুব বেশি কাজের চাপ থাকলে আগে সেটাই শেষ করা আপনার দরকার, সহকর্মীকে পরেও সাহায্য করতে পারবেন!